করোনা মোকাবেলায়ঃ তওবা-ইস্তেগফার, দোয়া-দান সহ ৮ পরামর্শ আলেমদের
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৫:৪৬ অপরাহ্ণ , ৩১ মার্চ ২০২০, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
: করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিরাজমান পরিস্থিতিতে জনগণের সুরক্ষার জন্য তওবা-ইস্তেগফার, দোয়া-দানসহ আট দফা পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট আলেমরা
।ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রোববার (২৯ মার্চ) সংস্থার প্রধান কার্যালয় আগারগাঁওয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনগণের সুরক্ষা বিষয়ে পরামর্শ দিতে জরুরি বৈঠকে মিলিত হন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আনিস মাহমুদ।প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সভায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা বিষয়ে উপস্থিত বিশিষ্ট আলেমরা স্ব স্ব মতামত উপস্থাপন করেন।
এছাড়াও আল্লামা আহমদ শফি (চেয়ারম্যান, হাইয়াতুল উলয়া বাংলাদেশ ও মহাপরিচালক, আল জামিয়াতুল দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম), আল্লামা মুফতি আব্দুল হালীম বোখারী (মহাপরিচালক, আল জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম), মুফতি নুরুল ইসলাম (নাযেমে তা’লীমাত, গওহরডাঙ্গা মাদরাসা, গোপালগঞ্জ), মুফতি মুহাম্মদ ছালাহ উদ্দীন (মুহতামিম, জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া, নানুপুর, ফটিকছড়ি
মাওলানা মুহিব্বুল হক (মুহতামিম, জামেয়া কাসিমুল উলূম দরগাহে শাহজালাল (রাহ), সিলেট), মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলা উদ্দিন (খতীব, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ, চট্টগ্রাম), আল্লামা সৈয়দ অছিউর রহমান (প্রিন্সিপাল, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া, চট্টগ্রাম), আল্লামা মুফতি মোবারকুল্লাহ (মুহাতামিম, জামিয়া ইউনুছিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রমুখের কাছ থেকে ইমেইলের মাধ্যমে নেওয়া মতামত বিবেচনা করা হয়।
সভায় উপস্থিত ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য এবং ইমেইলের মাধ্যমে প্রাপ্ত মতামত পর্যালোচনা করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সুরক্ষার জন্য ওলামায়ে কেরামরা আট দফা পরামর্শ দিয়েছেন।
ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে প্রণীত নির্দেশনাগুলো হলো:
(ক) তওবা, ইস্তিগফার ও দোয়া: পৃথিবীতে যা কিছু হয় আল্লাহ তাআলার হুকুমেই হয়। রোগবালাই, মহামারি সবই আল্লাহর হুকুমে আসে। আবার তার হুকুমেই নিরাময় হয়। এ বিশ্বাস সব মুমিনেরই থাকতে হবে। এ মহামারি থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য হলো সব গুনাহ ও অপরাধ হতে বিরত থেকে বেশি বেশি তওবা ও ইস্তিগফার করা এবং দোয়াগুলো সর্বদা পড়তে থাকা
বিছমিল্লা হিল্লাযি লা ইয়াদুররু মা‘আছমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিছছামায়ি ওয়া হুয়াছ্ ছামিয়ুল আলিম’; ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উজুবিকা মিনাল বারাছি ওয়াল জুনুনি ওয়াল জুযামি ওয়ামিন সায়্যিইল আসকাম’ এবং ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুন্তু মিনাজ্ জলিমীন।’
(খ) সতর্কতা অবলম্বন: রোগ ও ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সতর্কতা অবলম্বন তাওয়াক্কুল পরিপন্থি নয়। বরং নবীজী (সা) এর সুন্নত।
গ) মসজিদ সংক্রান্ত: মসজিদে নিয়মিত আযান, ইকামত, জামাত ও জুমার নামাজ অব্যাহত থাকবে। তবে জুমা ও জামাতে মুসল্লিদের অংশগ্রহণ সীমিত থাকবে অর্থাৎ নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা জুমা ও জামাতে অংশ নেবেন না:
১) যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত,
(২) যাদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে,
(৩) যারা আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন,
(৪) যারা উক্তরূপ মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছেন,
(৫) যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত,
(৬) বয়োঃবৃদ্ধ, দুর্বল, নারী ও শিশু,
(৭) যারা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ও
(৮) যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন তাদেরও মসজিদে না আসার অবকাশ আছে।
যারা জুমা ও জামাতে যাবেন তারা সবাই যাবতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন। অজু করে নিজ নিজ ঘরে সুন্নাত ও নফল আদায় করবেন। শুধু জামাতের সময় মসজিদে যাবেন এবং ফরজ নামাজ শেষে দ্রুত ঘরে চলে আসবেন। সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পড়া, জীবাণুনাশক দিয়ে মসজিদ ও ঘরের মেঝে পরিষ্কার রাখাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সব নির্দেশনা মেনে চলবেন। হঠাৎ হাঁচি-কাশি এসে গেলে টিস্যু বা বাহু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখবেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন