ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোলটেবিল বৈঠক সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবায় ভোগান্তির শত বর্ণনা ॥ সমাধানের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:৩১ অপরাহ্ণ , ৬ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 6 years আগেব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক তাকে ঢাকায় রেফার করলে সেখানেই ঘটে বিপত্তি! সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় নি। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স যেটি আনা হলো সেটি’র ‘ফিটনেস’ ভালো না বিধায় আরেকটির জন্য যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ‘সিরিয়াল’ অনুযায়ি এটাতেই যেতে হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়।
আল-মামুন সরকার ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘আমার মতো একজন যখন এমন হয়রানির শিকার হই, তখন সাধারন মানুষের কি অবস্থা তা বুঝাই যায়।
গতকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত “স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আল-মামুন সরকার এ কথাগুলো বলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন, জেলা বিএএমএ সাধারন সাধারন সম্পাদক ডাঃ মো. আবু সাঈদ।
স্থানীয় সিলভার ফর্ক নামে একটি স্থানীয় রেস্টুরেন্টে আয়োজিত বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুধীজন, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকগন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে শত অভিযোগ, সমস্যার কথা তুলে ধরেন ও প্রতিকারের দাবি জানান।
সভায় অভিযোগ করা হয়, চিকিৎসকরা নিয়ম মেনে ডিউটি না করা, রাতের বেলায় ইমার্জেন্সি চিকিৎসক এসি রুমে গিয়ে শুয়ে থাকা, দালালের উৎপাত, পর্যাপ্ত ওষুধ না পাওয়া, হাসপাতালে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট, প্রাইভেট ক্লিনিকে বসা চিকিৎসদের অতিরিক্ত ভিজিট, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় বেশ টাকায় আদায় ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরা হয়। উপস্থিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব প্রতিকার করার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উপস্থিত সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক নিয়মিতই অফিস সময়ে হাসপাতালের সামনেই একটি ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে অভিযোগ করা হলেও কোনো কাজ হয় নি।
রায়হানা জান্নাত নামে এক সমাজকর্মী অভিযোগ করে বলেন, তিনি নিয়ম মেনে টিকিট কেটে চিকিৎসা করাতে গেলে ১০২ নম্বর কক্ষে যেতে বলা হয়। এ সময় কক্ষের বাইরে থাকা হাসপাতালের এক কর্মচারি বলেন, প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে ওই চিকিৎসককে দেখালে সেবা ভালো পাবেন।
সভায় জেলা বিএএম’এর সাধারন সাধারন সম্পাদক ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স সদর হাসপাতাল থেকে সরানোর উদ্যোগ নিতে গিয়ে আমাকে হুমকির সম্মুখীনও হতে হয়েছে। চিকিৎসকদের ভিজিট, পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি কমানোর বিষয়টি আশেপাশের এলাকার সাথে সামঞ্জস্য রেখে করার চেষ্টা করা হবে।’
সভায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ শওকত হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ রয়েছে। যে দুইজন চিকিৎসকের বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে তাদেরকে সতর্ক করে চিঠি দেয়া হবে।’
লেখক – বাহারুল ইসলাম মোল্লা
আপনার মন্তব্য লিখুন