জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহত পরিবারের দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন নিশ্চিতকরণের আহ্বান
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৯:১৯ অপরাহ্ণ , ১ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 7 months আগে
স্টাফ রিপোর্টার: গতকাল শহীদ মিনারে সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লবে নিহত শহীদ পরিবার ও আহত ছাত্র-জনতার দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সন্তান ও অভিভাবক সম্মেলনে’ অংশ নিতে এসেছিলেন শুভ মিয়াসহ আহত অনেকে। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শুভ। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। গত ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে পাকুন্দিয়ায় মিছিলে গিয়ে বাঁ পায়ে হাঁটুর পেছনে গুলি লাগে তার।
শহীদ মিনারে এসেছিলেন চব্বিশের শহীদ গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ নাফিসকে পুলিশ যখন রিকশার পাদানিতে তুলে দেয়, তখনো সে রিকশার রডটি হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল। রিকশাচালক তাকে নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের একটি হাসপাতালে ঢুকতে গেলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বাধা দিয়েছিল। সেই ছবি মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার সন্তানকে হারালেও যারা আহত হয়েছে, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন তাদের সেবা দিতে প্রস্তুত। কীভাবে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া যায়, সেটা আমাদের ভাবতে হবে।
সিলেট ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাকী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তার ও ১৩ বছর বয়সী ছোট ভাইয়ের ওপর পুলিশি নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন সবার সামনে। সাকী বলেন, আধ ঘণ্টা নির্মম নির্যাতনের পরও যখন আমি অজ্ঞান হই না, তখন আমাকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়। আমি অজ্ঞান হলে ছোট ভাই ভেবেছিল, আমি মারা গেছি।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। আরও ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ সংগঠনের আহ্বায়ক ডা. কাজী সাইফউদ্দিন, ডা. ইসরাত জাহান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু, নারী সংস্কার কমিটির প্রধান শিরীন হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ শহীদ ও আহতদের অভিভাবকরা।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ আহতদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগের যে ঘাটতি রয়েছে, এটা পূরণ করতে হবে। আমরা যেন একটি গণমানুষের নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি সেজন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ করতে চাই।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে অংশ নিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তারা তাদের জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসনে আমাদের দায়িত্ব সীমাহীন। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন