সূর্যমুখী বীজ চাষে অপার সম্ভাবনার হাতছানি
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১২:০২ পূর্বাহ্ণ , ২২ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে
ওমর ফারুকঃফুল সবারই প্রিয়। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। কেউ ফুল চাষ করেন বাড়ির অাঙিনা রাঙাতে, কেউবা অাবার প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে। উদ্দেশ্য যেটাই হোক ফুল কিন্তু সবারই পছন্দের। কিন্তু এই ফুলের বীজ থেকে যে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ তৈল তৈরি হয় সেটা অামরা কজনই বা জানি। বলছিলাম সূর্যমুখী ফুলের কথা। এখন চলছে সূর্যমুখী ফুল চাষের মহোৎসব। দেশের বিভিন্ন এখন ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল। উদ্দেশ্য এই ফুলের বীজ থেকে তৈল তৈরি। ক্রমবর্ধমান জন্যসংখ্যার চাহিদা মেটাতে সয়াবিন তেলের বিকল্পও ভাবা হচ্ছে সূর্যমুখীর তেল কে।
যতদূর চোখ যায় এ যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে। সূর্যের দিকে মুখ করে হাসছে অগণিত সূর্যমুখী আর এমন মনোরম দৃশ্য দেখতে কার না ভালো লাগে। চারপাশ হলুদ রঙে ঝলমল করছে সূর্যের ঝলকানিতে। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে ফুল। সূর্যমুখী ফুল সকালে পূর্ব দিকে তাকিয়ে হাসলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার দিক পরিবর্তন হয় সূর্যের আবর্তনে ।সবুজের মাঝে রাশি রাশি হলুদ সূর্যমুখী ফুলের শোভা।সুস্বাস্থ্যের জন্য সূর্যমুখীর তেল অত্যন্ত উপকারী। পার্শবর্তী দেশ ভারতে এই তেল খুবই জনপ্রিয়। ভারতে এ তেলের প্রচলন আছে চোখে লাগার মতো। অন্য তেলের তুলনায় দাম কিছটা বেশি হলেও তা ভারতের বাজারে সহনশীল। ভারতে এ তেলের উৎপাদনও নেহাত কম নয়।
আমাদের দেশে সূর্যমুখী তেলের ব্যবহার তেমন লক্ষণীয় না হলেও দিন দিন এ তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশেষ করে শহরাঞ্চলে। অামাদের দেশে সাধারণের সঙ্গে সূর্যমুখী তেলের পরিচয় এখনো তেমন একটা হয়নি।। সয়াবিন তেলের উপর নির্ভরতা কমাতে সূর্যমুখী তেল হতে পারে অন্যতম বিকল্প উৎস। কারণ একসময় বাংলাদেশে সরিষা তেলের ব্যবহার ছিলো গ্রামাঞ্চলে অনেক বেশি। এখন সরিষা তেলের ব্যবহার দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অথচ অাগেরকার দিনে সরিষার তেল ছাড়া রান্না কল্পনাই করা যেত না।
বাংলাদেশের আবহাওয়া, জল ও মাটি সূর্যমুখী চাষের অনুকূলে তাই দেশের অনেক অঞ্চলে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে।এ তেলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় তেমন প্রসার লাভ করছে না সে রকমভাবে। কারণ সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে তার দাম। অথচ বাংলাদেশে সূর্যমুখীর চেষের সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল।
আমরা বিদেশ থেকে যে রিফাইন্ড সয়াবিন তেল আমদানি করি একতো অামদানি খরচ বেশি তার উপর আছে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান। আমরা যদি দেশীয়ভাবে সূর্যমুখীর বীজকে প্রধান্য দিয়ে এর উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়ে রিফাইন্ড না করেও শুধু দেশীয় পদ্ধতিতে ঘানিতে সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল সংগ্রহ করি তাহলে আমাদের এই ভোজ্যতেলও হতে পারে অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ ও সুস্বাস্থ্যকর। সূর্যমুখী শুধু দেখতেই রূপময় নয় গুণেও অনন্য। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী সূর্যমুখীর বীজের তেল । অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান বা কোলেস্টেরল থাকে সূর্যমুখীতে তা নেই বরং আরও উপকারী উপাদান ও পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর সুপার চেইন শপগুলোতে ও সাধারণ মুদিদোকানে সূর্যমুখী তেল পাওয়া যায়। সারা দেশেও পাওয়া যায় শহর-গ্রামের বাজারের প্রসিদ্ধ কিছু কিছু জায়গায়। বাংলাদেশের কৃষকরা যদি সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত হয় তাহলে একদিকে যেমন উৎপাদন বাড়বে অন্যদিকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। কৃষকরা পাবে সফলতার সোনালি সম্ভবনা। কৃষকদের মুখে ফুটবে সূর্যমুখী ফুলেই মতোই অনিন্দ্য সুন্দর হাসি।
আপনার মন্তব্য লিখুন