১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

হাসপাতালে ভর্তি ১০৩ দিন !! অজ্ঞাত শিশুর পরিচয় এখনোও মিলেনি।।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ণ , ১৬ এপ্রিল ২০২১, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে ১১ বছর বয়সী অজ্ঞাত শিশু গুরুতর আহত হয়ে ১০৩দিন যাবত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

১০৩দিন হয়ে গেল এখনও আহত ওই শিশুর পরিবারের পরিচয় মিলেনি। কয়েকদিন আগে শিশুটি অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হলেও আজকে সে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তবে এতদিন শিশুটি চোখ মেলতে পারতো ও কথা বলার চেষ্টা করতো৷ মুখে খাবার দিলে তা এখন গিলতে পারতো। এখন আগের মত চোখ মেলতে পারে না ও কথা বলার শক্তি পাইনা।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলের দিকে হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. একেএম নিজাম উদ্দিন শিশুটির অবস্থা অবনতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সার্জারী বিভাগের সূত্রে জানা যায়, অজ্ঞাত শিশুটি তিন মাস আগে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি হয়। ওইদিন থেকে হাসপাতালে সার্জারী চিকিৎসক, নার্স ও পরিচ্ছন্ন কর্মীর সেবায় শিশুটির শারিরীক অবস্থা অনেক উন্নতি হয়েছিল। এখন শিশুটি আগের মত চোখ মেলতে পারে না। মাঝেমধ্যে কথা বলার চেষ্টা করলে এখন করতে পারে না। ওই শিশুর মুখে খাবার দিলে তা গিলতে খুব কষ্ট হয়। যেহেতু ওই শিশুর কেউ নেই, তাই সার্জারী বিভাগ হয়েছে শিশুটির চিকিৎসা শেষস্থল।

ওই শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র হাসপাতাল বহন করলেও খাওয়া-দাওয়া জোগান দিচ্ছে পরিচ্ছন্নকর্মী উজ্জ্বল ও বিভিন্ন সামাজিক-মানবিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা শিশুটির পাশে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু সাংবাদিকরা অজ্ঞাত শিশুটির খোঁজ খবরও রাখছেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে৷ দ্রুত শিশুটিকে সুস্থ করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে অনেকেই চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন জানান,
শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকেই শিশুটি অসচেতন ছিল। কয়েকদিন আগে শিশুটির শারিরীক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি ছিল। কিন্তু হঠাৎ ছেলেটি আগের চেয়ে বেশী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওই শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। কয়েকদিনের ভিতরে শিশুটির একটি ব্রেনের সিটি স্ক্যান করানো হবে৷ তারপর শিশুটির শারীরিক অবস্থা বিস্তারিত জানানো যাবে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, যেহেতু ১১বছর বয়সী শিশুটি অজ্ঞাত, তার পরিবারের লোকদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন পুলিশ। ইতিমধ্যে জানতে পারছি যে, কসবার গংগাসাগর থেকে ওই শিশুর মা এসে দেখে গেছেন। পরবর্তীতে আর কোন খোঁজ রাখেননি ওই মহিলা। আমরা খুব শীঘ্রই পরিবারের খোঁজ পাবো।

উল্লেখ্য, গত ৩রা জানুয়ারি স্থানীয় এক ব্যক্তি দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট রেলপথের আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বৈকণ্ঠপুর এলাকার রেললাইনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকা একটি শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরে তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছিলেন। তার মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত থাকায় সেখানে শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল। এখনও তার পরিবারকে সনাক্ত করা যায়নি। তবে ওই অজ্ঞাত শিশুর মা পরিচয়ে একজনের খোঁজ পাওয়া গেলেও সর্বশেষ তাকেও আর দেখা যায়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন