সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুর মৃত্যু, ইমার্জেন্সি বিভাগ ভাংচুর, ৩জন আটক।।
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১২:০১ পূর্বাহ্ণ , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মো.আজহার উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ইমার্জেন্সি বিভাগ ভাংচুর করেছেন স্বজনরা।
বুধবার(১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে সদর মডেল থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ জরুরি বিভাগ থেকে ৩জনকে আটক করেছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিলের বাবুল মিয়ার ছেলে আলভী এলাহী(১০) বুধবার আখাউড়া উপজেলার টানমান্দাইলে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে দুতলার ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যায় আলভী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ২৫০শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সার্জারী বিভাগের ভর্তি হয়তে বলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আলভী সার্জারী বিভাগে মারা যান। আলভী মারা যাওয়ার পর তার স্বজনরা চিকিৎসার গাফেলতির অভিযোগ এনে জরুরী বিভাগে হামলা করে। এসময় ভাংচুর করার হয় জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষের কাঁচে ঘেরা বেষ্টনী। তা ভেঙে ফেলে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা। প্রাণে রক্ষা পায় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এবিএম মুছা চৌধুরী। পুলিশ এসে জরুরী বিভাগে গেইট বন্ধ করে বিক্ষুব্ধদের আটক করেন।
আটককৃতরা হলেন, আখাউড়া উপজেলার টান-মান্দাইল গ্রামের মুহাম্মদ শানু মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া(২৮), সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের উলচাপাড়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে সাব্বির(৩০) ও নবীনগর উপজেলার পদ্মপাড়া গ্রামের মুহাম্মদ আলীর ছেলে আলাউদ্দিন(২৬)।
জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. এবিএম মুছা চৌধুরী জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় রোগীটি আসার পরই তার স্বজনদের জানানো হয়, তার অবস্থা আশংকাজনক। রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে সার্জারী বিভাগে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তার মৃত হয়। মৃত্যুর পর উত্তেজিত স্বজনরা আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমি রক্ষা পেলেও কাঁচের বেষ্টনী ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে।
তবে মৃত আলভীর বাবা বাবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, জরুরী বিভাগে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সার্জারী বিভাগে ছেলেকে ভর্তি করার পর, দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা পাচ্ছিল না আলভী। প্রায় ১ঘন্টা ফেলে রাখা হয়েছে আহত আলভীকে। চিকিৎসার অবহেলার কারনে আলভীর মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও হাসপাতালের নার্সদেরকে লাঞ্চিত করা ও তাদের সাথে অশালীন ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। জরুরি বিভাগের কাঁচের বেষ্টনী ভেঙে ফেলেছে নিহতের স্বজনরা।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে কোন মামলা দিবেন কিনা সে বিষয়ে জানিতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আগামীকাল অফিস আওয়ারে সিদ্ধান্ত নিবো। এর আগে কিছুই বলতে পারবো না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। আমি নিজেও এসেছি। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার রুজু করা হবে। তবে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আপনার মন্তব্য লিখুন