মাস্ক ব্যবহার করছেন না সদর হাসপাতালের রোগী ও দর্শনার্থীরা
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৮:১৮ অপরাহ্ণ , ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মো.আজহার উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মাস্ক ছাড়াই রোগী ও তাদের স্বজনরা চিকিৎসা নিতে আসছেন৷ মানছে না স্বাস্থ্য নীতিমালা। যার কারনে করোনা ভাইরাসে ঝুঁকি বাড়ছে৷
রবিবার(৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল(সদর) হাসপাতালে বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে লক্ষ্য করা যায় এ চিত্র।
মহামারি করোনা এখনও শেষ না হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মাস্কের ব্যবহার নেই বললেই চলে। হাসপাতালে সাধারণ রোগী ও দর্শনার্থীরা প্রকাশ্যে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছেন। তবে অল্প কিছু সংখ্যক রোগী মাস্ক ব্যবহার করছেন। কিন্তু হাসপাতালে, রোগী দেখতে আসা দর্শনার্থীরা ফ্যাশন হিসেবে মাস্ক থুতলির নিচে কিংবা কানে লাগিয়ে চলাফেরা করছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের করোনার আতংক থাকলেও দর্শনার্থীদের মধ্যে কোন আতংক নেই। নেই কোনও সচেতনতা। আগের মতো আর করোনার সচেতনতা কারো মধ্যে লক্ষ করা যায়না৷
অপরদিকে বিগত কয়েক মাসের তুলনায় সদর হাসপাতালে করোনার নমুনা সংগ্রহ অর্ধেকের চেয়ে বেশি কমে গেছে। অনেকেরই করোনার উপসর্গ থাকলেও ভয়সহ নানা কারণে হাসপাতালে আসছেন না৷ যার কারনে অনেকেই করোনার টেস্ট করানো থেকে বিরত আছে।
মাস্ক ছাড়াই চলছে হাসপাতাল জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে বহিঃবিভাগ ও ওয়ার্ড গুলোতে রোগী ও দর্শনার্থীরা উড়ছে পড়া ভীড়।হাসপাতালের বিভিন্ন যায়গায় ”NO Mask NO Service” প্রজ্ঞাপন জারি থাকলে সাধারণ রোগীরা তা মানছেন না। মাস্ক ব্যবহারের জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা অনুরোধ করলে রোগী ও দর্শনার্থীরা আরও খারাপ ব্যবহার করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুর সামাদ জানান, শহরে করোনা আছে বলে মনে হয় না। ইজিবাইক, রিকশা, সিএনজসহ যানবাহনে যাত্রী কিংবা চালক হেলপার কেউই মাস্ক পরে না। আর আমরা হাসপাতালে মাস্ক পড়ে কি হবে!
এদিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অপর একজন রোগীর আত্মীয় শফিক মিয়া মাস্ক কেন পরেন না এমন প্রশ্নে জানান, রোগী নিয়ে তাড়াহুড়া করে এসেছেন হাসপাতালে। মাস্ক পরার সময় পাননি। তিনি বলেন, ‘আমার মতো সব মানুষ মাস্ক ছাড়াই হাসপাতালে এসেছে চিকিৎসা নিতে।
মেডিসিন ও শিশু বিভাগে সিনিয়র স্টাফ নার্সরা জানান, করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কনতা কমে গেছে। এখন আগের মতো আর কোন রোগী মাস্ক ব্যবহার করেন না। মাস্কের জন্য নিরাপত্তাহীনতা ভুগতেছি। রোগীসহ দর্শনার্থীদের কেন মাস্ক ব্যবহার করেননি বললে তারা তাদের সাথে অসাধু আচরণ করে।
গাইনী ও সার্জারী বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্সদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাস্ক না ব্যবহার এহা এক ধরনের অসচেতনতা প্রমান। কেউ নিয়ম মানছেন না। রোগীসহ দর্শনার্থীদের মাস্ক ব্যবহারের জন্য বললে উল্টো ঠাট্টা করেন। এভাবে যদি রোগীসহ দর্শনার্থীরা মাস্ক ব্যবহার না করেন তাহলে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আরও বাড়বে৷
হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ জানান, মাস্কের ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীসহ দর্শনার্থীরা কেউ মাস্ক ব্যবহার করেন না। যার কারনে আমরাসহ নার্সরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। আপনারা জানেন, মাস্ক না পরলে একজন মানুষের শতভাগ করোনার ঝুঁকি থাকে।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন জানান, ইমার্জেন্সি ও বহি:বিভাগে দেখা যায় রোগীদের উপচে পড়া ভীড়। কোনও রকম সামাজিক দূরত্বের বালাই নাই। দুই-চার জনের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বেশিরভাগ রোগীর মুখে ছিল না মাস্ক। প্রতি ডাক্তারের কক্ষের সামনে লোকজনের ঠাসাঠাসি ছিল। প্রতিদিন জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য হাসপাতালের ভিতরে মাইকিং করা হচ্ছে। তারপরও রোগীসহ দর্শনার্থীরা সচেতনতা হচ্ছে না.
আপনার মন্তব্য লিখুন