১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

একমাসেও মিলেনি পরিচয়, অজ্ঞাত শিশুর বাবা হয়ে খাওয়ায় দিচ্ছে ঝাড়ুদার উজ্জ্বল।।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ , ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

মো.আজহার উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে অজ্ঞাত (১১) বছরের এক শিশু গুরুতর আহত হয়ে ২৯দিন যাবত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

২৯দিন হয়ে গেল এখনও আহত ওই শিশুর পরিবারের পরিচয় মিলেনি। তবে শিশুটি অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন শিশুটি চোখ মেলতে পারছে৷ মুখে খাবার দিলে তা গিলতে পারছে।

অজ্ঞাত শিশুর বাবা হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন সার্জারী বিভাগের ঝাড়ুদার উজ্জ্বল। তার বাড়ি থেকে খিচুড়ি, সেমাই, সুজি, দুধ, বেলের সরবতা নিয়ে নিজেই খাওয়ানোর কাজটা করছেন। পায়খানা পরিস্কার থেকে শুরু করে গোসল করানোর কাজটাও উজ্জ্বল করছেন। ভর্তির দিন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ওই শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র খাওয়ানোর কাজটা করছেন উজ্জ্বল।

সোমবার (১লা ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের ইনচার্জ আকলিমা আক্তার ও রোকাইয়া আক্তারের সাথে কথা শিশুটির শারিরীক অবস্থা জানা যায়।

ঝাড়ুদার উজ্জ্বল বলেন, অজ্ঞাত শিশুটি মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। ওইদিন থেকে হাসপাতালে সার্জারী চিকিৎসক, নার্সদের চিকিৎসা সেবায় আলহামদুলিল্লাহ শিশুটির শারিরীক অবস্থা অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন ওই শিশুটি চোখ মেলতে পারে। মাঝেমধ্যে কথা বলার চেষ্টাও করছে। ওই শিশুর মুখে খাবার দিলে তাও গিলতে পারে। যেহেতু ওই শিশুর কেউ নেই তাই ঢাকা না নিয়ে আমরাই দিবো তার চিকিৎসা।

ওই শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র ও খাওয়া-দাওয়া হাসপাতাল তহবিল ও বিভিন্ন সামাজিক-মানবিক সংগঠন থেকে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু সাংবাদিক অজ্ঞাত শিশুটির খোঁজ খবরও রাখছেন। দ্রুত শিশুটিকে কিভাবে সুস্থ করে তুলা যায় অনেকেই এগিয়ে আসছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন জানান,
যখন শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকেই শিশুটি অসচেতন ছিল। এখন শিশুটির শারিরীক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। ওই শিশুর সকল ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, যেহেতু শিশুটি অজ্ঞাত তাই আমরা তার পরিবারের লোকদের সনাক্তের চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে জানতে পারছি যে, ওই শিশুর মা এসে একদিন দেখে গেছেন। পরবর্তীতে আর কোন খোঁজ রাখেননি সে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি খুব শীঘ্রই পরিবারের খোঁজ পাবো।

উল্লেখ্য, গত ৩রা জানুয়ারি স্থানীয় এক ব্যক্তি দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট রেলপথের আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বৈকণ্ঠপুর এলাকার রেললাইনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকা একটি শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরে তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছিলেন। তার মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত থাকায় সেখানে শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল। এখনও তার পরিবারকে সনাক্ত করা যায়নি। তবে ওই অজ্ঞাত শিশুর মা পরিচয়ে একজনের খোঁজ পাওয়া গেলেও সর্বশেষ তাকেও আর দেখা যায়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন