ব্রাহ্মনবাড়িয়া পৌরসভায় জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তি, কী হবে স্কুলে ভর্তিচ্ছু শিশুদের
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১০:৪৩ অপরাহ্ণ , ৮ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
মনির হোশেন টিপু/ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নাগরিকরা শিশুসন্তানের জন্মনিবন্ধন করাতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে বছরের শুরুতে শিশুদের স্কুলে ভর্তি করা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এসব ভোগান্তি দূর করার দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আগে পৌরসভা থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে শুধু মা-বাবার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হতো। এখন মা-বাবার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপির পাশাপাশি জন্মনিবন্ধন সনদ ও পৌরকরের কাগজও জমা দিতে হচ্ছে।
পৌরসভায় সন্তানের জন্মনিবন্ধনের জন্য আসা হালিমা আক্তার বলেন, ‘আমি পৌরসভার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য পৌরসভায় জন্মনিববন্ধন সনদ নিতে এসেছি। জন্মনিবন্ধন ছাড়া স্কুলে ভর্তি করা যায় না। কিন্তু পৌরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকেরা জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ছাড়াও আমার জন্মনিবন্ধন সনদ ও পৌরকরের কাগজপত্র জমা দিতে বলছেন। আমাদের কাছে পৌরকরের কাগজপত্র নেই। তাই বাচ্চার জন্মনিবন্ধন করাতে পারছি না।’ আগের নিয়মে যেন জন্মনিবন্ধন সনদ পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
ভুক্তভোগী রহিম মিয়া বলেন, ‘বাচ্চার জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে যদি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপির পাশাপাশি আমাদেরও জন্মনিবন্ধন সনদ দিতে হয়, তাহলে কিভাবে দেবো?’ তিনি বলেন, ‘আমাদেরতো ভোটার আইডি আছে, তাহলে এখন আবার আমাদের জন্মনিবন্ধন সনদ কেন?’
শিপ্রা রায় বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য জন্মনিবন্ধন করি। জন্মনিবন্ধন সনদ হাতে পাওয়ার পর দেখি, মেয়ের নাম ভুল। ঠিক করার জন্য পুনরায় জমা দেই। জমা দেওয়ার ২৫ দিন পর জানতে পারি, পৌরসভার সার্ভার নষ্ট। বুধবার (৬ জানুয়ারি) যোগাযোগ করলে তারা জানান, সংশোধন কোনো নিয়মের বলা হয়নি নতুন নিয়মে।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে শিপ্রা বলেন, ‘তাহলে আমি বাচ্চাকে কিভাবে স্কুলে ভর্তি করাবো।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর ফারুক জীবন বলেন, ‘নতুন নিয়মে জন্মনিবন্ধন করতে এসে অভিভাবকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অভিভাবকদের ভোটার আইডি কার্ড থাকলে তাদের জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটের দরকার কী?’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ভাড়াটিয়া বাসিন্দারা পৌরকরের কাগজপত্র দেবে কিভাবে?’ তিনি নাগরিকদের ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানান।
পৌর সভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ ভান্ডারী বলেন, ‘আগে অভিভাবকদের জন্মনিবন্ধন ছিল। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র করার পর জন্মনিবন্ধনের কোনো প্রয়োজন নেই। এখন নতুন নিয়মে জাতীয় পরিচয়পত্রের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও জন্মসনদ দিতে হয়। এই সমস্যায় প্রতিদিন মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। এই কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারবেন না।’ তিনি পুরনো নিয়মেই জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়ার দাবি জানান।
জন্মনিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা পৌরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর রেজাউল করিম বলেন, ‘নতুন নিয়মে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে গিয়ে আমাদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না দিলে জন্মনিবন্ধন ফরম পূরণ করা যাচ্ছে না।’
আপনার মন্তব্য লিখুন