কসবা উপজেলা নির্বাচন অফিসে চাঞ্চল্যকর দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৪:১৮ অপরাহ্ণ , ৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 months আগে
কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিকসবা উপজেলা নির্বাচন অফিসকে ঘিরে একের পর এক দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগে মুখর ভুক্তভোগী ও সচেতন নাগরিক সমাজ। এসব অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও তাঁর সহকর্মীরা। সোমবার (৭এপ্রিল ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নুরে আলম শাহরিয়ার এসব তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, সত্য প্রকাশ করায় তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
আমি শুধু কসবার নির্বাচন অফিসে চলমান দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছিলাম। অথচ আজ আমি নিজেই হয়রানির শিকার। আমাকে দালাল চক্র ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তারা হুমকি দিচ্ছে—আর কথা বললে মেরে ফেলা হবে বা মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।
শাহারিয়ারের অভিযোগে উঠে এসেছে, হালনাগাদ ভোটার তালিকা কার্যক্রম চলাকালে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে রাতের আধারে অল্প বয়সীদের নতুন ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব ভুয়া ভোটার তৈরির বিনিময়ে নেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের ঘুষ। একটি ঘটনায়, ঘুষ না দেওয়ায় এক ব্যক্তির ছেলের সব তথ্য নির্বাচন অফিস থেকে মুছে ফেলা হয়, যার প্রমাণস্বরূপ ভোটার ফর্ম নম্বরও তিনি দিয়েছেন (ফরম নম্বর: ১১৮৪৬৭৬০১)।
তিনি আরও জানান, কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম সরকারি কর্মকর্তা হলেও তার আশেপাশে থাকা কর্মচারীরা সবাই চুক্তিভিত্তিক এবং অঘোষিতভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িত। ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় অফিস রাতেও খোলা রেখে টাকা নিয়ে ভোটার অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে, যার অডিও-ভিডিও ফুটেজও তাঁর কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
নুরে আলম শাহরিয়ার অভিযোগ করেন, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. মারজিদ হোসেন তাঁর নামে ও আরও কয়েকজন নিরীহ নাগরিকের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেন যাহার (SDR NO: ৫৬৫, তারিখ: ১৮/০২/২৫)। এমনকি ‘আমাদের কসবা’ নামক একটি ফেসবুক পেইজে তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে প্রমাণিত হয় অফিসের ভেতরের তথ্য ফাঁস হচ্ছে এবং পেইজটি দুর্নীতির সাথেই যুক্ত।
শাহারিয়ার জানান, তিনি লিখিতভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং বদলির আদেশ থাকা সত্ত্বেও কসবার নির্বাচন কর্মকর্তা উৎকোচ দিয়ে আগের পদে বহাল আছেন।
শাহারিয়ারের শেষ কথায় ছিল হৃদয়বিদারক আবেদন—আমি কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, আমি শুধু সাধারণ একজন মানুষ। আমার অপরাধ আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করছি—আপনারা জাতির বিবেক, আপনারাই পারেন সত্য তুলে ধরতে। আমাকে ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করুন।
তিনি নির্বাচনী অফিসের অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
আপনার মন্তব্য লিখুন