১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীমান্তবর্তী বিজয়নগর ও আখাউড়া হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১০:১৮ অপরাহ্ণ , ৬ ডিসেম্বর ২০২৩, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

এনই আকঞ্জি,৬ ডিসেম্বর বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা হানাদার মুক্ত দিবস পালিত। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেদের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা এলাকা শত্রু মুক্ত করা হয়।মুক্তিযুদ্ধকালে পাক হানাদার বাহিনীরা চান্দুরায় একটি শক্তিশালী পাকসেনা ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল। এখানে বসেই পাকসেনারা বাংলার কুখ্যাত দালাল, আলবদর, রাজাকারদের সহযোগিতায় তারা নিয়ন্ত্রণ করতো। সেইসাথে রাতের আধাঁরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো মুক্তিকামী মানুষদের। ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর রাত থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর থেকে চান্দুরা ঘিরে ফেলে। তারপর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটির পতন ঘটায় এবং পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হয় হাবিলদার রাকিব উদ্দিন ও মুজিবুর রহমান।এছাড়াও মুক্তিবাহিনীর হাতে নিহত হয় সাত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য। ৬ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকেই জয় বাংলা ধ্বনিতে চান্দুরার আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে তোলে মুক্তিকামী জনতা। ঝাঁকে ঝাঁকে মুক্তিকামী মানুষ ঘর থেকে রাস্তায় বেড়িয়ে আসে। হানাদারদের ঘাঁটিতে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা।এ দিবস উপলক্ষে আজ (৬ ডিসেম্বর ২০২৩) বুধবার সকালে উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়। পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মেহেদী হাসান খান শাওন এর সভাপতিত্বে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দবীর আহমেদ ভূঞার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন – ক্যাপ্টেন (অব:) বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির আহমেদ,বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মলেন্দু সেনগুপ্ত (সেন),প্রেসক্লাবের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী (লিটন),ইউপি চেয়ারম্যান এ এম শামিউল হক চৌধুরী।অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।পরে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসির জন্য বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন উপজেলা মডেল মসজিদ পেশ ইমাম মাওলানা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।এদিকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পালিত হয়েছে ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়েছিল আখাউড়া উপজেলা।ওই দিন পৌরশহরের সড়ক বাজারে অবস্থিত পোস্ট অফিসের সামনে উড়ানো হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশের লাল সবুজের পতাকা। আখাউড়া মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে একে একে শত্রুমুক্ত হয়েছিল পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।তাই এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে (মঙ্গলবার-বুধবার) দুইদিন ব্যাপি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এবং উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা।বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে একটি আনন্দ র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালি শেষে পোস্ট অফিসের সামনে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজেরর পতাকা। এবং পোষ্ট অফিসের সামনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমার সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনির হোসেনের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জামসেদ শাহ্,বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার,শহীদুল্লাহ সাদেক,উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)প্রশান্ত চক্রবর্তী, আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সফিকুল ইসলাম, আখাউড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কমিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন স্বাধীন,নির্বাহী সভাপতি আবুল বাশার,সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক লায়ন এস.এম জিয়াউল হক খাদেম,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রিমন কবির,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ যুবরাজ শাহ্ রাসেল প্রমূখ।
এর আগে ৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে শহরের সড়ক বাজারস্থ এডভোকেট সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জামশেদ শাহ, বাহার মালদার,গঙ্গাসাগর দরুইন গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১ ডিসেম্বর ও ৩ ডিসেম্বর উপজেলার আজমপুর ও রাজাপুর এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। ৩ ডিসেম্বরের যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ১১ জন সদস্য নিহত ও মুক্তিবাহিনীর দুইজন শহীদ হয়। ৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মিলে আখাউড়ায় আক্রমন শুরু করে। ওই দিন আজমপুরে শহীদ হয় লেফটেন্যান্ট ইবনে ফজল, বদিউজ্জামান। ৫ ডিসেম্বর দিন ও রাতের যুদ্ধে সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয় আখাউড়া উপজেলা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

December 2023
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
আরও পড়ুন