১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

কোচিং-বাণিজ্য গ্রাস করছে সরাইলে’র শিক্ষা ব্যবস্থা

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ , ৯ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

মো. তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সরাইল উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায়-১২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৩টিও কলেজ ৪টি। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কোচিং বাণিজ্যে যুক্ত শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন; যা পরিবারের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং এ ব্যয় মেটাতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য সরকার ২০১২ সালে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা জারি করে। অনেকেই বলেন, সরাইলে শিক্ষা ব্যবস্থায় দিন দিন বাড়ছে কোচিং–বাণিজ্যর দৌরাত্ম্য। তার আগে আরেকটি বিষয় চোখ বুলাতে চাই। এখন লক্ষ্য করে দেখবেন প্রাথমিক ও চলছে এক কোচিং বাণিজ্য।মূল কথা লেখাপড়ার শুরু থেকেই কোচিং শুরু হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বিষয়টি ছিল শিক্ষায় কোচিংয়ের দৌরাত্ম্য। আমি, আপনি, সবাই নিজেরা, নিজেদের সন্তানদের মোটামুটি কোনো স্কুলে ভর্তি করেই দৌড় দিই কোচিংয়ের শিক্ষকের কাছে। জিপিএ–৫ বা প্রথম স্থান অধিকার করার ব্যাপারটা কোচিংয়ের শিক্ষকর ওপরে ছেড়ে দিই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলায় সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কোচিং সেন্টারে পড়ানোর প্রতি অধিক মনোযোগী হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা—এমন অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের। এতে শিক্ষকরা কোচিংমুখী হওয়ায় বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের পড়া অনেকটা নিষ্প্রভ বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিতা না থাকায় শিক্ষকরাও অবাধে কোচিং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন অলি-গলিতে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে চালানো হচ্ছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সরাইলের নামি-দামি স্কুল-কলেজের আশপাশে এমনই বহু কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। স্থানীয় নামি-দামি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষকরা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এসব কোচিং সেন্টারে পড়ানো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিটি কোচিং সেন্টারে ব্যাচপ্রতি ২৫-৩০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে বলে জানা যায়। দৃশ্যত কোনো কার্যক্রম না থাকায় কোচিং বাণিজ্য ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে এ উপজেলায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ২০১২ অনুযায়ী , শুধুমাত্র অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে অতিরিক্ত ক্লাশ নেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে প্রতি ক্লাশে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে। এক বিষয়ে মাসে সর্বনিম্ম ১২ টি ক্লাস নিতে হবে।  উপজেলা পর্যায়ে প্রতি বিষয়ে ১৫০ টাকা অতিরিক্ত ক্লাশ ফি নেয়া যাবে।  শিক্ষক কর্তৃক কোন শিক্ষার্থীদের কোচিংএ বাধ্য করা যাবে না।কয়েকজন অভিভাবকরা বলেন, অধিকাংশ সময় নিয়মিত শিক্ষকগণ তাদের রুটিন ক্লাসের সময় গল্পগুজবে মশগুল থাকেন। স্যারেরা ছেলে মেয়েদের বাধ্য করছে কোচিংএ। এমনিতেই দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির কারনে সংসারের খরচ মিটিয়ে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতে কষ্ট হচ্ছে।শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান করলে কোচিং করতে হয়না শিক্ষার্থীদের।বিদ্যালয়টির কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, ভালোমন্দের বাছ-বিচার না করে ঢালাওভাবে ক্লাসের সবশিক্ষার্থীকে কোচিং করতে বাধ্য করা হচ্ছে।  এতে করে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, নির্ভর হয়ে পড়ছে কোচিংয়ের উপর।  কোচিং-এ ঝুঁকে যাওয়ায় নিয়মিত পাঠদানে নিরুৎসাহিত হচ্ছে শিক্ষকরা।অনেক শিক্ষক আছে ছাত্রীরা তাদের কাছে কোচিং না করলে পরীক্ষা দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়ে থাকেন।সরাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নৌসাদ মাহমুদ বলেন, সরকারি প্রাথমিক স্কুলে যারা শিক্ষকতা করে তারা কোচিং বা প্রাইভেট পড়ানোর নিয়ম বা কোন সুযোগ নাই। তবে স্কুলের দুর্বল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিশেষ ক্লাস পড়াতে পারে। এর বাইরে কোন শিক্ষক যদি কোচিং এর সাথে জড়িত থাকে। তাদের বিরুদ্ধে আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সরাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান বলেন,প্রাইভেটের নামে অনেক শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ কোচিং সেন্টারে পড়াতে পারেন না। সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন,কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।নীতিমালা মানতে হবে। শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সেটা সম্পূর্ণ অনৈতিক।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

October 2023
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আরও পড়ুন