১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

হারিয়ে যাচ্ছে খাল সরাইলের!

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৭:০২ পূর্বাহ্ণ , ৭ মে ২০২৩, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

মো. তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া)খালই তো নেই। ভরাট, দখল আর দূষণে নিঃস্ব হয়ে গেছে প্রধান প্রধান খাল। সরাইল জুড়ে প্রবহমান খালগুলোর করুণ মৃতুুর গল্প এখন পুরনো মানুষের মুখে মুখে। যেখানে এখন আর খালের কোনো অস্তিত্ব নেই। পালতোলা নৌকা আর মাছ মারা এখন রূপকথার গল্প।
খালের ওপর ছোট্ট নাও, ছোট্ট নাওয়ে পাড়ি দাও। খালের ওপর এখন আর নাও বা নৌকা থাকে না। থাকবেইবা কোথা থেকে? খালই তো নেই। ভরাট, দখল আর দূষণে নিঃস্ব হয়ে গেছে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা আবহমান গ্রাম- বাংলার সেচকাজে ব্যবহৃত খালগুলো। সরাইল উপজেলাজুড়ে প্রবহমান খালগুলোর করুণ মৃত্যুর গল্প এখন পুরোনো মানুষের মুখে মুখে। যেখানে এখন আর খালের কোনো অস্তিত্ব নেই, কিন্তু মন থেকে সরে যায়নি সেই স্মৃতিচিহ্ন। যদিও বারবার সরাইল উপজেলা আইন- শৃঙ্খলা সভায় এসব খাল উদ্ধারের আশ্বাস দিয়েছে। গত কয়েক বছরের বেশি সময় খাল উদ্ধারে ইতিবাচক কোনো পদক্ষেপ নজরে আসেনি।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে খাল, নদী ও ডোবা ভরাট বন্ধে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে নির্দেশনাকে অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার সরাইল- নাচিরনগর আঞ্চলিক সড়কের পশ্চিম ও পুর্ব পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের জমি দখল নিয়ে চলছে প্রতিযোগীতা।সরকারি এই খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র নানান কৌশলে হাতিয়ে নিলেও স্থানীয় ভূমি প্রশাসন কোন ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী দখলদার চক্র খালের বিভিন্ন অংশে বাড়িঘর ও অবকাঠামো নির্মাণ করে খালে নির্বিচারে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। যা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্থ করছে। এর ফলে বৃষ্টিতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। তাই খালটি সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ দখল মুক্ত করার দাবি জানান স্থানীয়রা।খালের দখল ও দূষণের বিষয়ে মো. মিনার হোসেন এ প্রতিনিধিকে বলেন, ২০ থেকে ২৫ বছর আগে এ খাল দিয়ে নৌকা দিয়ে কৃষি পণ্য আসতে আমরা দেখছি।খালটির অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলায় বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি খালটিতে প্রবেশ করতে পারে না। বেশ কয়েক বছর হলো খালের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে খালে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দিন দিন ছোট হয়ে আসছে খালটি। বড্ডাপাড়া গ্রামের একাধিক স্বানীয় লোকজন বলেন, খালে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলদারদের হাত থেকে জমি দখল মুক্ত না করলে, সরাইল- বড্ডা পাড়া, বনিক পাড়া, বড়দেওয়ান পাড়া এলাকার খালটি দ্রুত হারিয়ে যাবে। সরকারি উদ্যোগে দ্রুত খালের জমি দখল মুক্ত করে খালটি খনন করা উচিত। তা না হলেএ খালটি কতিপয় ভূমিদস্যুরা দখল করে ফেলবে।সরাইল উপজেলা অফিস পাড়ার পশ্চিম পাশের খাল দখল আর দুষণে দিনের বিলীন হতে চলেছে।এই খাল দিয়ে সরাইল বাজারে পানিশ্বর সহ ওই এলাকার বড় নৌকায় করে মাল নিয়ে আসা হতো। আজ সেই খালটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।সরাইলে বেপারীপাড়া- কুমার পাড়া খালের অস্তিত্ব বিলিনের পথে। সরাইল উপজেলার প্রধান খালসহ এমন কোন খাল নেই যে দখল হয়নি আর দূষণে হারিয়েছে খালের অস্তিত্ব।
সরাইল উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি এড. আশরাফ উদ্দিন মনতু বলেন,
সরাইল সদরের বেশ কয়েকটি খাল ভূমি দস্যদের দখলে যাওয়াই পানি নিষ্কাশন এর অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কালিকচ্ছ ইউনিয়নের মো. রোকন উদ্দিন বলেন, সরাইল উপজেলায় সব কয়টি খাল ভূমিদস্যদের দখলে যাওয়াই পানি নিষ্কাশন এর অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, যেভাবে খাল দখল হচ্ছে। এমন করে দখল হইলে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে।সরাইল পানিশ্বর খালের দখল নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় জানিয়েছি। তবে এর কোন প্রতিকার এখনো পর্যন্ত দেখি নাই। খাল দখল বন্ধ করে খাল খননের সুব্যবস্থা না করলে। সরাইলের প্রধান প্রধান খাল হারিয়ে যাবে।
সাংবাদিক মো. আরিফুল ইসলাম সুমন বলেন,
আমি মনে করি ভূমি প্রশাসনের তদারকি না থাকায়। সরাইল উপজেলায় একের পর এক জনগুরুত্বপূর্ণ খাল অবৈধ দখলের পর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে জনদূর্ভোগ বাড়ছে এখানে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন,খাল দখল করার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

May 2023
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
আরও পড়ুন