১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সংস্কার কাজের মেয়াদ শেষ হলেও শেষ হয়নি দুর্ভোগ

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১০:৪৪ অপরাহ্ণ , ১১ মার্চ ২০২৩, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

এনই আকন্ঞ্জি ,ধূলা আর ধূলা সব দিকে ধূলা, ধুলায় যেন অন্ধকার। শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর-মির্জাপুর ” উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ” সড়কের পথচারীদের। এপথের যাত্রীদের দিনের পর দিন সীমাহীন দুর্ভোগ আর অসীম দূর্ভোগ।

জানা গেছে, উপজেলার খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হরষপুর-মির্জাপুর ” উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ” সড়ক। এ সড়কটির পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার সাথে বিকল্প সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী মাধবপুর উপজেলার অধিকাংশ জনগোষ্ঠী চলাচল করে থাকেন। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ এ সড়কটি বেহাল অবস্থায় থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষজনের । বর্ষার মৌসুমে কাদা-পানি সয়লাভ আর শুষ্ক মৌসুমে প্রচুর ধূলাবালির সৃষ্টি। শুষ্ক মৌসুমে সড়কে পানি দিয়ে কিউরিং না করায় ধূলাবালির সৃষ্টি হয়ে থাকে। এতে সড়কের যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ কোনো ভাবেই কাটছে না।

উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারের দরপত্র (টেন্ডার) আহবান করা হয়। প্রায় ৪ কোটি টাকায় সংস্কার কাজটি পায় চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিপন ট্রেডার্স ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেসার্স পিন্টু কন্সট্রাকশন। কাজটি করাচ্ছেন মেসার্স পিন্টু কন্সট্রাকশনের মালিক মোঃ আতাউর রহমান পিন্টু। গেল বছরের মার্চ মাসে সংস্কার কাজটির ওয়ার্ক অর্ডার (অনুমতিপত্র) পায় প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের অক্টোবর মাসে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও আদৌ পর্যন্ত সড়কটির সংস্কারের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সংস্কারের কাজ গত বছরের শেষ দিকে শুরু করে প্রায় ৩ কিলোমিটার সংস্কার কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ওই সংস্কার করা সড়কেও ভাঙন ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এ সড়কের হরষপুর ইউনিয়নের অর্ন্তগত বাগদিয়া ব্রীজ থেকে হরষপুর দেওয়ান বাজার পর্যন্ত সড়কের ভেকু দিয়ে সড়ক খুঁড়ে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কের কাজ না করায় মাসের পর মাস অতিবাহিত হচ্ছে। কাজ বন্ধ থাকায় ধূলাবালিতে বিশাল এলাকায় ধুলোর নগরীর পরিণত হয়েছে। সড়কের পাশে থাকা স্কুল, মাদ্রাসা, দোকানপাট, হাটবাজারের মানুষের অবস্থায় খুবই লাজুক।

বাগদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, এ সড়ক এখন ধূলার কারখানা। এ সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করলে শরীরে ধূলার প্রলেপ পড়ে ধূলার আস্ত জমাট বাঁধে।

সড়কের পাশে থাকা বাড়ি ঘর লোকজন জানান, সড়কের ধূলাবালি ঘরে ঢুকছে আর এ ধূলাবালু ঘরের আসবাবপত্রে জমাট বেঁধেছে। ঘরে খাবার দাবারেও ধূলা পড়ছে। তারপরও সহ্য করে এসব খাবার খেতে হচ্ছে তাদের। সড়কের পাশে থাকা গাছপালার লতাপাতা এখন ধূলাবালিতে আচ্ছাদিত। প্রচুর ধূলাবালুতে বসবাস করতে হচ্ছে তাদের।

ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রতিদিনই মোটরসাইকেল যোগে এ সড়ক দিয়ে একাধিকবার যাতায়াত করতে হয়। মাস্ক ও রুমাল পড়েও ধূলা থেকে কোনোভাবেই রেহাই মিলছে না।

কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী শান্তা বলেন, ধূলাবালুতে অবস্থা খারাপ। কলেজে আসা যাওয়ার খুবই কষ্ট হচ্ছে। আর জামা কাপড়ের অবস্থা তো বলে শেষ করা যাবে না। আর কত দূর্ভোগ পেতে হবে?

এদিকে সড়কের অবস্থা ভালো না হওয়ায় এ সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কমে গেছে। আর যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত। সড়কের অতিরিক্ত ধূলাবালি নি:শ্বাসের সঙ্গে মানবদেহে প্রবেশ করছে। এতে করে অ্যাজমা, হাঁপানী শ্বাস কষ্ট সহ নানা রোগ ব্যাধির সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ আতাউর রহমান পিন্টুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশিকুর রহমান ভূঞা সড়কের দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কের কাজে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকায় তা তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত করার জন্য বলা হয়েছে। আর যদি দ্রুত কাজ না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে কাজের সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে গেলেও ঠিকাদার ঢাকা অফিসেও সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

March 2023
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন