মুরাদনগরে গণপিটুনিতে ২ জন ডাকাত হত্যার ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ , ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
এম কে আই জাবেদ (কুমিল্লা) মুরাদনগর:কুমিল্লার মুরাদনগরে ‘ডাকাত’ সন্দেহে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার চার দিন পার হলেও থানায় কোনো মামলা নেয়নি পুলিশ। তাই অজ্ঞাতনামাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে ৩০২ ধারা হত্যা মামলা দায়ের করেন গণপিটুনিতে নিহত নুরু মিয়ার পিতা মো.আবদুস ছালাম। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলার ৮নং আমলি আদালতের বিচারক মো.ওমর ফারুক মুরাদনগর থানার ওসি মো.কামরুজ্জামান তালুকদারকে মামলাটি এজাহারভুক্তের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন, বাদির অ্যাডভোকেট মো.কামরুল ইসলাম।
নিহত নুরু মিয়ার পিতা মো.আবদুস ছালাম বলেন, মামলা করার জন্য একাধিকবার থানায় গেলেও পুলিশ ঘটনা যাচাই করে দেখা হচ্ছে জানিয়ে মামলা নেয়নি।
চারদিন গত হলেও ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তাই নিরুপায় হয়ে আদালতে এসে মামলা দিয়েছি।
এদিকে থানার ওসি কামরুজ্জামান বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেলে মামলা নিয়ে নিবো। নিহতের পরিবারের কেউ আমাদের কাছে আসে নাই। গত রবিবার তাদের বাড়িতে গিয়ে থানায় আসতে বলেছি। তাঁরা বলছে, নিহতদের জন্য দোয়া শেষ করে সোমবারে থানায় আসবে।
অপর নিহত ইসমাইলের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে। আমিও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এদিকে প াশ হাজার টাকা না দিলে মামলায় নাম যাবে, এমন ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার কবির হোসেনের বিরুদ্ধে এবং টাকা চাওয়ার অডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ঘুরছে।
পালাসুতা গ্রামের মাহাবুব মিয়ার ছেলে সাইফুল, এনামুলের ছেলে ফারহান,ইয়াকুব মিয়ার ছেলে সাইফুল ,আবু মুছার ছেলে নাসিম,রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার, লতিফ মিয়ার ছেলে ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় মেম্বার কবির হোসেন ৩৪ জনের একটি তালিকা করে পর্যাক্রমে রাতে পাহাড়া দেয়ার নির্দেশ দেন। সেই তালিকা তঁার স্বাক্ষরিত। এখন সে তালিকা ধরে ধরে মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে প াশ হাজার টাকা করে অনেকের কাছ থেকে নিয়েছে। যারা ওই দিন পাহারায় ছিলো না তাদের অনেকেই টাকা দেয়নি। তবে সবাই এখন আতঙ্কে দিন পার করছি।
দারোরা ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ডের মেম্বার কবির হোসেন মুঠো ফোনে বলেন, ‘ রাতে পাহারা দেয়ার তালিকা করে দিয়েছি তা সত্য। তবে মামলা থেকে নাম বাদ দেয়ার কথা বলে কারো কাছে টাকা চাইনি।’
স্থানীয় চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন খন্দকার বলেন,‘ডাকাত সন্দেহে দুই যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় এলাকায় গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার সাথে জড়িত নয় এমন মানুষও হয়রানীর শিকার হচ্ছে।’
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পালাসুতা গ্রামের নায়েব আলী ওরফে নাবু মিয়ার ঘর থেকে তাঁর মেয়ের স্বামী ও দুই বন্ধুকে ধরে নিয়ে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এতে নুরু মিয়া (২৮) ও ইসমাইল হোসেনের (২৭) মৃত্যু হয়। শাহজাহান মিয়া কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন।
আপনার মন্তব্য লিখুন