১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

গাড়ির যাত্রী রেখে গন্তবে পৌছে না দেওয়ায় অটো চালককে থাপ্পর পুলিশ কর্মকর্তার

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৯:২৮ অপরাহ্ণ , ৩ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

এনই আকন্ঞ্জি,সারাদেশে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষে যেখানে পুলিশের বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সেখানে এক অটো চালক কেন যাত্রী রেখে পুলিশ কর্মকর্তাকে অটো দিয়ে পুলিশের পছন্দের গন্তব্যে পৌছে দিলেন না সেই অপরাধে সকলের সামনেই থাপ্পর বসালেন। থাপ্পর দেওয়া পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর পুলিশ ক্যাম্পের কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী বাজারে থাপ্পর খেয়ে ক্যাম্পের প্রধানের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে ক্যাম্পের প্রধান নূরুল ইসলাম উল্টো ভুক্তভোগীদেরই বকাঝকা করলেন।

ভুক্তভোগী নূরুল আমীন বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের গোয়ালনগর গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় চার্জে ব্যবহৃত অটো চালক।

ভুক্তভোগী নূরুল আমীনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সোমবার ( ২জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চম্পকনগর বাজারে যাত্রী হেলাল উদ্দীন ও মো: আলাল মিয়াকে নিয়ে আউলিয়া বাজারে ফিরবেন। এমন সময় পথে যাত্রী হেলাল বাজারে কি যেন আনতে গেছেন। তখন আলাল অটোতেই ছিলেন। অটো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একজন এসে বললো সামনে দিয়ে আসতে। পরে আমি বললাম যাত্রী আছে যাত্রী বাজারে গেছেন আমি পারবোনা। পারবোনা শুনে, না করে দেওয়া ব্যক্তি। দুইজনকে নিয়ে আসলেন পুলিশের ড্রেস পড়া। তখন তিনি বুঝতে পেরেছেন তিনিও পুলিশ। কারন ওনার গাঁয়ে কোন পুলিশের পোশাক ছিলেন না তখন। পরে তিনি গাড়িতে কি কি আছে দেখাতে বললেন। পরে বুঝলাম গন্তবে দিয়ে আসেনি তাই গাড়ি চেক করাচ্ছে। নয়তো প্রথমেই বলতো চেক করবে আর আমার গাড়িই চেক করতে এসেছে অন্যদেরটা না। পরে ভুক্তভোগী নূরুল আমীন গাড়ির সীট’সহ সব দেখালেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের পরে যখন এই পুলিশকে বললেন, স্যার দেখা শেষ হয়েছে? এই কথা বলার পর পরেই নূরুল আমীনকে থাপ্পর বসালেন পুলিশ। কেন থাপ্পর দিলেন তিনি বুঝতেই পারেননি কারন কোন অপরাধ ছাড়া থাপ্পর খেতে হয়েছে তাকে। নূরুল আমীন তিনজন পুলিশের কাউকেই চিনতে পারেননি। কারন পোশাক ড্রেসের উপর শীতের কাপড় থাকায় নাম লেখা ছিলেন না পুলিশদের।

প্রতক্ষদর্শী অটোর যাত্রী হেলাল উদ্দিন বলেন, গন্তবে পৌছে দেয়নি এই রাগে শুধু আমাদের গাড়িটিই চেক করাইছে। পরে গাড়িতে কিছু না পেয়ে আমার বাড়িতে নেওয়ার জন্য দেড় দুই হাত লম্বা কয়েকটি বড়ই গাছের ডাল নিয়েছিলাম। কেন এই ডাল নিয়েছি এগুলা দিয়ে কি করবো কত প্রশ্ন করলো! পরে ডাইভারকে থাপ্পর দিলো। থাপ্পর খেয়ে ডাইভার কান্না শুরু করলো সেই কান্না দেখে মায়া লেগে যায়। কেন থাপ্পর দিলো ডাইভারকে এই অভিযোগ নিয়ে ক্যাম্পের প্রধানের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা নূরুল ইসলাম থাপ্পর দেওয়া কনস্টবল ফারুকের বিচার না করে। আমাদেরকে যে ভাষায় বকাঝকা করলো এই ভাষা কোন জগন্য মানুষও মুখে আনেনা আর ওনিতো বড় দায়িত্বে আছে। পুলিশই যদি সাধারণ মানুষদের এমন হয়রানি করে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বড় স্যার যে ব্যাবহার করেছে আমাদের সাথে সেখানে এই ক্যাম্পের কনস্টবলরা থাপ্পর কেন এরচেয়ে বড় অন্যায়ও করতে পারবে।

নাম না বলার শর্তে স্থানীয় চম্পকনগর এলাকার কয়েকজন জানান, উপজেলার থানা ১টি, ২টি ফাঁড়ি ১টি ক্যাম্প। প্রত্যেকটি থানা ও ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা একাদিকবার বদলী হলেও চম্পকনগর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা নূরুল ইসলাম অনেকদিন এক জায়গায় থাকার ফলে আইনের অপব্যবহার করছে। কর্মকর্তার বেশি কথা বলা ও মুখের ভাষা খারাপ হওয়ার ফলে স্থানীয় অনেকেই বিরক্ত। উপজেলার অনেকেরই মনে প্রশ্ন
উপজেলার চম্পকনগর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ নূরুল ইসলাম এতদিন এক জায়গায় কিভাবে থাকেন।

এব্যাপারে চম্পকনগর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা নূরুল ইসলামের মুঠোফোনে
রাইজিংবিডি’র প্রতিনিধি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছেলেগুলাকে দেখলই জানি কেমন কেমন লাগে। তারা গাড়িতে বড়ই গাছের ডাল রাখবে কেন? ডাল দিয়ে তারা কি করে। আর আপনি সাংবাদিক ছোটখাটো ব্যাপারে কল দিলেন কেন। আপনাকে সাংবাদিকতা কে শিখিয়েছেন। থাপ্পর দেওয়া ছোট বিষয় মনে হয়, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
আগে সাংবাদিকতা শিখেন। একথার জবাবে রাইজিংবিডি প্রতিনিধি বলেন ” আমার মোবাইলে রেকড হচ্ছে আর অভিযুক্তদের ভিডিও আছে ” এমন তথ্য জানানো হলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে দেখান কোন সমস্যা নাই। আপনি সাংবাদিককেও আমি দেখবো বলে তিনি কল কেটে দেন।

এব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি তিনি খবর নিবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন রেজাকে অপরাধ ছাড়া পুলিশ কাউকে থাপ্পর দিতে পারেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মো: শাখাওয়াত হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপারেশন) জয়নাল আবেদিন এর মুঠোফোন ও হোয়াটসএ্যাপে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

January 2023
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আরও পড়ুন