১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

দালাল ঠেকাতে পুলিশ বক্স, দালাল কমেছে তত্ত্বাবধায়কের দাবি

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৬:৩৮ অপরাহ্ণ , ২৮ নভেম্বর ২০২২, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য দীর্ঘদিনের। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বেশ কয়েকবার অভিযানের পরেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না।

হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য ও কর্মচারী পরিচয়ে দালালরা রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছিল। এসব কারণে জেলা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যৌথ উদ্যোগে হাসপাতালে পুলিশ বক্স দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালে গিয়ে জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগের বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষে সামনে পুলিশের দালাল ঠেকাও অভিযান লক্ষ্য করা যায়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের চতুর্থদিকে অর্ধশতাধিক প্রাইভেট ক্লিনিক গড়ে উঠেছে৷ এসব হাসপাতালে দালালরা গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের ভাগিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সকালে সদর হাসপাতালে হাজিরা দিয়ে বেশ কয়েকজন ডাক্তার প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে রোগী দেখেন। আর দালালরায় এসব রোগী সদর হাসপাতাল থেকে ভাগিয়ে নিয়ে যান। এসব দালালদের দৌরাত্ম্য কোন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ডের কিছু নার্স ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা দালালদের সহযোগিতা করে তারাও একটি লভ্যাংশ নিচ্ছেন। এসব যখন পুলিশ সুপার ও হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়কের নজরে আসে তখন পুলিশ বক্স দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। অবশেষে হাসপাতালে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি পুলিশ বক্স দেওয়া হয়। তারা প্রতিদিন দালাল ও দর্শনার্থী প্রবেশে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

তাছাড়া ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তার ভিজিট করে হাসপাতালে থাকতে পারবে না। নিয়মের বাহিরে গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তত্ত্বাবধায়ক ও পুলিশ জানিয়েছেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফুজ্জামান হিমেল বলেন, পুলিশ দেওয়ায় আগের চেয়ে দালালের উৎপাত কমেছে। রোগীরা স্বাধীন ভাবে চিকিৎসা পাচ্ছে। প্রাইভেট ক্লিনিকে কেন, সদরে ভাল চিকিৎসা হয়। তিনি রোগীদের দালালের খপ্পরে না পড়ে জেলা সদর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে বলেন।

এদিকে সিনিয়র স্টাফ নার্স মনির হোসেন বলেন, এখন রোগীরা স্বাধীন ভাবে চিকিৎসা নিতে পারে৷ বিনামূল্যে অনেক কঠিন কাজ জরুরি বিভাগে হচ্ছে। যেগুলো আগে দালালরা প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে করতো। পুলিশ থাকায় এখন দালালরা হাসপাতালে আসতে পারে না। রোগীরা অল্প টাকায় সঠিক চিকিৎসা নিতে পারে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, দালালের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আমি প্রায়ই ২ বছর দায়িত্বে আছি। দালাল নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সময়ে অভিযান হলেও কারও বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। পুলিশ সুপার মহোদয়ের উদ্যোগে হাসপাতালে পুলিশ বক্সের ব্যবস্থা করা হয়। আগের চেয়ে দালালের দৌরাত্ম্য অনেক কমেছে। হাসপাতালে দালাল ও দর্শনার্থী প্রবেশে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া আউট সোর্সিংয়ে কাজ করা কর্মচারীদের এপ্রোন পড়তে বলা হয়েছে। হাসপাতালের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারি দালালির সাথে সম্পৃক্ততা থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন পর থেকে দালালের উৎপাত কমেছে। রোগীদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বেশ কয়েকজন দালাল আটক করে কারাগারে প্রেরণ করেছি। কয়েকজন চিহ্নিত দালাল আছে যাদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে। অতি শীঘ্রই সদর হাসপাতাল দালাল মুক্ত হবে৷

তিনি আরও বলেন, রোগীরা যেকোন সমস্যায় পড়লে হাসপাতালে পুলিশ বক্সের ইনচার্জ মো. আশরাফ সহ ডিএসবি অফিসার শাহাদাৎ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করবেন। তারা আপনাদের সহযোগিতা করবেন।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

November 2022
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
আরও পড়ুন