১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করার সাহস পদ্মা সেতু

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ২:০৮ অপরাহ্ণ , ২৫ জুন ২০২২, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

আজ বাঙালি জাতির বহুল আকাঙ্ক্ষিত, ‌এক সময়ের ‘দু:সাধ্য স্বপ্নের’ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। কাল শনিবার চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই পদ্মা সেতু। রাত পোহালেই জাতির সেই স্বপ্নজয়ের উদ্বোধন। এ উপলক্ষে উৎসবের অপেক্ষায় পুরো দেশ, একইসঙ্গে এই শুভক্ষণের অপেক্ষায় আছেন জীবনের প্রয়োজনে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা দেশের নাগরিকরা।

পদ্মা সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনিই কাল সকালে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এরপর গাড়ি চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হবে আগামী রোববার ভোর থেকে। পদ্মা শুধু সেতু নয়; অবাধ্য প্রমত্তা নদী পদ্মার বুকে সগৌরবে দৃশ্যমান এই সেতু বাঙালির অহংকারের প্রতীক। বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা, আত্মমর্যাদা ও স্বাবলম্বী অসাধারণ প্রতীক।

পুরো বিশ্বের কাছে পদ্মা জাতি ও দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও উন্নয়নের স্বারকবার্তা। সরকারের সক্ষমতার উজ্জ্বল ও অনন্য দৃষ্টান্ত। জাতি হিসেবে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পরিচিতির পাশাপাশি বর্হিবিশ্বে পদ্মা সেতু আমাদের আত্মমর্যাদা ও গর্বিত আত্মপরিচয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারের আমলে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ ও সফল বাস্তবায়ন। যা বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের, অবশ্যই সরকারের সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়। কারণ, ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক কথিত দুর্নীতির বায়বীয় অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করার কথা জানায়। বিশ্বব্যাংককে অনুকরণ করে আরো তিনটি বিদেশি সংস্থা অর্থায়ন করবে না বলে সরে যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য ইচ্ছায়, নিজেদের উদ্যোগ ও অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয় পদ্মা সেতু। দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো দেশের টাকায় নির্মিত হয়, প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কো‌টি টাকায়। এটাও সম্ভব হবে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আগে যা দেশে-বিদেশের কেউ ভাবতেও পারেননি। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সাহসী পদক্ষেপ বর্তমান বিশ্বে তাই আমাদের সক্ষমতার নতুন ধারণার জন্ম দেবে, ইতোমধ্যে দিয়েছেও।

পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন মানে আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই‌য়ের চুড়ান্ত বিজয় অর্জন। সীমাহীন ষড়যন্ত্র, বাধাকে পা‌য়ে মা‌ড়ি‌য়ে পদ্মা আজ দৃশ্যমান। দেশি-বিদেশি নানা কূটচাল অগ্রাহ্য করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন নন্দিত বাস্তবতা। সততা ও সাহসের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব অপচেষ্টা নসাৎ করেছেন। তাঁর সরকার পারবে সেতু নির্মাণ করতে, তাঁর নেতৃত্বের সরকারের প্রতি এই আস্থা শুরু থেকে রেখেছে জাতি।

জাতির জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার প্রত্যয়ের ফসল পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী নেতা, তাঁর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নেতৃত্বের আরেক উজ্জ্বল সাক্ষ্য এই সেতু। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার আরেকটি সাহসী পদক্ষেপ হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত। প্রমত্ত পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ তাঁর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। এই সেতু প্রকল্প দেশের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ প্রকল্প। স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশাল ও অপূর্ব নির্মাণশৈলী।

যে কোনো রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত হলো দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুটি উদ্বোধনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে নতুন দিগন্ত। বদলে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার বাসিন্দাদের ভাগ্য, জীবনমান ও তাদের সামাজিক জীবন। দেশের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে গোটা দক্ষিণবঙ্গের অক্ষয় মেলবন্ধন করেছে এই সেতু।

এই সেতুর বাস্তবায়ন বিশ্ব দরবারে দেশ ও জনগণকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে সাহস এনে দিয়েছে, এই পথ ধরে আমরা এগিয়ে যেতে পারি আরো বহুদূর।

লেখক,– র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

June 2022
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
আরও পড়ুন