১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

বহুল প্রতীক্ষিত ও আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আঃলীগের বর্ধিত সভা আগামীকাল

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১১:১৮ অপরাহ্ণ , ৪ মার্চ ২০২২, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

এনই আকন্ঞ্জি :ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের বহুল প্রতীক্ষিত ও আলোচিত বর্ধিত সভা আগামীকাল শনিবার ৫’ই মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এই সভাকে কেন্দ্র করে সরব জেলার আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতি। চলছে দফায় দফায় নেতাদের অভ্যন্তরীণ মিটিং। শহরের আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন মিলনায়তনে আগামী শনিবার সকাল ১০’টায় বিশেষ এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিশেষ বর্ধিত সভা সফল করার লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি’র সভাপতিত্বে গত বুধবার ২’ই মার্চ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার প্রস্তুতিমূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের প্রায় সকলেই বর্ধিত সভা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন ও সফল করার পক্ষে একমত পোষণ করেছেন।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংগঠনের তৃণমূল থেকে জেলা পর্যন্ত সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশে এই বর্ধিত সভা আহ্বান করার কথা প্রকাশিত সভা আহ্বানের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। যদিও ইতোপূর্বে কয়েক দফা তারিখ হলেও বিভিন্ন কারণে বর্ধিত সভা হয়নি। এরইমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের বিবাদ-বিভক্তি মেটাতে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তাদের নিয়ে রাজধানীতে একাধিক বৈঠক করেছেন। সর্বশেষ গত ১৭’ই জানুয়ারি ঢাকায় জেলার নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রেীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে বৈঠকে বিভক্ত জেলা আওয়ামী লীগের এক পক্ষের নেতারা জেলার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলে ধরেন।

বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি,এবং দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত), জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সায়ীদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

কী হতে পারে বর্ধিত সভায়, জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূলত জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভেদ ও বিভক্তি দূর করার উপর গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি মেয়াদ উত্তীর্ণ উপজেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়েই উক্ত বর্ধিত সভায় আলোচনা হতে পারে।

তাছাড়া গত বছর মার্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের ভয়াবহ তান্ডবের বিরুদ্ধে ও এর প্রতিবাদে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রবিউল মোক্তাদির চৌধুরী ও হাতেগোনা কয়েকজন নেতাকর্মী ব্যতীত বাকী প্রভাবশালী নেতারা কেন সরব ও জোড়ালো ভূমিকা পালন করেনি সে বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।

জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী বর্তমান সভাপতি মোক্তাদির চৌধুরী’র নেতৃত্বে সকল বিভেদ ও বিভক্তি ভুলে জেলা আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চান বলেও তারা জানান।

এদিকে বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে তৎপর দলের নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রভাবশালী নেতা দ্রুত সম্মেলন আয়োজনে তৃণমূলের আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার জানান, “আগামীকালের সভা হচ্ছে সাংগঠনিক সভা,দলের সংগঠনের জন্য যা যা প্রয়োজনীয় তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে”।

বর্ধিত সভার অন্যতম বিশেষ অতিথি এবং আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা,কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ স্বপন এমপি’কে বিশেষ এই বর্ধিত সভার গুরুত্ব ও এর প্রধান আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার পিএস সৈকত জানান, “তিনি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক মিটিং শেষে খুব ক্লান্ত,আগামী শনিবার বর্ধিত সভার দিন তিনি কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেন “।

উল্লেখ্য ২০১৪ সালের ২৯’শে ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এরপর ২০১৫ সালের মে মাসে ঘোষিত জেলা কমিটি কেন্দ্রের অনুমোদন পায়। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার প্রথম তোড়জোড় দেখা যায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এ লক্ষ্যে ‘১৯ সালের জুলাই মাসে জেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় আশুগঞ্জ, সরাইল, আখাউড়া, কসবা, সদর, শহর ও বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে বিজয়নগর উপজেলা,সদর উপজেলা, পৌর আওয়ামী লীগ এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন হয়। পরে সে বছর আর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২০ সালে অর্থাৎ পরের বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ধামাচাপা পড়ে সম্মেলনের বিষয়টি। ২০২১ সালের ১৮’ই সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জেলার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ২৭’শে নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তাছাড়া ১০’ই অক্টোবর থেকে ১৫’ই নভেম্বরের মধ্যে কসবা, আখাউড়া, নবীনগর, নাসিরনগর, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা শাখার সম্মেলন সম্পন্ন করারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ৬’ই অক্টোবর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিমের উপস্থিতিতে তৃণমূল প্রতিনিধি সভা ও ৭’ই অক্টোবর বর্ধিত সভা করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় উক্ত সভায়,কিন্তু একটিও সম্পন্ন হয়নি। যার দরুন ২০২১ সালও সম্মেলনের আলাপ-আলোচনাতে পেরিয়ে যায়। যদিও গত মার্চে হেফাজতের ভয়াবহ তাণ্ডবের পর জেলা আওয়ামী লীগের নীরব ভূমিকার জন্য কমিটি ভেঙে দেয়ার খবর চাউর হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন