১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে কুমার পাড়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ , ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

মো.তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) জৌলুস হারাচ্ছে সেই মৃৎশিল্পই বর্তমানে হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমরা মৃৎশিল্প বলতে মাটি দিয়ে বাংলার কুমাররা হাতের নিপুণ স্পর্শে কারুকাজে মাধ্যমে যে শিল্পের সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে থাকতে পার নিত্য ব্যবহার্য পাত্র অথবা ঘর সাজানোর উপকরণ। এককালে মৃৎ শিল্প জমিদাররা অভিজাত পরিবারে নিত্য দিনের ব্যবহার্য বস্ত ছিল। সন্ধ্যা প্রদীপ কিংবা সকালের পান্তা-মরিচ খাওয়া পর্যন্ত এই শিল্পের ব্যবহার বেশ উল্লেখ করার মতো। প্রযুক্তি অগ্রতি আর বিজ্ঞানের জয়ের ফসল হিসাবে কমদামে অধিক টেকসই সিলভার মেলামাইন, প্লাস্টিক বিভিন্ন সামগ্রীর দাপটে মৃৎ শিল্পের তৈরি সামগ্রীর চাহিদা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। কুমার পাড়া নারী- পুরুষের মাঝে আগের মতো ব্যস্ততা নেই। আগের মতো নেই জৌলুস,কুমার বাড়ির সামনে কথা হয় মো. মুমিন মিয়ার সঙ্গে তিনি বলেন, শিল্প সচেতন ব্যক্তিরা মৃৎশিল্পের কদর করছেন বেশ তাদের চাহিদায় সৌখিনতা রয়েছে। তবে এখন মানুষের গৃহস্থলীর কাজে বেশী প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ব্যবহার করছে। আগের মানুষ মাটির তৈর জিনিসপত্র দিয়ে ঘরের শোভা প্রকাশ করছেন। সঠিক ব্যবহারে প্রশংসাও পেয়েছেন এই শিল্প। বর্তমানে কর্মক্ষেত্রেও এর ব্যবহার ভালো লক্ষ্যনীয়। সরাইল উপজেলার সদর কুমার পাড়া,পানিশ্বরসহ বিভিন্ন জায়গাতেই পেতে পারেন আপনার শখের মাটির নিত্য প্রয়োজনীয় মাটির পণ্য।এদেরকে উৎসাহ দিয়ে তাদের তৈরী জিনিসপত্র ক্রয় করে এই শিল্পটিকে বাচিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। দিন চলে যাবে সময় হারিয়ে যাবে অতীতের অদৃশ্য গহব্বরে তবে সে শুধু চলেই যায় না, রেখে যায় ইতিহাস। যুগে যুগে পৃথিবীর একেক মেরুত গড়ে ওঠে মানুষের ভিন্ন ইতিহাস, ঐতিহ্য শিল্প সংস্কৃতি! আমাদের পূর্ব পুরুষরা নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক হিসেবে মৃৎশিল্পের তৈরি থালা-বাসন, হাঁড়ি-পাতিল, ঘটি-বাটি, বদনা, বিভিন্ন হরিণ, সিংহ, বাঘ গরু ইত্যাদি বাচ্চাদের খেলনা। বিভিন্ন সময় এই শিল্প নানা রূপ রঙে আমাদের সামনে বৈচিত্র নিয়ে হাজির হয়েছে। সরাইল উপজেলা কুমাররা মাটি সংগ্রহ করতো ধরন্তি থেকে আজও করছে। মৃৎ শিল্পের ইতিহাস এ উপজেলায় শত বছরের। এক সময় এখানকার কুমারদের হাতে তৈরি মাটির জিনিস পত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল।এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারেও পাওয়া যেত এই মৃত শিল্প। কিন্তু কালের বিবর্তনে মাটি তৈরি হাড়ি-পাতিলের চাহিদা থাকলেও বিলুপ্তির পথে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎ শিল্প। মৃৎ শিল্পের জায়গা দখল করে নিয়েছে সিলভার, প্লাস্টিক ও মেলামাই সামগ্রী।
সরেজমিনে জানা গেছে ,সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুমারপাড়া ৭টি পরিবারে। এসব পরিবারে সদস্য এখনও মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিজ হাতে বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালায়। তবে প্লাস্টিকের তৈরি আধুনিকজিনিসপত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কদর কমেছে মাটির তৈরি জিনিস পত্রের। তাই বেকার হয়ে পড়েছে মাটির কারিগররা। এরই মধ্য উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কুমার অনেকেই পেশা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। এখন তাদের কেউ স্বর্ণের কাজ, বিদেশে কেউবা কামারের কাজ করছে। এ গ্রামে প্রায় সব বাড়িতে দিন রাত ঘুরছে কুমারের চাকা। আবার অনেকের জিনিসপত্রে রং-তুলির কাজে ব্যস্ত।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

February 2022
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28  
আরও পড়ুন