২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে কনকনে শীতের মাঝে বোরো রোপণে মাঠে কৃষক

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১১:১৬ অপরাহ্ণ , ২৭ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

মো.তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলা জুড়ে হাড় কাঁপানো কনকনে শীতের ভিতর বোরো চাষের জন্য কৃষকদের হিড়িক পড়েছে। সরাইলে হাওর অঞ্চলে কৃষকদের বোরো চাষ রোপণ পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। এমনকি অনেকের প্রায় শেষ পর্যায়ে বোরো রোপণ। কাক ডাকা ভোর থেকে শীতল ঠান্ডা পানিতে নেমে বোরো ধানের বীজ তুলে সেই বীজ জমিতে রোপণ করছেন কৃষি শ্রমিকরা। ভোর রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত গরুর লাঙ্গল ও ট্রাক্টর দিয়ে বোরো জমি চাষের জন্যে হাল চাষ করছেন কৃষক। এদিকে অভিযোগ উঠেছে সরাইল কালিকচ্ছ আকাশী বিলে দিনের দিন কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ আগের মতো নেই। প্রতি বছরের এই ফসলি জমি ভেকু দিয়ে মাটি কাটার কারণে পাশের জমির ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। এ নিয়ে কৃষকরা অভিযোগ করেও কোন প্রকার প্রতিকার আসে না। দিনের দিন আরও ভিকু ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।কে শুনে কার কথা।দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দেখ না দেখার ভান করে। অভিযোগ না করলে,বলে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। আর অভিযোগ করা হলে বলে দেখতেছি। দেখার মধ্যে সময় পার।
ভোর থেকে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে শ্রমিকরা চারা রোপণ করছেন বোরো জমির মাঠে। সরাইল উপজেলার বিভিন্ন বোরো জমির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বোরো চাষের জন্যে এখন থেকেই আগাম বোরো চাষের জমি হালচাষ করা সহ বোরো ধানের রোপণ করছেন কৃষকেরা। কালিকচ্ছ এলাকার ধরন্তী গ্রামের কৃষক হেলাল জানান,তিনি এবার ২০বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন। ইতিমধ্যে সবার আগেই তিনি আকাশী বিলে পানি নিষ্কাসনের সাথে সাথে তার ৯বিঘা বোরো জমিতে ধান রোপণ করতে শুরু করেছেন। তাই এবার বোরো চাষের জন্য একটু আগেই জমি চাষের জন্যে প্রস্তুত করা সহ বোরো রোপণ করছেন। তবে তিনি বলেন, এবার প্রচন্ড ঠান্ডা তাই কৃষি শ্রমিকরা তাদের মজুরি একটু বেশি নিচ্ছেন। তবুও কৃষক কিছুই মনে করছেন না। কারন যে পরিমাণ ঠান্ডা তাতে করে বোরো চাষের জন্য শ্রমিকদের পাওয়ায় কষ্টকর বলে জানান তিনি।
তিনি বলে দেখেন ভিকু আর ট্রাক্টর এর অত্যাচারে কোন কাজ করা যাচ্ছে না। কোন কিছু বললে এরা আমাদের উপরে আরো রাগাম্বিত হয়ে আসে।শুনেছি কালীকচ্ছ গ্রামের কাজী বদিরুজ্জান নামের একজন অভিযোগ করছে কিন্তু কই কোন খবর তো নাই। এখন আরো বেশি করে মাটি কাটছে। আজ বুধবার ২৬ জানুয়ারি ভুক্তভোগী কৃষকদের ভাষ্যমতে।
উপজেলা নোয়াগাঁও ইউনিয়নে কাটানিশা গ্রামের পুর্ব বন্দে ভিকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কাটাতে পাশের জমি ভেঙেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরাইলে বোরো ধান চাষে শেষ সময়ে ব্যস্ততা পার করছেন কৃষকেরা। প্রধান খাদ্য শস্য ধান চাষের গুরুত্ব প্রাচীনকাল থেকে সর্বাত্মক।সরাইলে বিল ও হাওর অঞ্চলের মাটি ধান চাষের উপযোগী বিধায় এ অঞ্চলের শুধু কৃষকই নয়, শিক্ষিত যুব সমাজ ও চাকরিজীবীরাও ধান চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বোরো ও উপসী জাতের ধানের চাষ এ অঞ্চলে বেশি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ নতুন জাতের ধান,ব্রি ধান-২৮ ও ব্রি-২৯- সহ স্থানীয় জাতের বেশ কিছু ধানের চাষ হচ্ছে। উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের কৃষক মারজান সহ স্থানীয় কৃষকেরা জানান, আমর ভাটি অঞ্চলের মানুষ প্রতি বছরের নেয় এ বছর জমিতে ধান চাষ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। এ এলাকার কৃষকদের ধান চাষে আগ্রহ বেশী।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একরাম হোসেন জানান, এ বছর উপজেলায় ১৪ হাজার ৯শত হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। এ অঞ্চলের কৃষক উচ্চফলনশীল জাতের বীজ রোপণ করছে। সার ও কীটনাশক ওষুধের ঘাটতি নেই। সব কিছু ঠিক থাকলে এ অঞ্চলে ধানের বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ নতুন জাতের ধান পরীক্ষা মুলক চাষ করা হচ্ছে। ফসলি জমিতে ভিকু দিয়ে মাটি কাটার বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন জানান,সরকারি নিয়ম না মেনেই উপজেলায় অনেক ইটভাটা তৈরি হয়েছে। আর এসব ভাটার জন্য মাটির প্রয়োজন। তাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের জমির টপ সয়েল তারা নিচ্ছে। আমাদের পরামর্শ দেওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারি না। আর এ টপ সয়েল নেওয়া বন্ধ করার ক্ষমতা নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

January 2022
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আরও পড়ুন