১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

নিজের সহায় সম্পদ থাকার পরও স্ত্রী-সন্তানের নির্যাতনে ঘুরছেন পথে পথে

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ , ২৬ জানুয়ারি ২০২২, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি,নিজের সহায় সম্পদ থাকার পরও স্ত্রী-সন্তানের নির্যাতনে অসহায় এক প্রবাস ফেরত ব্যক্তি। চার বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও এখন পথে পথে ঘুরছেন কুয়েত ফেরত এই প্রবাসী। তাদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে সহায়তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা কফিল উদ্দিন।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় তিনি নিজের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম ও ছেলে সাইফুল ইসলামের করা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

কফিল উদ্দিন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার বড়ভাই আব্দুল মজিদ মারা যাওয়ার তিন বছর পর ১৯৯২ সালে তার স্ত্রী হোসনে আরা বেগমকে আমি বিয়ে করি। ভাইয়ের মৃত্যুর সময় রেখে যাওয়া তার চার ছেলে ও এক মেয়েকে নিজের সন্তানের মতো গ্রহণ করেছি। আমি তাদেরকে আদর-স্নেহ দিয়ে বড় করেছি। এর মধ্যে আমারও এক ছেলে সন্তান হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর আমার ভাইয়ের চার ছেলেকেই আমি নিজের টাকায় বিদেশে পাঠিয়েছি। আমি দীর্ঘ ২৬ বছর কুয়েতে প্রবাস জীবন কাটিয়ে গত ২০১৯ সালে দেশে চলে আসি।

আমি প্রবাসে থাকা অবস্থায় প্রতিবারই দেশে ছুটিতে আসার পর জয়গা-জমি কিনেছি। ২৬ বছর প্রবাসে থেকে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে এলাকায় চারটি বাড়ি, স্থানীয় ধারিয়ারচর বাজারে একটি দোকান এবং ১৭ কাণি জমি কিনেছি।

আমি দেশে একেবারে চলে আসার আগেরবার যখন ছুটিতে এসেছিলাম তখন একটি জমি কেনার জন্য আমার স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা দিয়ে গিয়েছিলাম। দেশে আসার পর আমার নিজের ছেলে সাইফুল ইসলাম ব্যবসার জন্য টাকা দিতে আমাকে চাপ দিতে থাকেন। পরে ১২ লাখ টাকা খরচ করে স্থানীয় বাজারে তাকে একটি কাপড়ের দোকান করে দেই। আমার স্ত্রীর কাছে জমি কেনার জন্য দিয়ে যাওয়া ১০ লাখ টাকার হিসাব চাইলে হিসাব না দিয়ে উল্টো তার এবং আমার ছেলে সাইফুলের নামে জায়গা-সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তারা সকল সম্পত্তির দলিল নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেন। আমি তাদেরকে বলি, আগে আমার সম্পদের দলিল বুঝিয়ে দাও, এরপর আমি সেগুলো বণ্টন করে দেব। কিন্তু তারা রাজি না হয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। বিদেশে থাকা আমার ভাইয়ের চার ছেলের পরামর্শে তারা আমার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, সাড়ে ৫ মাস আগে আমাকে আমার ভাগ্নির বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে আসে। এরপর আমাকে ঘরে আটকে রেখে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে আমাকে শরবতের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে ফেলে। পরে অচেতন অবস্থায় আমার টিপসই নিয়ে কিছু সম্পদ তাদের নামে লিখে নেয়।

আমি বাঞ্ছারামপুর থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়রি করি। এরপর থেকেই আমি বাড়িছাড়া। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে আমার স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলার পর থেকে আমাকে মারার জন্য হন্নে হয়ে খুঁজছে তারা। আমার নিজের ঘর-বাড়ি থাকা সত্ত্বেও পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আমি আমার ওপর যে অন্যায়, অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, সেটির বিচার চাই। আমার সারাজীবনের কষ্টার্জিত অর্থে গড়া সম্পত্তিগুলো ফেরত চাই। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সহযোগিতা চাই আমি।

তবে বাবাকে নির্যাতন করে সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কফিল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবাকে কখনোই সম্পত্তির জন্য নির্যাতন করা হয়নি। আমার বাবা নিজের ইচ্ছায় আমাদের সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

January 2022
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
আরও পড়ুন