ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি সংশোধনের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ , ২ নভেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের ৩৪৯ সদস্যের কমিটি সংশোধনের দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে হাসপাতাল সড়ক
পর্যন্ত এলাকা তারা মোটরসাইকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষরিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের ৩৪৯ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ফেসবুক পেইজে পোস্ট করে ঘোষণা করা হয়।কমিটিতে ৩০ অক্টোবরের স্বাক্ষর থাকলেও ২৯৫ সদস্যের কমিটি গত ৩১ অক্টোবর ঘোষণা করা হয়। আর গত সোমবার ফেসবুকে সহসম্পাদকসহ ৫৪জন সাধারণ সদস্যের আরো দুটি পাতা ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে ছাত্রলীগের এই কমিটিতে ৩৪৯সদস্য রয়েছে। পরদিন সেটি প্রকাশ পাওয়ায় এ নিয়ে সমালোচনা আছে। কমিটি যখন প্রকাশ হলো তখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ওই দুই নেতাই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক বাদে সহ-সভাপতি পদে ৯০ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১১ জন, উপ-সম্পাদক ১৩৬, সহ-সম্পাদক ৫৯জন, সদস্য ৪০জন স্থান পায়। কমিটিতে জেলা সদর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকজন নেতার নাম রয়েছে।
২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাত সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। প্রায় ৪৫ মাস পর ৩৪৯সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ প্রায় চার বছর ঘোষণা করা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। কমিটি নিয়ে ফেসবুকে জুড়ে বইছে সমালোচনা।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে ছাত্রলীগের পদবঞ্ছিত নেতাকর্মীরা অর্ধশতাধিক মোটরসরাইকেলে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান ভাদুঘর, কাউতলী, কলেজপাড়া, কালীবাড়ি মোড়, টিএরোড ও হাসপাতাল মোড় প্রদক্ষিণ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের
সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে পদবঞ্ছিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমাবেশ করেন।
সেখানে ছাত্রলীগের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জুয়েল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাভলু
চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, ওয়ান পাস, টুপাস ও যারা এসসসি পাস করেনি, যাদের বয়স ৩০এর বেশি, বিবাহিত, অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ী, বিভিন্ন মামলা-হামলার সঙ্গে জড়িত ও বিএনপি-ছাত্রদলের বিভিন্ন কমিটিতে ছিল এমন নেতাকর্মীরা জেলা ছাত্রলীগের এই কমিটিতে রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের কিছু বর্তমান ও সাবেক নেতাদের সমর্থনে-ইন্দনে এমন হয়েছে। আমরা চাই জেলা ছাত্রলীগ একটি পরিচ্ছন্ন ও ছাত্রজনতার কমিটি হউক। যারা
মেঘে রোদে বৃষ্টিতে ভিজে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, যারা রাজপথে বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাঠে ছিল তাদের এই কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি। ছাত্রলীগের কমিটি সংশোধন করে বিবাহিত, অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ীদের কমিটি থেকে বিলুপ্ত করতে হবে। যদি আগামী সাতদিনের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের এই কমিটি সংশােধন করা না হয়, তাহলে আমরা এর চেয়ে বড় দুর্বার
আন্দোলন গড়ে তুলব। বিবাহিত, অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ী, মাদক মামলা জড়িত এমন ১০০জন এই কমিটিতে রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী১০-১২জন, ২০-২৫জন বিবাহিত,
৮-১০অছাত্র, ছাত্রদল থেকে এই কমিটিতে এসেছে এমন ৫-৭জন রয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে এত বড় কমিটি জমা দেয়নি। তবে কমিটিতে পদ পাওয়া যে কোনো ছাত্রলীগের সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের বিষয়ে কেউ যদি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন