মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ‘মূল হোতা’ দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি এবারও পেলেন নৌকার টিকেট
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ , ১৩ অক্টোবর ২০২১, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ‘মূল হোতা’ দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি এবারও নৌকা প্রতিক পেয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে প্রকাশিত তালিকা থেকে তার নাম দেখা যায়। সে নাসিরনগরে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়নে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। বিগত ২০১৬ সালে ৩০ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ‘মূল হোতা’ আতিকুর রহমান আঁখি দেশ জুড়ে আলোচনায় আসে সে। তাকে নিয়ে বেশ বিব্রত হয়েছিল আ.লীগকে। তবে ঐসময় তাকে কারা আ.লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিল, কারা তাকে দলে ভিড়িয়ে ছিল তা নিয়ে ছিল আলোচনা ও সমালোচনা। জেলা ও উপজেলা আ.লীগকে জবাবদিহিতাও করতে হয়ে ছিল। আবার অনেক আ.লীগ নেতা চেয়ারম্যান আখিঁ সাথে সর্ম্পক আছে তা তৎকালীন সময়ে অস্বীকারও করেছিল। তাকে এই ঘটনায় হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। নাসিরনগর হামলার ঘটনায় ‘মূল হোতা’ হিসেবে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে ২০১৭ সালে ৫ জানুয়ারি ঢাকার ভাটারা থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরবর্তীতে ৬ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায় সে।
জানা যায় জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামে জেলে পরিবারের এক যুবক ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করেছে-এ অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর তাকে পুলিশে দেয় একদল যুবক। এই ঘটনার পরদিন এলাকায় মাইকিং করে নাসিরনগর উপজেলা সদরে পৃথক দুইটি প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করা হয়। ওইসব সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও অংশ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারিরা নাসিরনগর সদরে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলায় চালায়। পরবর্তীতে ওই এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও হিন্দুদের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় মোট আটটি মামলা দায়ের করা হয়। তার মধ্যে একটি মামলা গৌর মন্দিরে হামলার ঘটনায় ২২৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে ১০ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে ছিল পুলিশ।
চার্জশিটে ১৪৩, ৪৪৭, ৩২৩, ৩৮০, ২৯৫, ২৯৫ (ক), ৪৪৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২২৮ জন আসামি মধ্যে ঘটনার মূল হোতা হিসাবে উল্লেখ করা হয় আ.লীগের মনোনীত হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে। এদিকে মঙ্গলবার রাতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চট্রগ্রাম বিভাগে আ.লীগের দলীয় প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। তাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর পুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি নাম। তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে ব্যাপক নানান সমালোচনা। ফেসবুক ব্যবহারকারি শামিম হায়দার নামে একজন জানান যে আখিঁ চেয়ারম্যান আ. লীগ সরকারকে বিপদে ফেলে ছিলেন সেই আখিঁ চেয়ারম্যান পেলেন আবারও নৌকা, সব সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই ভাবে অনেকেই ফেসবুকে সমালোচনা করে যাচ্ছেন। এই ব্যাপারে নাসিরনগর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহমদ জানান তাকে (আখিঁ) মনোনয়ন দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ।এর বাহিরে আমরা কিছু বলতে পারব না। এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, আঁখি আওয়ামী লীগের কেউ নয়।
আপনার মন্তব্য লিখুন