বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় প্রভাবশালীর ভবন ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার জায়গা দখলের অভিযোগ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ , ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি :ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ করা জায়গায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে জায়গাটি বেদখল অবস্থা থেকে রক্ষা ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে, একেই প্রভাবশালী মহল ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায়ও ভবন নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে আদালত থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রভাবশালী মহলটি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড আশুগঞ্জের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গত ২৯ আগস্ট ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করেন, বোর্ডের ১১.৩৪ একর ভূমির মধ্যে চার লেন সড়ক প্রকল্পের জন্য সমঝোতার ভিত্তিতে ২.৭৩ একর অধিগ্রহণ করা হয়। সিএস ও এসএ খতিয়ান অনুযায়ি ভূমির পরিমাণ সঠিক থাকলেও বিএস খতিয়ানে চার শতক ভূমি অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ওই জায়গায় নাহার গার্ডেনের মালিক পক্ষ স্থাপনা নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছে। এতে সরকারি ভূমি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের মৃত এলাই বকসের ছেলে জসিম উদ্দিন এবং আব্দুল খালেক এবং মৃত আব্দুল আলীম আলেকের ছেলে রুবেল মিয়া তাদের জায়গা দখলের চেষ্টা করার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
আমমোক্তারনামা মূলে বাদীর পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করবেন মো. কুতুব উদ্দিন ফকিরের ছেলে মো. সালাহ উদ্দিন। বাদী জসিম উদ্দিন ও আব্দুল খালেকের ভাই আবুল হোসেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। মামলার মূল বিবাদীরা হলেন সোনারামপুরের মৃত আজাদ মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া ও রুবেল মিয়া, মৃত আজাদ মিয়ার স্ত্রী নাহার বেগম, যাত্রাপুরের মৃত সামছুল হকের ছেলে শামীম মিয়া, সোহেল মিয়া ও বড়তল্লার আ. আজিজের ছেলে কুতুবুর রহমান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, শহীদ আবুল হোসেনের পিতা এলাই বকস (মৃত ফজর আলী ফকিরের ছেলে) সোনারামপুর মৌজার ৩০৬ দাগের ২৮ শতক জমি কেনেন ১৯৪৯ সালের ২৪ ডিসেম্ব। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চার শতক অধিগ্রহণ করে ও এক শতক তিনি বিক্রি করেন দেন। তবে এলাই বক্সের বাকি ২৩ শতকের মধ্যে ১৬ শতক বিএস খতিয়ানভুক্ত হয়। একই এলাকার আজাদ মিয়া ১৯৮৭ সালের ১৪ জানুয়ারি উল্লেখিত দাগের ৪২ শতক জমি কিনেন। পরবর্তীতে ওই জমির ২৫ শতাংশ বিক্রি করলেও বিএস খতিয়ানে আজাদ মিয়ার নামে ৬০ শতাংশ ভূমি লিপিবদ্ধ হয়।
আমমোক্তার নিয়োগ হওয়া আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিরীহদের জায়গা দখলের পাঁয়তারা হচ্ছে বলে আমি মামলাটি পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছি। আশা করি আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।’
মামলার বিবাদী কামরুজ্জামান রিপন (রিপন মিয়া) বলেন, ‘আমি কেন অন্যের জায়গা দখল করতে যাব। সরজমিনে দেখলেই বুঝতে পারবেন আমি কারো জায়গা দখল করেছি কিনা। আমাকে ইউএনও অফিস থেকে ফোন করে সোমবার যেতে বলেছে।’
আপনার মন্তব্য লিখুন