১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মাদকাসক্ত-চোর-সন্ত্রাসীদের দাপটে নির্ঘুম রাত কাটছে ছয় গ্রামবাসীর

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৯:০৯ অপরাহ্ণ , ৩০ আগস্ট ২০২১, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি :মাদকাসক্ত একটি চক্র। নেশার টাকা যোগাতে বহুমাত্রিক অপরাধ করে বেড়াচ্ছে মাদক সেবন-বিক্রিতে সম্পৃক্ত চক্রটি। অপরাধের অভয়ারণ্যে তাদের দাপটে চরম নিরাপত্তাহীন আর আতঙ্কিত ছয়টি গ্রামের মানুষ। গ্রাম-ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতিবাদ সভা, দু’জনকে পুলিশে সোপর্দ করাসহ রজু হয়েছে একাধিক জিডি-মামলা। শেষতক পুলিশ সুপার বরাবর দাখিল হয়েছে লিখিত অভিযোগ। এহেন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা এলাকার।

জেলার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে নোয়াপাড়া, চন্দ্রপুর, ভরাজাঙ্গাল, খারঘর, গাববাড়ি, ধামসার নামীয় ছয়টি গ্রাম। স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র মদ-গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন রকম মাদক সেবন-বিক্রির মাধ্যমে এলাকাটিকে পরিণত করেছে ক্রাইম জোনে। চুরি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বহুমাত্রিক অপরাধ করেই যাচ্ছে মাদকাসক্ত এই চক্রটি। গত দেড় বছর ধরে তাদের দাপটে নির্ঘুম রাত কাটছে উল্লেখিত ছয়টি গ্রামের মানুষদের। ওই চক্রের অপকর্মের শিকার হয়ে বহু পরিবার নি:স্ব হয়ে গেছেন বলেও ভুক্তভোগীরা জানান।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অতি সম্প্রতি গাববাড়ি গ্রামের মনিরের সিএনজি, বিনাউটি গ্রামের জয়নালের মোটরসাইকেল চুরি হয়। পাশাপাশি সময়ে চন্দ্রপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সঞ্জিত চন্দ্র দাসের ঘরের তালা ভেঙ্গে ওষুধ, সার, কীটনাশক চুরির ঘটনায় সালিশী সভায় উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হওয়ায় চিহ্নিতদেরকে জরিমানা করা হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা সালিশের রায় তামিল না করে উল্টো অভিযোগকারীদের প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তাছাড়া নোয়াপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আওয়াল মিয়া, মুজিবুর রহমান, চন্দ্রপুরের দুলাল মিয়া, খারঘরের মফিজ মিয়াসহ অনেকেরই গরু চুরি হয়েছে। আরো অনেকের পানি সেচের মোটর, ফ্যান, স্বর্ণালঙ্কার, গৃহস্থালির ব্যবহার্য সামগ্রীও চুরি হয়েছে। গত দেড় বছরে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল চুরি হয়েছে সাধারণ মানুষের। তাদের এহেন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ২২ জুলাই নোয়াপাড়া গ্রামের ফোরকানিয়া মাদ্রাসা মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে গ্রামের সচেতন মহল এবং ক্ষতিগ্রস্থরা। সেদিনই গ্রামের মৃত হোসেন মিয়ার পুত্র মো. শিবলু মিয়া ও মো. আমজাদ হোসেনের পুত্র মো. আরাফাত মিয়াকে হাতেনাতে ধরে কসবা থানা পুলিশে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। বর্তমানে তারা জেলা কারাগারে অন্তরীণ। তাদের এবং তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে কসবা থানায় দু’টি সাধারণ ডায়রি (জিডি) এবং তিনটি চুরির মামলা বিদ্যমান।

এরই প্রেক্ষিতে গত ২৪ জুলাই একই স্থানে ৬ নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ আলী আজ্জম মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাবেক মেম্বার মো. হারিজ মিয়ার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন মো. মমিনুল ইসলাম খান, মো. আবুল কালাম চৌধুরী, শেখ মো. আমিনুল হক, মো. মিজানুর রাহমান, নাসির সরকার, বিজিবি ফেরদৌস, মো. ইসহাক মিয়া, মো. নায়েছ মিয়া, ইদন মিয়া, মানজু মিয়া, মজিবুর রহমান প্রমুখ। বক্তাগণ এলাকায় চোরের উপদ্রব, মাদক সমস্যা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মতামত ব্যক্ত করেন এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানান। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৫ আগস্ট এলাকাবাসীর পক্ষে ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আবদুল মোত্তালিব, সাবেক মেম্বার মো. আলী আজ্জমসহ পাঁচজন মিলে পুলিশ সুপার বরাবর ‘চোর, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীদের কবল থেকে সাধারণ মানুষদের রক্ষার আবেদন’ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

কসবা থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর ভুইয়া বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘চিহ্নিত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বিষয়টি পুলিশের নজরদারিতে আছে।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

August 2021
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
আরও পড়ুন