১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সেলুনভিত্তিক পাঠাগার নির্মাণ করছে একজন বইপ্রেমী হারুন রশীদ

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১২:১১ পূর্বাহ্ণ , ২৭ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

মো.তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সত্যিকারের বই প্রেমী এখন খুবই কম। এখন ডিজিটাল যুগ। এই যুগে মানুষের নানারকম পণ্যসামগ্রীর দিকেই নজর। কেউ ফ্যাশনে, কেউ তথ্যপ্রযুক্তির পণ্যতে, কেউ খেলাধুলার সামগ্রীতে। কেউবা আবার গানবাজনার সামগ্রীতে আগ্রহী। জ্ঞানচর্চার বইয়ের দিকে মানুষের আগ্রহ থাকে কম। তাই শহরের বড়বড় লাইব্রেরি আর ফুটপাতের বইয়ের দোকানে ক্রেতার ভিড় কম থাকে। ভিড় বেশি থাকে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দোকানে। বই প্রেমীদের বইয়ের প্রতি প্রেম-ভালবাসা বেড়ে যায় তখন, যখন ভাষা দিবসের আগমন ঘটে। তখন দেখা যায় ঢাকার বাংলা একাডেমীর সামনে বইমেলায় মানুষের উপচেপড়া ভিড়। বই কিনুক আর না কিনুক, প্রতিদিন বিকালবেলায় বইমেলায় যাবেই যাবে। একুশে বইমেলায় এসব হাজার মানুষের ভিড় থাকে শুধু ঢাকায় বসবাস কারীদের। সত্যিকারের বই প্রেমী আসে শহরের বাইর থেকে। যাই হোক বলছিলাম বইপ্রেমী একজন হারুন রশীদ তিনি ১৯৮৩ সালের ১০ আগস্ট কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলায় গোবরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আসাদুল্লাহ ও মাতার সুফিয়া আক্তারে’র সন্তান।এ বইপ্রেমী মানুষটি গত দশ বছর ধরে অফলাইন ও অনলাইনে কাজ করে যাচ্ছেন।
মানুষের হাতে বই তুলে দিতে হারুন অর রশীদ উদ্যোগ নিলেন সেলুনভিত্তিক পাঠাগার নির্মাণের। এবং সফলও হলেন তাতে। ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় কলাকোপা বাজারের সুব্রত হেয়ার কাটিং সেলুনে উদ্বোধন করলেন সেলুনভিত্তিক ব্যতিক্রমী এক পাঠাগার। উদ্দ্যেশ্য চুল কাটতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে অলস সময়ের ফাঁকে বই হাতে তুলে দেয়া। মূলত সমাজের একটি অংশকে বইমুখী করাই হচ্ছে তার উদ্যোগের মূল উদ্যেশ্য। ‘বই হোক নিত্যসঙ্গী’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে অফলাইনে বইয়ের প্রচারে এ উদ্যোগের সাথে থাকতে চাইলে যে কেউ শামিল হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রচন্ড ভিড়, সময় কাটছে না। ঘুরে আসতে গেলে আবার সিরিয়ালটা নাও থাকতে পারে। সেলুনে চুল-দাড়ি কাটতে গিয়ে প্রচন্ড ভিড়ে বসে না থেকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে অভিনব কার্যক্রম শুরু করতে বা সেলুনভিওিক পাঠাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন বই প্রেমী একজন মানুষ হারুন অর রশীদ।দিন দিন গণগ্রন্থাগারের পাঠক কমছে। বইপড়ার পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ না থাকায় আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বইপড়া কর্মসূচি গ্রহণ করি, যেন পাঠক গ্রন্থাগারে না গিয়ে ঘরে বসেই বই পড়ার সুযোগ পান। তাদের কর্মসূচির মধ্যে ‘পলান সরকার বইপড়া আন্দোলন’ অন্যতম। হারুন রশীদ বইয়ে’র ফেরিওয়ালা। এদিকে জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে, অফলাইনে বই নিয়ে কাজ করে আসছেন বইয়ের এ ফেরিওয়ালা। গতবছর করোনা লকডাউনেও তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই পৌঁছে দিয়েছেন, যা অনেকের মানসিক প্রশান্তিতে ভূমিকা রেখেছিল।এ বইপ্রেমী মানুষটির উদ্যোগে,দেশের আনাচে-কানাচে যেখানেই সুযোগ সৃষ্টি হবে, সেখানেই ধাপে ধাপে নির্মিত হবে এ ব্যতিক্রমী পাঠাগার। প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশের বিখ্যাত লেখকদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় কিছু লেখকের বইও স্থান পেয়েছে সেলুন পাঠাগারটিতে।
নিরলস ভাবে,বই নিয়ে নিত্য নতুন এসব উদ্যোগ এবং ইন্টারনেটে ঝুঁকে যাওয়া প্রজন্মকে বইমুখী করার এ কাজকে স্বীকৃতি জানিয়ে কিছুদিন আগেই আফ্রিকা এশিয়া ইউথ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তিনি বাংলাদেশের বেস্ট সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এযুগের বইপ্রেমী একজন মানুষ হারুন রশীদ
বই নিয়ে তার স্বপ্ন কি এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বিনাবাক্যে জানান, আমরণ তিনি বইয়ের কথা ছড়িয়ে দিতে চান গ্রাম থেকে শহরে এবং লোকান্তরে৷ তিনি গত দশ বছর ধরে কাজ করছেন অফলাইন এবং অনলাইনে।
এর জন্য সবার সহাযোগিতা কামনা করছি। এ সময় তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন,যে কেউ এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। অর্থ বা বই দিয়ে পাশে থাকতে পারেন।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন