সরাইলে লক্কড়- ঝক্কড় ট্রাক্টর চলাচলে বেপরোয়া।।
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ , ৩ মার্চ ২০২১, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধি: ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরাইলে ট্রাক্টরগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে অকালে ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। কাউকে আবার সারা জীবনের মত বরণ করতে হচ্ছে পঙ্গুত্ব।
অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গতির ট্রক্টর প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত অবাধে বিচরণ করছে। কিন্তু চোখের সামনে অবৈধ এই যানের অবাধ চলাচল দেখেও অদৃশ্য কারণে কার্যকর তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ব্রাক্ষণবাড়িয়া সরাইলে রুট পারমিট ছাড়াই প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে অনুমোদনহীন শত শত ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে অতিষ্ঠ জনসাধারণ। বিশাল চাকার ট্রাক্টরগুলো নিয়ম বহির্ভূত চলাচলের কারণে যে কোনো সময় কেড়ে নিতে পারে জীবন্ত প্রাণ। এ পর্যন্ত ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অনেক স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়,কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ সড়কগুলো ক্ষত বিক্ষত হয়ে খানা-খন্দে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সর্বত্র পরিবেশ দূষণ ঘটছে, রাস্তার পাশের বাড়ী ঘর ধুলোয় ধুসর ব্যহত হচ্ছে জীবন যাত্রা। গ্রাম অঞ্চলের আশপাশের বাসিন্দাদের অনেকটাই জিম্মি করে বালু ব্যবসায়ী ও ইট ভাটা মালিকরা অবাধে বহনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এমনি অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসীন্দারা।এদিকে অনভিজ্ঞ চালক লক্কড় ঝক্কড় যান দিয়ে বালু ও মাটি বহন করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ধুলাবালির কারণে সড়কে হেঁটে চলাচলকারী জনসাধারণ এবং স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন প্রশাসনকে অবৈধ এ যানবাহন চলাচলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দাবি জানালে কোনো কিছু হচ্ছে না। এলাকাবাসী সুএে জানা গেছে, কৃষি জমি চাষাবাদে গরুর লাঙ্গলের বিকল্প হিসেবেন প্রায় তিন দশক পূর্বে সারা দেশের ন্যায় সরাইলে আবির্ভাব ঘটে ট্রাক্টর নামক যান্ত্রিক লাঙ্গলের। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে চাহিদা মেটাতে ট্রাকের চেয়ে ট্রাক্টরের ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় তার সংখ্যাটা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক তখনি তা জনসাধারণের কাছে এক অজানা ভয়ে রূপান্তর হয়। রসুলপুরের মানিক জানান,অদক্ষ চালক ও বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ট্রাক্টরগুলো সড়কে চলাচলের ফলে প্রায়ই নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। বেপরোয়া গতির এসব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে বিগত কয়েক বছরে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান ইট ভাটাগুলো পুরোদমে উৎপাদনে আসার ফলে ট্রাক্টরগুলোর চাহিদা বছরের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন অত্যাধিক। আর সে সুযোগেই তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এখানকার প্রায় সমস্ত সড়ক গুলোতে। ঢাকা- সিলেট মহাসড়কসহ।চালকের নেই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং কিছু চালকের বয়সও খুব কম।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা,ট্রাক্টর চলাচলে সৃষ্ট ধুলাবলির কারণে চরম অসুবিধায় চলা ফেরা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে খোলা অবস্থায় বালু বহনের ফলে চোখ নষ্টের ভয় থেকেই যাচ্ছে বলেও জানান তারা।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি গাজী মোঃ সাহাওয়াত হোসেন বলেন,কিছুদিন হয়েছেএ থানায় আমি যোগদান করেছি এর মধ্যেই অনেক ট্রাক্টরেকে জরিমানা করেছি। এরপরও যদি অবৈধ কোন যানবাহন হাইওয়ে রাস্তায় বা আঞ্চলিক সড়কে আসে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করছে।
সরাইল থানা অফিসার ইনচার্জ এ এম এম নাজমুল আহমেদ বলেন,অবৈধ ভাবে চলাচলকারী ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল হক মৃদুল জানান,অবৈধ ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে।দ্রুত এ যানবাহনটির বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে তিনি বলেন, জরুরী কাজে গাড়ি কোন মাল বহন করতে হয় তাহলে রাত হতে সকাল সাতটা পর্যন্ত অন্যান্য সময় রাস্তায় আসলে এইসবের বিরুদ্ধে আইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন