১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে দর্শনার্থী ও দালালী ছদ্মবেশে চলছে ছিনতাই।।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১১:২৪ অপরাহ্ণ , ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

মো.আজহার উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার,বাড়ি অথবা রাস্তায় পিস্তল ঠেকিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু এবার একেবারে অভিনব কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটল হাসপাতালে। হাসপাতালের দালাল ও দর্শনার্থী পরিচয় দিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের ভিতর।

অভিযোগ, হাসপাতালে দর্শনার্থী ও দালাল পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভিতর ঢুকে রোগীকে সেবা দেওয়ার কথা বলে সহজসরল রোগীদের মোবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে তারা।
বৃহস্পতিবার(১৮ ফেব্রুয়ারী) রাতে সদর হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নার্স ও রোগীদের তথ্যসূত্রে নিশ্চিত হয়।
সুন্দর দেহের ঘটন ও সুশীল পোশাকের অধিকারি দর্শনার্থী ও দালালরা। হাসপাতালে এসেই বেছে বেছে তারা টার্গেট করছে অসহায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডগুলি। ওয়ার্ডের ভিতর ঢুকে তারপর চলছে কড়া গলায় ছিনতাইয়ের ছদ্মবেশে উপকারের অভিনব কৌশল। কারোর কাছে মোবাইল রয়েছে দেখতে পেলে চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে বলা হচ্ছে, কারোর গলায় সোনার চেইন দেখতে পেলে সঙ্গে সঙ্গে কড়া ধমক, ওয়ার্ডের ভিতর এসব পরেন কেন? তারপরই রোগীদের কাছ থেকে তাঁদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, গয়না-টাকা হাসপাতাল ওয়ার্ডে জমা দেওয়া নামে চেয়ে নিচ্ছে ছিনতাইবাজরা।

ব্যস, হাতে মোবাইল, গয়নাগাটি চলে আসতেই ছিনতাইবাজদের উদ্দেশ্য সফল। কার্যসিদ্ধি হতেই সোজা জিনিসপত্র নিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে চম্পট। সবাইকে ধোঁকা দিয়ে রীতিমতো হেঁটেই হাসপাতাল থেকে গা-ঢাকা দিয়ে চলে যাচ্ছে তারা। এভাবেই চলছিল প্রতিদিনের কারবার। ইমার্জেন্সি থেকে ওয়ার্ড এর ভিতরেই চলে তাদের আধিপত্য। ট্রলিতে করে রোগীকে তারাই নিয়ে যায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে, সেবা দেওয়ার মিথ্যে কৌশল ব্যবহার করে চলছে ছিনতাই।

হাসপাতালে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা নেই বলে দর্শনার্থী ও দালালী পরিচয়ে ছিনতাইকারীদের দখলে অসহায় ও হতদরিদ্র রোগীরা। এসব দর্শনার্থী ও দালালদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বিপদে পড়ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকসহ নার্স ও চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারীরা।

চিকিৎসকরা জানান, একজন রোগী তার সাথে ৫-১০জন দর্শনার্থী নিয়ে আসেন হাসপাতালে। কিভাবে চিনবো কে আত্নীয়? কে ছিনতাইকারী। রোগীর আত্নীয় কিনা বুঝা বড় কঠিন। যারা আসছে অথবা দালালরাই করছে ছিনতাই।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, দালালকে চিহ্নিত করা সম্ভব। কিন্তু রোগীর সাথে আসা দর্শনার্থীরা ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত কিনা চিহ্নিত করা খুব কঠিন। চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা সেবা দিবে নাকি ছিনতাইকারীকে ধরবে। এখানে রোগীদের অসচেতনতার কারনে ছিনতাইকারী দৌড়াত্ব বেড়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে হাসপাতালের সামনের পুলিশ বক্সটি চালু হবে। তখন হয়তো পুলিশী সহযোগিতায় হাসপাতালে দর্শনার্থী ও দালালের আগমন কিছুটা হলেও রোধ করা যাবে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইদানীং ছিনতাই বেড়েছে, তাই আমাদের অভিযানও বেড়েছে। হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ ছিনতাইয়ের বিষয়ে আমাদের অবগত করলে অবশ্যই আইনী সহযোগিতা দেওয়া হবে। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে সামনে পুলিশ থাকে। যেকোন সমস্যা নিয়ে আমাদের জানানো উচিত।

উল্লেখ্য যে, গতকাল দুপুরের হাসপাতালের কেবিন ওয়ার্ডের আয়া কুলসুম আরা ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। লিফট থেকে ৫জন নারী ছিনতাইকারী মোবাইল, গহনা ও টাকা নিয়ে যায়। এদিকে গতকাল আশুগঞ্জ উপজেলার খোলাপাড়ার বাবু নামের এক ব্যক্তি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীকে উপকার করতে এসে ২ দর্শনার্থী রোগীর কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। হাসপাতালে সিসিটিভি থাকলে ছিনতাইকারীদের ধরা যাচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন