সরাইল অরুয়াইল বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ব্যবসায়ী’কে মারধরের অভিযোগ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১০:১৭ অপরাহ্ণ , ১৬ জানুয়ারি ২০২১, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া)ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে দোকানে জোরপূর্বক তালা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর অরুয়াইল বাজার এলাকায় হাইস্কুল মার্কেটে এ ঘটনা ঘটেছে।
ব্যবসায়ী জুনাইদ মিয়া অরুয়াইল বাজারের ‘জুনাইদ রেফ্রিজারেটর এন্ড ইলেকট্রনিক’-এর স্বত্বাধিকারী এবং সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূঁইশ্বর গ্রামের মো আতিকুল রহমানে’র ছেলে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী জুনায়েদসহ তার ভগ্নিপতিও দোকানের ম্যানেজারও আহত হয়েছেন। তারা সকলেই সরাইল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসাধীন আহত ব্যবসায়ী জুনাইদ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিগত ২১ বছর যাবত অরুয়াইল বাজারে ব্যবসা করে আসছি। অরুয়াইল বাজার এলাকায় একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক বোরহান উদ্দিন, নোয়াব মিয়া, মাসুক মেম্বার ও রফিক মেম্বার। তারা আবার বাজার এলাকায় সরকারি মূল্যবান খাস জমিরও অবৈধ দখলদার। তারা অরুয়াইল এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। তাদের অত্যাচারে অরুয়াইল বাজারের অসংখ্য ব্যবসায়ী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জুনাইদ মিয়া বলেন, আমি অরুয়াইল হাইস্কুল মার্কেটের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে বিগত ৬ বছর যাবত ফ্রিজের ব্যবসা করে আসছি। দোকানের মালিক পরিমল মল্লিক কয়েকমাস আগে এ দোকান বিক্রির প্রস্তাব দিলে গত ৩/৪মাস আগে আমি ৮লক্ষ টাকায় এ দোকানের পজিশন কিনে নেয় এবং সমস্ত টাকা-পয়সা বুঝে পেয়ে পরিমল মল্লিক এ দোকানের পজিশন দখল আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমার নামে লিখে দেন তিনি।জুনাইদ আরও বলেন, এই খবর পেয়ে যুবলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন একদিন আমার দোকানে এসে বলেন, ‘পরিমল মল্লিক মাত্র ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে এই দোকান হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে পজিশন লীজ নিয়েছিল; এখন সে (পরিমল মল্লিক) এই দোকান ৮ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছে। ৫লক্ষ টাকা আমরা নিব; আমরা এখানে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ করি! এই টাকা আমাদের দিতে হবে। এতে অস্বীকৃতি জানালে পরবর্তীতে বোরহান, আবু তালেব, নোয়াব মিয়া, মাসুক মেম্বার, রফিক মেম্বার ও গোপাল ঘোষ সহ কয়েকজন আমাকে বাজার ছাড়া করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে তারা পরিমল মল্লিককে তাদের দলে নিয়ে দোকান বিক্রি অস্বীকার করেন। তখন আমি কিছুদিন আগে আদালতে মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা অরুয়াইল বাজারে আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব মিয়ার অফিসে গোপন মিটিং করে এসে আমার দোকানে হামলা চালায়। এসময় আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব মিয়ার নির্দেশে যুবলীগ নেতা বোরহান, নোয়াব মিয়া, মাসুক মেম্বার, রফিক মেম্বার সহ কয়েকজন আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। তখন আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে দোকানের ম্যানেজার সহ আমার ভগ্নিপতিকে মারতে থাকে এই সন্ত্রাসীরা।
ব্যবসায়ী জুনাইদ আরও বলেন, তারা আমার দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করে দোকানে থাকা অন্তত ১০ লক্ষ টাকা লুটে নেন। দোকানের কিছু মালামালও ভাংচুর করে। পরে আমাদেরকে দোকানের বাইরে এনে তারা মারপিট করতে থাকে এবং জোরপূর্বক দোকানে তালা লাগিয়ে দেন। খবর পেয়ে অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এগিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে প্রথমে ফাঁড়িতে নিয়ে যান এবং পরে পুলিশ প্রহরায় আমাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।
অরুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক বোরহান উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, জুনাইদ ভাড়াটিয়া আর পরিমল মল্লিক দোকানের মালিক। জুনাইদ দোকান ছাড়ছিল না, উল্টো এখন দোকানের মালিক দাবি করছে সে (জুনাইদ); পরিমল মল্লিক আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমাদের দলীয় পরিচয়ের বাইরেও অরুয়াইল বাজার পরিচালনা কমিটিতে আমরা নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব মিয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। আজ (শুক্রবার) তাঁর অফিসে মিটিং করে সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুনাইদের দোকান তালা দেয়া হয়েছে। সেখানে মারধর ও লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সামান্য টানাহেঁচড়া হয়েছে। এরআগে মিটিং-এ অরুয়াইল ইউপির চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। এই দুই চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে একমত হওয়ায় আবু তালেব মিয়ার নেতৃত্বে আমরা হাইস্কুল মার্কেটে গিয়ে জুনাইদকে বের করে সেই দোকান তালা দিয়েছি; আমরা পরিমল মল্লিককে সহযোগিতা করছি।
এ ব্যাপারে অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অরুয়াইল বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু তালেব মিয়ার বলেন,জুনাইদ দোকান ছাড়ছিল না, দোকানের মালিক দাবি করছে জুনাইদ। আমিসহ বাজার কমিটির সবাই মিলে পরিমল মল্লিককে সহযোগিতা করতে দোকানে তালা দিয়েছি। মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি তিনি বলেন, দোকানে তালা দিয়ে চেয়ারম্যানসহ চাবি অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়িতে জমা দিয়েছি।
অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবু ইউসুফ সাংবাদিকদের জানান, ‘পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই সেই হাইস্কুল মার্কেট। সন্ধ্যার পর হঠাৎ মার্কেটের একটি দোকানের সামনে মানুষের জটলা, সুর চিৎকারও শুনা যাচ্ছে। এগিয়ে যেতেই দেখি একজনকে কয়েকজন মিলে মারধোর করছে, আর দোকানে তালা লাগাচ্ছে। সেখানে আবু তালেব মিয়া ও বোরহান উদ্দিন সহ স্থানীয় কয়েকজন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মারধরের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে লোকটিকে ওরা মেরেই ফেলবে; তাই দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসি এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করি।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ এ এম এম নাজমুল আহমেদ বলেন, অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। আহত ব্যবসায়ী সহ অন্যরা হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছি; ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অবগত হয়েছেন। আর ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ এলেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
এদিকে আজ সকালে সরাইল- সার্কেল এর সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আনিছুর রহমান অরুয়াইল বাজারের ঘটনা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন,গতকাল একটি অকাঙ
আপনার মন্তব্য লিখুন