১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

প্রতিবন্ধী প্রসূতির ছেলে শিশু জন্ম, অভিভাবক হয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন নার্সরা।।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১১:১২ অপরাহ্ণ , ২৯ ডিসেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

মো.আজহার উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাথী আক্তার(১৯) নামের এক প্রতিবন্ধী প্রসূতিকে জেলা সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করার পর ছেলে শিশু প্রসব হয়েছে।

ওই মহিলার আত্নীয়-স্বজন নেই বলে, হাসপাতালের নার্সরা অভিভাবক হয়ে প্রসূতি ও নবজাতককে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার(২৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান প্রসব করেন ডা. জিনান রেজা ও ডা.শারমীন হক দীপ্তি। বর্তমানে মা ও নবজাতকসহ দুইজনই সুস্থ আছেন।

ওই প্রতিবন্ধী প্রসূতির জন্মগত ভাবে দুইটি পা বিকলাঙ্গ ছিল, সে শহরের বিভিন্ন যায়গার মানুষের সাহায্য নিয়ে চলতেন।

বর্তমানে হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা পাচ্ছেন সাথী ও নবজাতক ছেলেটি।

গাইনী বিভাগের ইনচার্জ সুবিতা রানী দাস ও কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স স্মৃতি রানী রায় জানান, গত ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে কলোনির শামসুন্নাহার নামের এক মহিলা প্রতিবন্ধী প্রসূতিকে হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করেন। ভর্তি করানোর পর প্রসূতি মাকে ১হাজার টাকা দিয়ে ওই মহিলা চলে যাওয়ার পর থেকে সাথীর পাশে আর কেউ ছিল না। ওই মহিলার পাশে কেউ না থাকলেও হাসপাতালের আমাদের নার্সরা অভিভাবক হয়ে চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব নেন। আজকে সকালে সিজারের মাধ্যমে একটি ফুটফুটে ছেলে শিশু প্রসব হয়। প্রসবের পর নবজাতক ছেলে ও প্রসূতি মাকে হাসপাতালের কনসালট্যান্টদের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওই মহিলাকে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ওষুধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করছেন “ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র বাতিঘর” নামের একটি সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের অঙ্গ-সংগঠন ‘ব্লাড ডোনার অব বাতিঘর’ এর পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম ও মো. আব্দুর রহমানসহ অন্যান্য সদস্যরাও।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন জানান, ওই প্রতিবন্ধী প্রসূতির একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়েছে। মা ও শিশু দুইজনই সুস্থ আছেন৷ হাসপাতাল থেকে সকল প্রকার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের নার্স ও স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা ওই মহিলার খাবার থেকে শুরু করে যখন যা প্রয়োজন হচ্ছে তা ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। গাইনী কনসালট্যান্ট ও শিশু কনসালট্যান্টের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সাথীসহ নবজাতকের ছেলের শিশুর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, গত দেড়বছর আগে আখাউড়া উপজেলার শান্তিপুরের হাসেম মিয়ার ছেলে বাছির মিয়া নামের এক প্রতিবন্ধীর সাথে সাথীর বিয়ে হয়। সাথীর পেটে যখন বাচ্চা আসে তখন কাদির মিয়া স্ত্রীর কোন খোঁজখবর রাখেনি। এ কষ্ট সহ্য না করতে পেরে সাথী মৌড়াইল রেলওয়ে কলোনির শামসুন্নাহার নামের মহিলার বাসায় ভাড়া থাকতে শুরু করেন, এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন যায়গার মানুষের সহযোগিতায় চলতেন। জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে আজকে প্রতিবন্ধী সাথীবএকটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

December 2020
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
আরও পড়ুন