১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে নদী ভাঙন:চোখের সামনে বিলীন ঘর-বাড়ি-! আমরা ঘুমামু কই-??

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১০:১৯ অপরাহ্ণ , ১৫ নভেম্বর ২০২০, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধিঃ প্রথমে সত্য বাণী দিয়ে শুরু করা যাক, নদীর এপার ভাংগে ওপার গড়ে,এই তু নদীর খেলা সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”আমি দেখে আইলাম বসত ঘর”
আবার যাইয়া দেখিনাই ” তাই বুঝি নদী ভাঙ্গন -??
ছোট্ট শিশু জাহিদ হাত লম্বা করে দেখিয়ে বলে এখানে আমড়ার ঘরছিল এখানে আমি ঘুমাই তাম। নদীভাঙ্গা ঘর নিয়ে গেছে এখন আমরা কই ঘুমামু। ব্রাহ্মণবিড়িয়া সরাইল হাওর এলাকা অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের মধ্যে দিয়া ভয়ে গেছে কান্তা খালের কুড়েঁ গিলে খাচ্ছে এ গ্রামের মানুষের বসত ঘর- বাড়ি। গত ককয়েকদিন আগে সবার চোখের সামনে এ বাড়িটি এখন সাদা একটি টয়লেটে বিলীন হয়ে যায় যায় অবস্হা।কান্তা খালের সাথে যুক্ত মেঘনা- তিতাস নদীর তীব্র স্রোতে কান্তা খালের কুড়েঁর ভাঙ্গনে তীরবর্তী মানুষের শত শত ঘরবাড়ি ও বড় বড় স্থাপনা খালে বিলীন হয়ে গেছে।এর ফলে শতাধিকের বেশি পরিবার অসহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে।সরেজমিনে জানাযায়, ধামাউড়া গ্রামের প্রায় আড়াই শত মানুষের এই গ্রামটিই এখন নদী ভাঙ্গনের কারণে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে বলে স্থানীয় লোকজন বলছেন।গত কয়েক বছর ধরে চলা নদী ভাঙ্গন পুরো গ্রামের মানুষের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করেছে। তারা অভিযোগ করেছেন,বছরের পর বছর নদীর ভাঙ্গন অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কেউ আমাদের খোঁজখবর নেইনা।
স্হানীয় ইসমাইল মিয়া( ৫৯), ফায়জুল ইসলাম, ইব্রাহিম মিয়া ও অহিদসহ অনেকে চোখের পানি ছেড়ে বলেন,এভাবেই কী দিনের পর দিন নদীর বুকে হারিয়ে যাবে ধামাউড়া গ্রাম আর আমাদের বসত ভিটা মাঠি? প্রতিবছর নদী ভাঙন এর কবলে পরে শতশত ঘর বাড়ি বিলিন হয়ে যাচ্ছে।বাপ-দাদার বীটী ভেসে যাচ্ছে নদীতে।এখন টয়লেটের ভাঙার বাকি বলে চোখে টলটলে পানি মোঃ সায়েদ মিয়া(৫০) বলেন, কয়েকদিন আগে সবার চোখের সামনে তিন-চারটি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙ্গন থেকে কিভাবে রক্ষা পাবো কিছু বুঝে আর পায়তেছিনা।সরেজমিনে জানাযায়,গ্রামের মানুষের কান্না ছাড়া আর কোন কিছু করার নেই।তখন তারা খাল থেকে তিনশো মিটার দূরে তাদেরই একটি টয়লেট উঠেছিলেন। সেটিওকে নদীতে চলে যায় যায়। সর্বশেষ তাদের পাকা টয়লেটিও নদীগর্ভে বিলীনের পথে??
অরুয়াইল ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু তালেব বলেন, নদী ভাঙ্গন তাদের কাছে আসলে চোখের পানি রাখা যায় না, এক সময় তাদের ঘর- বাড়ি সবছিল, এখন সব হারিয়ে অরুয়াইল বাজারে বিভিন্ন জায়গা কোন ভাবে বসবাস করছেন। এ থেকে তাদেরকে রক্ষা করে পুনর্বাসন করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃ পক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি। ভাঙ্গন রোধে জরুরি ভাবে কাজ করার দাবি জানাচ্ছি।অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানান, ধামাউড়া গ্রামের নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে অনেক দিন ধরে। এই গ্রামকে নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় একটি বেরিবাদের প্রয়োজন। এখন জরুরি অবস্থায় পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা ঐ এলাকা পরিদর্শন করেছি। উর্দ্ধতন কর্মকর্তা কে ভাঙ্গনের বিষয় জানিয়েছি, নদী জরিপের কাজ চলছে। জরুরী বরাদ্দের জন্য কাগজ পত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু করা যাবে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত ও সহকারী কমিশনার ভৃমি ফারজানা প্রিয়াঙ্কা বলেন, নদীর স্রোতের ধিক পরিবর্তন করাই ভাঙতেছে,তবে ভাঙন এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড যতযত ভাবে খুজ-খবর নিয়ে মানুষের যাতে দুর্ভোগ না হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বাঙ্গা গড়ার খেলাই কেঁদে ষাট বছরের উর্ধ্বে জাহিদ মিয়া নিরব সুরে,নদীরে নিয়ে গেলে সবই দিয়ে গেলা কি?? আমরা এখন কি নিয়ে থাকবো -!!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

November 2020
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
আরও পড়ুন