সরাইলে বিভিন্ন ভাবে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অর্থ !! সর্বস্বান্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ , ৯ নভেম্বর ২০২০, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধিঃ শিক্ষা প্রতিষ্টানের অর্থ আদায় নিয়ে পানিশ্বর ইউপি সদস্য মোঃ সুমন মুন্সী এ প্রতিনিধিকে বলেন,ভাই আমাদের পানিশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করছে। ভাই বিষয়টি আপনার মাধ্যমে সংলিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল অনুযায়ী এই সহায়তা দেয় সরকার।সরকারি স্কেল অনুযায়ী বেতন পান একটি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা।ঈদ উৎসব ভাতা শিক্ষকদের জন্য বেতনের ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীদের জন্য বেতনের ৫০ শতাংশ।পহেলা বৈশাখেও একই পরিমাণে উৎসব ভাতা দেয়া হয়ে থাকে।তাতে প্রধান শিক্ষকের বেতন দাড়ায় ২৯ হাজার টাকা। একজন সাধারণ শিক্ষকের বেতন ১৬ হাজারের মতো। এর বাইরে রয়েছে বাড়িভাড়া হিসেবে এক হাজার টাকা, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা।প্রাণ সংহারী করোনা ভাইরাস দুর্যোগময় সময়েও থেমে নেই সরাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে মাসিক বেতন,পরীক্ষার ফি ও অ্যাসাইনমেন্টের নাম করে।বিভিন্ন উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কিছু সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা যায়,
এসব প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো রকম নিয়ম-নীতি না মেনে মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি ও অ্যাসাইনমেন্ট বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা।বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে ৯০০শ থেকে ১২০০শ জন ছাত্র/ছাত্রী রয়েছে বলে জানা যায়।জন প্রতি নয়শ পঞ্চাশ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে এগারোশ টাকা পর্যন্ত পরীক্ষার ফি ও অ্যাসাইনমেন্টের নামে করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। প্রায় ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক কর্ম চারীদের বেতন-ভাতা বাবদ যে অর্থ সরকার দিয়ে থাকে তাকে ইংরেজিতে বলা হয় মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার বা এমপিও।যদিও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেগুলো এমপিওভুক্ত। তবুও কোনো নিয়মনীতি মানতে নারাজ এসব প্রতিষ্ঠান।এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা হতদদরিদ্র। উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পানিশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, চুন্টা এ সি একাডেমী, অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
,কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়,কুট্রাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, শাহজাদাপুর উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা সরেজমিনে গেলে প্রায় প্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র একই রকম দেখা গেছে।সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,’উপর থেকে নির্দেশ আছে তাই নিয়েছি। কোথায় বলা হয়েছে টাকা নেওয়ার জন্যে?সুদুত্তরে তিনি আরো বলেন, জেলার অন্যান্য স্কুলে নিচ্ছে। আমাদের শিক্ষকদের বেতন দেয়ার জন্য আমরা টিউশনি ফি,নেওয়া হচ্ছে।পানিশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হক টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,আমার অফিসে আসেন সামনাসামনি কথা বলি, এক জবাবে তিনি আরো বলেন-টাকা নেয়ার বিষয়ে আমার কাছে না বলে মোমিন ভাই ও অফিস সহকারির সঙ্গে কথা বলেন। চুন্টা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন. ক্লাস টিচাররা বেতন নিচ্ছে, তবে আমরা অন্য কোন ফি নেয়নি।শাহজাদাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবিনাশ চন্দ্র দেবে’র সাথে কথা হলে তিনি, এসব কথা শুনতে রাগ লাগে। আমরা কোন টাকা নেই না।সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা এখনো কোনো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেই না। শিক্ষা অফিস থেকে কোন চিঠি এখনো পাইনি। তবে শিক্ষা অফিসেকে জানিয়েছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি ও অ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা নেয়ার বিষয়ে সরাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালেদ জামিল খান এ প্রতিনিধিকে বলেন-‘টাকা নেয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে কোন প্রজ্ঞাপন বা চিঠি আসেনি।তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে টাকা না নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তবুও আমি যখন জানতে পেরেছি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।এ ব্যাপার সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভৃমি) ফারজানা প্রিয়াঙ্কা বলেন,সরকারি নীতিমালার বাইরে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন