হিংসা- ভয়ানক সংক্রামক ব্যাধি
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ২:১৬ পূর্বাহ্ণ , ৩০ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধিঃ এই জগৎসংসারে যারা হিংসা, বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতায় ভোগে তারা প্রকৃত অর্থে ইবলিশের ঘৃণ্য পথকেই অনুসরণ করে। নিজেকে মুমিন হিসেবে ভাবতে হলে ঈর্ষার অন্ধকারাছন্ন কুঠরি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানবজাতির আদি ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাব পৃথিবীতে প্রথম পাপের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল ঈর্ষাকে কেন্দ্র করে। হজরত আদম (আ.)-এর পুত্র ছিলেন হাবিল ও কাবিল। কাবিল তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে পরশ্রীকারতায় ভুগে। হিংসা নিয়ে ইসলাম থেকে আমরা জানতে পারি, ঈর্ষাপরশ্রী কাতরতা হলো ইবলিশের ভূষণ। ইবলিশ ছিল ফেরেশতা। দুনিয়ার প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)-এর প্রতি আল্লাহর রহমত দেখে সে ঈর্ষায় ভোগে। আদম (আ.)-কে আল্লাহ যে মর্যাদা দেন সে তা মেনে নিতে অস্বীকার করে। এ অস্বীকৃতি ইবলিশকে বিপথগামী করে। সে অভিশপ্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়।
হাদিস খুঁজে পাওয়া যায়,আল্লাহর রাসূল আমাদের হিংসা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘আগুন যেমন শুকনা কাঠকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়, হিংসা তেমন পুণ্যকে ধ্বংস করে দেয়।’ (ইবনে মাজাহ)
সম্পর্ক কখনো দুরত্বের কারণে শেষ হয় না,সম্পর্ক শেষ হয় অসম্মান, স্বার্থপরতা” বিশ্বাস ঘাতকতা”আর অহংকারের মাধ্যমে ” হিংসুকের জীবন কখনই সুখের হয় না। কেননা সে সবসময় সকল জিনিসের অধিকারী হতে চায়। তার সর্বদা এই চেষ্টাই থাকে যে, অন্যের কাছে যা আছে তারচেয়ে তার জিনিসটা ভাল হওয়া চাই। আর এই হিংসুক ব্যক্তিই সমাজের অন্যান্য সন্মানিত ব্যক্তিদের ব্যক্তিত্বকে হেয় করার চেষ্টা করে। কেননা তার দৃষ্টিতে সে একাই সমাজে সন্মানিত ব্যক্তি, বাকিরা সবাই তার চেয়ে নগন্য। এই কারণে বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তির পরিণাম সম্পর্কে আপনারা একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন যে, তারা না স্রষ্টার দৃষ্টিতে ভাল আর না সৃষ্টির দৃষ্টিতে। হিংসুককে কেউ ভাল দৃষ্টিতে দেখে না, সবার মাঝে তার প্রতি একটা খারাপ ধারনা জন্ম নেয়। সমাজে অন্য সবার সাথে বসবাস করলেও মানুষের মনে কোন স্থান তার নেই। কোরআন ও হাদীসে হিংসা এবং হিংসুককে কঠিণ ভাবে নিন্দা করা হয়েছে। হিংসা-বিদ্বেষ একটি ভয়ানক সংক্রামক ব্যাধি। যা সকলে পরিহার করা দরকার?
হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতার অপগুণ বর্জন করতে পারলে মানবসমাজ শান্তির সমাজে পরিণত হবে। মানুষের মধ্যে জন্ম নেবে ভ্রাতৃত্ববোধ। এক মানুষ অপর মানুষকে আপনজন ভাবার ঔদার্যতা অর্জন করবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন