ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুরে পশুরমতো জবাই করে হত্যা- ভাই বোনকে
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৯:১৭ অপরাহ্ণ , ২৬ আগস্ট ২০২০, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
বাঞ্চারামপুর প্রতিনিধি: গত ২৪ শে আগস্ট রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের সলিমাবাদ গ্রামে প্রবাসফেরত কামাল উদ্দিনের বাড়ির খাটের নিচ থেকে কামাল উদ্দিনের দুই সন্তানের গঁলাকাটা মরদেহ উদ্ধার হয়। নিহত শিফা আক্তার বোন (১৪) বাঞ্ছারামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ও কামরুল হাসান ভাই (১০) সলিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিলো। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যেকর অবস্থা।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে মরদেহের ময়না তদন্ত। আপন দুই ভাইবোনকে কেন ! হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছে না পুলিশ।
ঘটনাটি তদন্তের মাধ্যমে হত্যার আসল রহস্য বের করার চেষ্টা করছেন বলে পুলিশের উধ্বতর্ণ কর্মকর্তারা জানান।
পুলিশ শিখরীই এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারবে বলেও সাংবাদিকদের জানান, বাঞ্চারামপুর থানা পুলিশ।
স্থানীয় আশেপাশের দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট বাড়িটিতে প্রবাস ফেরত কামাল উদ্দিন, তার স্ত্রী, দুই কন্যা ও পুত্র ছাড়া আর কেউই থাকতো না। গত ১০ ফেব্রুয়ারি কামাল দেশে আসেন। বেশ কিছু দিন ধরে কামালের শ্যালক বাদল মিয়া অবস্থান করছিলেন ভগ্নিপতির বাড়িতে। বাদলের বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার খাদেরপুর গ্রামে। সেখানকার একটি মারামারির মামলায় আসামী হওয়ার পর থেকেই বোনের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তাদের মামা বাদল। তাছাড়া বিদেশ যাওয়ার জন্য বোনদের কাছ থেকে ১৪/১৫ লাখ টাকা ধার নেয় বাদল। এরপর কিছুদিন বিদেশে ছিল। পুনরায় বিদেশে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে এমন আশ্বাস দিয়েই বোনদের কাছ থেকে টাকা কর্জ নেয়। সম্প্রতি লকডাউনের কারণে বিদেশ থেকে চলে আসার পর তার বোনেরা জানতে চাইলে সে, জানায় আবার বিদেশ চলে যাবে। সেখানে ঝামেলা হয়েছে তাই দেশে এসে পড়েছেন তিনি।
পরবর্তীতে ধার-দেনা মিটিয়ে দেবে। তার নিকট এক আত্মীয় মোঃ আসিফ এসব তথ্য জানায়।
জানাযায়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করা হয় শিফা ও কামরুলকে। হত্যা নিশ্চিত করতেই এমনটি করা হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আঘাতের বেশকিছু চিহ্ন। ঘটনার পর থেকেই লাপাত্তা নিহতদের মামা বাদল মিয়া।
শিশু কামরুল হাসানের মরদেহ যে কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সে কক্ষটিতেই অবস্থান করতো তার মামা বাদল। সোমবার সন্ধ্যের পর প্রতিবেশীরা শুনেছে উচ্চস্বরে ডেকসেট বাজানোর শব্দ। জোড়া খুনের ঘটনায় কতজন অংশ নিয়েছে তা পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে পেশাদার খুনীদের সহায়তায় নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘঠিত হতে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছে।
থানা পুলিশ জানিয়েছেন, যেহেতু এই বাড়িতে মামা এবং শিশুদের পরিবারের সদস্যরা থাকতো, তারাই জানতে পারে ঘটনার মূল রহস্য। ঘরের লোকজনই এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত।এ পর্যন্ত ৩/৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে হত্যার মোটিভ সমন্ধে ওয়াকেবাহল হয়েছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত চাঞ্চল্যকর এই দুই হত্যার ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। থানায় মামলাও হয়নি। জেলা পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা পিবিআইসহ সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থাগুলো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অনীহা প্রকাশ করছে পুলিশ। নিহতদের পিতা-মাতা এখন থানায় রয়েছেন বলে বাঞ্চারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান ।
আপনার মন্তব্য লিখুন