সরাইলে দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে সরাইলের প্রধান খাল!
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ , ২৩ আগস্ট ২০২০, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধি /সরাইল উপজেলায় সদরে প্রায় ৩০ হাজার লোকের বসবাস।এই সরাইলে অনেক খাল রয়েছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খালের বেহাল দশা।কতিপয় দখল-দূষণে অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে সেই ঐতিহ্যবাহী খাল।
সরাইল উপজেলার উপর দিয়ে প্রবেশ মুখে বয়ে চলা খালগুলো অবৈধ দখল-দুষনে প্রায় অস্তিত্ব বিলীন হয়ে পড়েছে। উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা খালগুলোর মধ্যে উপজেলার গুরু বাজার থেকে সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ নিজ সরাইল থেকে সরাইল-আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প খালের, বনীকপাড়া বড্ডা পাড়া তেরকান্দা ,বিকাল বাজারের পার্শ্ব দিয়ে সৈয়দ টুলা খাল।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বেশকিছু কারখানা মিষ্টির দোকান সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর তরল বিষাক্ত দূষিত বর্জ্য ফেলে দখল ও ভরাট এর কারণে খালগুলো পরিণত হয়েছে নালায়। বয়লার, শিল্প কারখানার দূষিত বর্জ্যরে দূর্গন্ধে খালপাড়ের মানুষগুলোর জীবন হয়ে উঠেছে অতিষ্ঠ। সরাইল বিশ্বরোড কুট্রাপাড়া সবুজ প্রকল্পের খাল সংস্কার, অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং দূষিত বর্জ্য ফেলা বন্ধের দাবী করেন উপজেলা বাসী।
সরাইল উপজেলা পরিবেশ অধিদফতর, প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।এ ছাড়া আরও কয়েকটি খাল রয়েছে যার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। এক সময় এসব খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করত। এখন একদিকে দখল আরেকদিকে দূষণ। এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় খালের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে দোকান, বাড়িঘর।স্থানীয় সূত্র জানান,সরাইল গরুবাজার বড্ডা পাড়া, সরাইল বিকাল বাজার, রেশীবাড়ির পাশে, হাসপাতালের মোড়ে অন্নদার মোড়ে,মৌলি খাটা বাজারের কয়েকটা প্রভাবশালী ব্যবসায়ীমহলের কারনেই খালের এই মরণদশা। যেমন মিষ্টির দোকান, মুদি দোকান,ঔষধের দোকান,ফলের দোকান সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোর যাবতীয় বর্য এই খালে ফেলা হয়।তাই পরিবেশ দূষণ ও মানুষের দুর্ভোগ দিনদিন বেড়েই চলছে।তবে তারা বলছেন আমরা আশাবাদী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
উল্লেখ্য সরাইল মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় সরকারি খাল দখলের বিরুদ্ধে ও খাল উদ্ধার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করতে সভাকে অভিহিত করেন। এদিকে (সরাইল- নাসিরনগর ) সড়কের পশ্চিম পাশে সরাইল গরু বাজার সংলগ্ন খাল দখল করায় বৃষ্টি হলেই তিন- চারটি গ্রাম পানি তলিয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়ে হাজার- হাজার মানুষ। সরেজমিনে গেলে জানাযায়, বড্ডাপাড়া গরুবাজার এলাকা থেকে সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুর্ব পর্যন্ত সামান্য অংশে প্রভাবশালীরা খালের মাঝখানে কালবাট বা পাইপ দিয়ে কমপক্ষে ২/৩ জায়গায় মাঠি ভরাট করার ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করার ফলে ঐ এলাকার সড়কসহ বাড়ি-ঘরে পানি উঠে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। পথচারী ও বসবাস রত এলাকার মানুষ পড়ছে দুর্ভোগে।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বড্ডা পাড়া, বড়দেওয়ান পাড়া, বনিক পাড়া ও সরাইল রাহমাতুল্লিল মাদ্রাসাসহ একটু বৃষ্টি হলে পানি তলিয়ে যায়। কিছু দিন আগে আমার ঘরে হাটু পানি ছিল। গরুবাজার থেকে বালিকা বিদ্যালয় মোড় হয়ে নিজ সরাইল খালে গিয়ে পানি চলাচল ছিল। এ খাল দখল করার ফলে পানি নিষ্কাশন একি বারে বন্ধ হয়েগেছে। তাই বর্ষার সময় বৃষ্টি হলে চরম আকারে এলাকায় জলাবদ্বতা দেখা দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর সুব্যবস্থা করতে সুদৃষ্টি কামনা করি।
বড্ডা পাড়া গ্রামের স্হানীয় বাসিন্দা সাবেক কাস্টম কর্মকর্তা আবু তাহের ( আব্দুলাহ) বলেন, বৃষ্টি হলে পানি এ খাল দিয়ে যেতে না পারায় এলাকার মানুষ প্রতিনিয়তো জলাবদ্বতায় পরতে হয়। এ খালে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রসাশনকে আমরা জানিয়েছি। আশা করি এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রসাশন এর সুব্যবস্হা করবে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা এ প্রতিনিধিকে বলেন,সারা দেশে সরকারি জাগা খাল বা নদী ভরাট করে দখল করেছে ঐ স্থাপনার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। আমি এসিল্যান্ডকে বলেছি খাল সরিজমিনে দেখে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য। সরকারের জাগা কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না। অতি দ্রুত এ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন