১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

ত্রাণ চাই না, মেঘনা নদীতে বাঁধ নির্মাণ চাই”

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ২:৫৬ অপরাহ্ণ , ২৪ জুলাই ২০২০, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে


মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধিঃ মেঘনা নদী ভাঙ্গনের কারণে প্রতিবছরই হাজার হাজার মানুষ ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে আসছে। চোখের সামনে হারিয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়িসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।অনেকের ঘর-বাড়ী মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের পানিশ্বর এলাকায় প্রতিবছর বর্ষাকালে মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে তীরবর্তী এলাকার মানুষের একই সময়ে করালগ্রাসী মেঘনায় হারিয়ে যাচ্ছে বার বার বসতবাড়ী। বাসিন্দাদের চোখের সামনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে শাখাইতি গ্রামের চাতালকল এবং পালপাড়া ও সূত্রধরপাড়ার বসতভিটা। সাথে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও পালপাড়া মেঘনায় তলিয়ে গেছে গত কয়েক বছরে। তাই ত্রাণ না দিয়ে যথাযথ নিয়মে গ্রামের পাশে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান মেঘনাপারে বসবাসকারিসহ এলাকার সাধারণ মানুষ

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী বলেন,পানিশ্বর এলাকার প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি,চাতাল কলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে শত শত ঘরবাড়ি মাদ্রাসা, কৃষিজমি, চাতালকল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন কবলিত মানুষ এখন উঁচু স্থানে, সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়েছে। তারা সবকিছু হারিয়ে মানবেতার জীবন যাপন করছে। শ্রমিকদের কর্ম না থাকাই কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।
শাখাইতি গ্রামের সমাজ সেবক হোসেন বলেন, গ্রামবাসী ভাঙনের সঙ্গে লড়ছে। তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা সব সময় ভয় আর আতঙ্কে সময় পার করছে। আমাদের সবকিছু নদী ভাঙ্গনের সাথে চলেগেছে। ভাঙন প্রতিরোধ বা সহায়তার কোনো নমুনাই নেই। তাই সরকারের কাছে রিলিফবা
ত্রাণ চাই না? বেছে থাকার জন্য মেঘনা নদীতে বাঁধ নির্মাণ চাই।
শাখাইতি গ্রামের ইউপি সদস্য (৩ নম্বর ওয়ার্ড) সুমন মুন্সী বলেন, গত কয়েক বছরে নদীভাঙনের শিকার হয়ে অন্তত কয়েক’শ পরিবারের বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। ওই পরিবারগুলো এ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। এখন আবার গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক পরিবার এ গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ এলাকার মানুষ রাতে নিজের বসত ঘরে মাথা গোছানোর জন্য গ্রামের পাশে মেঘনা নদীতে স্থায়ী বাধঁ নির্মাণের দাবী জানাই।
পানিশ্বর ইউনিয়ন পরিষদেরড চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সভাপতি দ্বীন ইসলাম বলেন, এখানে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন দেখা দেয়।গত বছর এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে গ্রামবাসীর চোখের সামনে অনেক চাতাল কল মেঘনা নদীতে সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছে। এ বছর বৃষ্টির প্রথম দিনেই এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রামের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বহু পরিবার এ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। না হলে এক সময় পুরো শাখাইতি ও পালপাড়া গ্রাম দুটি মেঘনা নদীতে হারিয়ে যাবে।এখন গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো সাহায্য চাই না। আমরা চাই গ্রামের পাশে একটি বাঁধ নির্মাণ। চেয়ারম্যান বলেন, গত কয়েক দিন আগে সংসদ সদস্য শিউলি আজাদ পরিদর্শনে এসে বলেছেন মেঘনা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রায় ৮৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে নাকি জমা দিয়েছেন।
কয়েকদিন আগে উপজেলার পানিশ্বর মেঘনা নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ব্রাক্ষণবাড়িয়া ( ৩১২) সংরক্ষিত আসনের এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
ব্রাক্ষণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ- সহকারি প্রকৌশলী গৌতম বিশ্বাস বলেন, কিছু দিন আগে পানিশ্বর ভাঙ্গন পালপাড়া বাজারে ভাঙন রোধের জন্য ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও২২১২ বস্তা বালি ফেলানো হয়েছে। নতুন করে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রায় ৮৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ বলেন, মেঘনা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রায় ৮৬কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। তা অনুমোদন হলে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরোও বলেন, এ এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধ হিসাবে স্হায়ী ভাবে বাঁধ নির্মাণে করলে সমস্যার সমাধান হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

July 2020
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন