১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

করোনা রিপোর্ট নিয়ে চুক্তিতেই ফেঁসে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল ফিরে এসেছে প্রবাসী!!

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৮:২৫ অপরাহ্ণ , ১৬ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥পাবনার রূপপুরের অনুমোদনহীন একটি ক্লিনিকের সাথে করোনা পরীক্ষার চুক্তি করে ফেঁসে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ডাক্তার আবু সাঈদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ঈশ্বরদী থানায়। এছাড়া হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে করোনা রিপোর্ট নিয়ে বিদেশ গিয়ে ফেরত এসেছেন এক ইটালী প্রবাসী। এসব ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার দায় এড়াতে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতাল চেয়ারম্যানের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত হননি। তবে সংবাদ সম্মেলন স্থানের বাইরে সিভিল পোশাকে পুলিশ উপস্থিত ছিল। রূপপুরের মেডিকেয়ার ক্লিনিকের সংগ্রহ করা রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫০ জন কর্মচারী-শ্রমিকের নমুনা পরীক্ষা করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে। কিন্তু সরকারি অনুমোদন ছাড়া অবৈধ উপায়ে নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে মেডিকেয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয় ঈশ্বদীর থানায়। ইতোমধ্যে ক্লিনিকটির মালিক আবদুল ওহাব রানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় ২ নাম্বার আসামী করা হয় ডাক্তার আবু সাঈদকে। সংবাদ সম্মেলনে রূপপুরের মেডিকেয়ার ক্লিনিককে ‘বিশ্বাস করে’ নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দেয়ার কথা জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন আছে কি-না সেটি যাচাই না করে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দেয়ার কথা স্বীকার করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়েলজি বিভাগের প্রধান পিসিআর (পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন) ল্যাবের ইনচার্জ ডা. জাকিউর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদেরকে সরবরাহ করা হবে মর্মে আমরা বিশ্বাস করে মেডিকেয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি দিয়েছিলাম। গত ৬জুলাই সংগৃহিত ৫০টি নমুনা দেওয়ার পরদিন আমাদেরকে কাগজপত্র সরবরাহ করার কথা ছিলো। কিন্তু কাগজপত্র দিতে না পারায় আমরা তাদের কাছ থেকে আর কোনো নমুনা গ্রহণ করিনি। ৭জুলাই ওই ৫০টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টের মধ্যে ৩৯টি নেগেটিভ এবং ১১টি পজিটিভ এসেছে। আমাদের ল্যাবে পরীক্ষিত রিপোর্টগুলোতে কোনো ভুল নেই। অ্যানালাইসিসহ এসব পরীক্ষার রিপোর্ট গ্রাফ পিসিআর মেশিনের মেমোরিতে সংরক্ষিত আছে। সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শফিকুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক আশাদুল্লাহ মিয়া, পিসিআর ল্যাব ইনচার্জ এস. এম. জুনায়েদ ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতাল চেয়ারম্যান আবু সাঈদের উপস্থিত থাকার খবরে প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ অবস্থান নেয়। এরপরই তিনি সেখান থেকে সটকে পড়েন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন অফিসসুত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হয় ১৭ জুন থেকে। ৯ জুলাই পর্যন্ত তারা মোট ১হাজার ৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করে। এরমধ্যে ৪০৫টি পজেটিভ এবং ৬৬৪টি নেগেটিভ হয়। রূপপুরের ঘটনার পর ল্যাব ষ্টাফরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে ল্যাবটি বন্ধ করে দেয়া হয়। যদিও গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ল্যাব প্রধানসহ একাধিক ষ্টাফ উপস্থিত ছিলেন। অল্প সময়ের ব্যবধানে তাদের করোনা ভালো হয়ে যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি তারা। এদিকে সরাইলের দুবাজাইল গ্রামের ইটালী প্রবাসী মো: সিরাজ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে করোনার নেগেটিভ নিয়ে ইটালী গিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। বিমানবন্দর থেকে এক ঘন্টার মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানো হয় তাকে। সিরাজ এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন ঢাকার হাজী ক্যাম্পে। তার পাসপোর্ট নম্বর ইক০৭৩২৬৯২। এ ঘটনার বিষয়ে পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়াও তাদের করোনা টেষ্ট রিপোর্ট নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

July 2020
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন