১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

সরাইলে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ না হলে হাজার  হাজার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হবে&

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৭:১৩ অপরাহ্ণ , ১২ জুলাই ২০২০, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

মোঃ তাসলিম উদ্দিন সরাইল প্রতিনিধিঃস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার অপারেশন প্লানের নির্মাণকৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের দুবাজাইল কমিউনিটি ক্লিনিকের পুরাতন ভবন ভেঙে জায়গা দখল করে সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন দোতলা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ফলে বর্তমান সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবার কাছে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সেখানকার কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গায় নতুনভাবে ভবন নির্মাণে ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিলেও জমি দখল হয়ে যাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুবাজাইল এলাকায় মালামাল নিয়ে গেলেও কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নির্মাণ করতে পারছে না। এতে স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুবাজাইলে কমিউনিটি ক্লিনিক না হলে এবং সরকারের দেওয়া বরাদ্দ ফেরত গেলে সেখানকার স্কুল পরিচালনা কমিটির লোকেদের সঙ্গে গ্রামের অন্য লোকদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ১৯৯৮ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নামে প্রতিটি ক্লিনিকের নামে স্থানীয়দের দানকৃত ৫ শতাংশ জমিতে স্থানীয় ৬ হাজার মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেন।

২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় এলে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। ক্ষমতার পালাবদলে ২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পুন:জ্জীবিত করে তোলেন এবং বর্তমানে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে আসছে। এদিকে
জানা যায়, দুবাজাইল -অরুয়াইল গ্রামীণ সড়ক সংলগ্ন দুবাজাইলের স্থানীয় বাসিন্দা ও অরুয়াইল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাজী ধন মিয়ার দুবাজাইল মৌজার সাবেক দাগ ৪০৪৪ ও ৪০৪৬ দাগে ৫ শতাংশ জমি বিগত ১৯৯৯ সালে ২৬ অক্টোবর ৪২৩৭ নং সাব কাবলা দলিলে স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে দানকৃত জমিতে গড়ে উঠে দুবাজাইল কমিউনিটি ক্লিনিক। যথাযথ ব্যবহারের অভাবে এবং বিভিন্ন সময়ে বর্ষার পানির ঢেউয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে সেখানকার কমিউনিটি ক্লিনিকের জরাজীর্ণ ভবনটি ভেঙে সেই জায়গা নিয়ে দুবাজাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয় বলে অভিযোগ আছে,
দুবাজাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, এখানে কমিউনিটি ক্লিনিকের কোনো অস্তিত্ব নেই। স্কুলের পাশেই কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন ছিল, এটি বর্ষায় পানিতে ভেঙে ভেসে গেছে। স্কুলের জায়গাতেই নতুন দোতলা ভবন নির্মিত হচ্ছে।
দুবাজাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নবী হোসেন সাংবাদিকদের জানান, স্কুলের পাশেই কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন হয়েছিল। আমি দীর্ঘদিন প্রবাসে চাকরির পর ফিরে এসে শুনেছি বিভিন্ন সময়ে বর্ষার পানির ঢেউয়ে ভবনটি ভেঙে যায়, পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি এ কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনটির রড খুলে বিক্রি করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জেনেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নবী হোসেন দাবি করেন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনটি মাটির সঙ্গে মিশে ছিল। এখানে স্কুলের দোতলা ভবনের বরাদ্দ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের ভাঙা অংশগুলোর উপরে মাটি ফেলে তা স্কুলের জায়গার সমান করা হয়েছে এবং সেখানে স্কুলের দোতলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। এখানে ভূমি অফিসের রেকর্ডে কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা নেই।

দুবাজাইল এলাকার ইউপি সদস্য রেজাউল করিম সাংবাদিকদের জানান,কয়েকদিন আগে স্কুল কমিটির লোকজন কমিউনিটি ক্লিনিকের পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনটি ভেঙে স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গা দখলে নিয়ে দোতলা ভবনের কাজ শুরু করেন। তখন তারা বলেছিলেন স্কুল প্রাঙ্গনের অন্যপ্রান্তে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন স্থাপনে জায়গার ব্যবস্থা করে দেবেন। তখন এলজিইডি’র ইঞ্জিনিয়ার ও স্কুল ভবন নির্মাণের ঠিকাদারও উপস্থিত ছিলেন। তারাও বলেছে দুটিই সরকারি প্রতিষ্ঠান, এখানে স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গাসহ নিয়ে স্কুল ভবনটি নির্মিত হলে বাস্তবায়ন কাজে সুবিধা হবে এবং দেখতেও সুন্দর লাগবে। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নির্মাণে বরাদ্দ এসেছে, ঠিকাদারও কাজ করতে এসেছেন, কিন্তু এখন স্কুল কমিটির লোকজন কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধলে খুন-মার্ডারও হতে পারে।

ইউপি সদস্য রেজাউল করিম আরও বলেন, আমরা মেঘনা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ অত্যন্ত অবহেলিত। এখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানকার সাড়ে তিন কিলোমিটার মেঠো পথে আমাদের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি এখানে নির্মাণ না হলে এলাকার ১০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হবে, এটা গ্রামবাসী মেনে নিবে না। তবে গত বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সরেজমিনে এসে জনস্বার্থে এই বিষয়টির সুন্দর সমাধান দিয়ে গেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি কমিটির লোকদের সঙ্গে রেখেই মাপজোক ও আলোচনার মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন নির্মাণের জন্যে স্কুলের দখলীয় জায়গায় একপাশে স্থান নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু এখন শুনছি এটি নিয়েও নাকি নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
মেসার্স হোসেন বিল্ডার্স এর স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মো. হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের জানান,সেখানে কমিউনিটি ক্লিনিকের নতুন ভবন নির্মাণ করতে সরকার ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় এবং স্বাস্থ্য বিভাগ সেই কমিউনিটি ক্লিনিকের আগের পুরাতন ভবনটি টেন্ডারে বিক্রি করে। নিয়ম অনুযায়ী নতুন ভবনের টেন্ডার আমি পাই এবং সেই পুরাতন ভবনটিও আমি টেন্ডারে ১৫ হাজার টাকায় ক্রয় করি। আমি টেন্ডারে এ কাজ পেয়ে গত সপ্তাহে মালামাল ও শ্রমিক নিয়ে দুবাজাইল গ্রামে গিয়ে দেখি সেখানে কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা ও পুরাতন ভবনের কোনো অস্তিত্বই নেই। পরে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে স্কুল কমিটির লোকজন সেই কমিউনিটি ক্লিনিকের পুরাতন ভবন ভেঙে জায়গা

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

July 2020
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন