উত্তরায় ব্যারাক ভবন “উদ্বোধন” পুলিশ বাহিনীকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে, আইজিপি বেনজীর আহমেদ !!
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ , ২৭ জুন ২০২০, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
উত্তরায় ব্যারাক ভবন উদ্বোধনকালে আইজিপি – পুলিশ বাহিনীকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে ।
আজ২৭ শে জুন শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধন করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, অতিরিক্ত আইজিগণসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বেনজীর আহমেদ কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগ খাবে না, ড্রাগের সাথে কোনভাবেই সম্পর্কযুক্ত থাকবে না। তিনি ক্যান্সার চিকিৎসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কোন ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। পুলিশের কোন সদস্য যদি ড্রাগের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
আইজিপি বলেন, আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তখন পুলিশ এ ভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জনগণের সুরক্ষায় কাজ শুরু করেছে। এখন পুলিশের ২ লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে।
করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে, স্কুল-কলেজ এবং হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না, সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্যুর হার কমছে। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হয় পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র ০.৫ ভাগ। জাতীয় পর্যায়ে এ হার ১.৩ ভাগ।
আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল দেশের বিভিন্ন হাসপাতল পরিদর্শন করে করোনা চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে সেরা বলে আখ্যায়িত করেছেন। চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলও করোনা চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসা প্রটোকল ও ব্যবস্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
প্যানডেমিক পুলিশিং ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তাদের দেশের প্যানডেমিক পুলিশিং গাইডলাইন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশের গাইডলাইন সংগ্রহ করে বাংলাদেশ পুলিশের উপযোগী ‘প্যানডেমিক পুলিশিং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)’ তৈরি করেছি। এখন আমাদের একজন পুলিশ কনস্টেবলও জানেন, কিভাবে প্যানডেমিক পুলিশিং করতে হয়।
আইজিপি বলেন, করোনা সংক্রমণ কিভাবে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জাতীয়ভাবেও এ হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য সবাইকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে এ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারব।
আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আমরা স্বল্পমেয়াদে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যারাক ভবন নির্মাণ করেছি। ডেমরায় করা হয়েছে, উত্তরাতে আজ করা হলো। পূর্বাচলেও আমরা ব্যারাক ভবন নির্মাণ করব। দীর্ঘমেয়াদে আমরা বহুতল ভবন নির্মাণের দিকে যাব। পুলিশ ফোর্সের বসবাসের ঘনত্ব কমিয়ে তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক আবাসনের ব্যবস্থা করতে চাই আমরা। তিনি পুলিশের ব্যারাক ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করার জন্য আবুল খায়ের গ্রুপকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আইজিপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে করোনা আক্রান্ত হয়ে শাহাদাতবরণকারী ফ্রন্টলাইনার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক, পুলিশসহ সকলের আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আইজিপি পুলিশ লাইন্স চত্বরে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা রোপণ করেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন