১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

EN

জাতীয় বাজেট ও সমালোচনা” —

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৪:১৫ অপরাহ্ণ , ১৪ জুন ২০২০, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

  • প্রতি বছরই জুন মাসে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে মাননীয় অর্থমন্ত্রী কর্তৃক পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট ঘোষিত হয়। ক্ষমতাসীন প্রত্যেক সরকারই জাতীয় অগ্রগতির জন্য একটি গ্রহনযোগ্য ও সময়োপযোগী বাজেট দিতে চেষ্টা করে থাকেন। গত তিন দশক ধরে যা দেখে আসছি , ” বিষয়টা এরকম ; বাজেট ঘোষণার পর সরকারি দল বলে , ” এ বাজেট যুগান্তকারী, গণমুখী ও বাস্তবসম্মত “। বিরোধী দল বলে,” এ বাজেট কল্পনা প্রসূত, গণবিরোধী ও অবাস্তবায়নযোগ্য”। বাজেট ঘোষণার পর বিএনপি মহাসচিব এমনটাই বলেছেন। যদিও সংসদীয় রীতি অনুযায়ী তাঁরা বিরোধী দলের মর্যাদা হারিয়েছেন বেশ আগেই।সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে বাজেট নিয়ে যারা সমালোচনা করেন , তাঁরা কখনো বাজেট প্রণয়নের পূর্বে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেন না। আবার সমালোচনাকালে বাজেটের কোন কোন দিক ভালো হয়নি কিংবা বাস্তবায়নে কী কী সমস্যা হতে পারে ? তাও বলেন না। আমি মনে করি বাজেটে সমালোচনার কিছুই নেই,বাস্তবায়নে পরামর্শ থাকতে পারে। আর যদি সমালোচনা করতে মন চায় তবে তা এরকম হতে পারে; ” এ উচ্চাভিলাষী বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়”। আবার পূর্ববর্তী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে সমালোচনা করা যেতে পারে। পূর্ববর্তী বাজেট বাস্তবায়নে সরকার কোন কোন খাতে ব্যর্থ হয়েছে? কিংবা খাতওয়ারী কত শতাংশ বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে? ইত্যাদি আলোচনায় আসতেই পারে। নবজাতক শিশুর জন্ম নিয়ে সমালোচনা না করে তাকে যথাযথভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ দিতে হবে এবং যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যায় এমন পথে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করতে হবে।
    এমনিতেই ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো ,ক্ষরা ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশ। আবার মরার উপর খঁরার ঘা হিসেবে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে দিশেহারা জাতিকে এ বাজেট কিছুটা স্বস্তি দিতে চেষ্টা করেছে মাত্র। করোনা সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়তে থাকবে।বিপুলসংখ্যক মধ্যবিত্ত শ্রেণী দারিদ্রসীমার নিচে জীবন যাপন করতে বাধ্য হবে। সরকারের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে যে কোনোভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে জনগণকে করোনা সংকট থেকে নিরাপদ রাখা। সরকার প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে সংকট থেকে উত্তরণের জন্য। দেশকে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে যেতে না দিয়ে সঠিক পথে পরিচালিত করার সাহসী পদক্ষেপের এ বাজেট মানুষকে উজ্জীবিত করবে। করোনা সংকটে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হলে কিংবা কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেললে জাতি গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে। এ বাজেট মানুষকে অদম্য স্পৃহা নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার সজাগ থেকে অবিরত কাজ করে চলেছেন।

    বৈশ্বিক করোনা সংকটে বিশ্ব ব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হতে পারে। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও দাতাগোষ্ঠীর সাহায্য কমে আসতে পারে । উন্নত রাষ্ট্র গুলো অনুন্নত রাষ্ট্র গুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে । এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক খাত শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নাই। এ কারণে সরকার বাজেটে কৃষি অর্থনীতির উন্নয়নে অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। করোনা সংকটের প্রারম্ভেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা কোভিড ১৯ অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদী না থাকে সে রকম নির্দেশনা দিয়েছেন। মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর অসামান্য অবদানে কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে । ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। করোনা সংকট দীর্ঘ না হলে বাংলাদেশ সেফ জোনেই ছিল। তবুও আমরা আশাবাদী এ সংকট উত্তরণে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির চাকা সচল থাকবে।

    লেখকের পরিচিতি
    সাবেক আহ্বায়ক, মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগ।
    তথ ও গবেষণা সম্পাদক,মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ। সাধারণ সম্পাদক, ছেংগারচর পৌর কমিউনিটি পুলিশিং,চাঁদপুর।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন