কোরিয়ার জালে বাংলাদেশের গোল
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৩:৩১ পূর্বাহ্ণ , ২৫ আগস্ট ২০১৮, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
স্পোর্টস ডেস্ক : কাতারকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে নাম লেখানো গেলেও উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে পেরে ওঠা প্রায় অসম্ভব হবে, তা অনুমেয়ই ছিল। হলোও তা-ই। এশিয়ান গেমসের বর্তমান রানার্সআপদের বিপক্ষে ৩-১ গোলে হেরে এশিয়ান গেমস ফুটবল থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধেই দুই গোল হজম করে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তৃতীয় গোল হজম। তবুও শেষ সময় পর্যন্ত হাল ছাড়েনি বলে অতিরিক্ত সময়ে একটি গোল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এশিয়াডে দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র গোলটি এসেছে সাদউদ্দীনের পা থেকে।
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় দল বাংলাদেশে (১৯৪) সঙ্গে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে ৮৬ ধাপ। তবে ৯৮ র্যাঙ্কিংয়ের কাতারের অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে যখন হারিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে এই এশিয়ান গেমসেই, উত্তর কোরিয়াও ধরাছোঁয়ার খুব বাইরে নয় মনে করছিল বাংলাদেশ দল। তবে মাঠে সেটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। উত্তর কোরিয়া শুরু থেকেই এমনভাবে হাই প্রেস করেছে যে, প্রথমার্ধ মোটেও ভালো কাটেনি বাংলাদেশের।
এই প্রথম এশিয়ান গেমসে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছে বাংলাদেশ, একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মনে। শক্তিতে পিছিয়ে থাকার ঘাটতি মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে পূরণ করতে চাইছিল। তবুও পারছিল না উত্তর কোরিয়া দ্রুত জায়গা বদল করে খেলায়। কোরিয়ানরা বাংলাদেশের অ্যাটাকিং থার্ডে বারবার বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্ম দিচ্ছিল। স্কিল, দম, শারীরিক দক্ষতা ও কৌশল—সবকিছু মিলিয়ে উত্তর কোরিয়া অনেক কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে কাতার ম্যাচে যেভাবে খেলেছিল বাংলাদেশ, সেটি এই ম্যাচে দেখা যায়নি।
প্রথম গোল এল ১৩ মিনিটে। বাঁ পাশ থেকে ক্রস আসে বাংলাদেশ বক্সে। পোস্টের কাছে কোরীয় ফরোয়ার্ডের কাছে বল যাওয়ার আগে ডিফেন্ডার সুশান্তর হাতে লাগে। সুশান্ত তবু বল দখলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন। হ্যান্ডবলের দাবি তোলেন কোরিয়ার এক খেলোয়াড়। পেনাল্টি থেকে স্ট্রাইকার কিম ইউ সং এগিয়ে দেন দলকে (১-০)।
৩৮ মিনিটে এসেছে কোরিয়ার দ্বিতীয় গোল। বাংলাদেশ রক্ষণকে নাচিয়ে ছেড়েছে কোরিয়া। অন্তত আট-নয়জন একসঙ্গে উঠে এসে বক্সে দ্রুত বল দেওয়া নেওয়া করে একটা সময় গোলের দরজা খুলে ফেলে। ফরোয়ার্ড কিম ইয়ং মাপা শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। পিছিয়ে পড়েও লড়ছিল বাংলাদেশ। ওপরে ওঠার চেষ্টা ছিল। দ্বিতীয় গোলের আগে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিকে তপুর হেড কোরিয়ার এক ডিফেন্ডারের মাথায় লেগে পোস্টের ওপর দিয়ে যায়। ওটা পোস্টে থাকলে হয়তো ম্যাচে সমতা এসে যেত।
বাংলাদেশের রক্ষণ দেয়ালটা আবার ভেঙে পড়েছে ৬৮ মিনিটে। এবারও সেই টিটি-টাকা করে ডান দিক দিয়ে ঢুকেছে কোরিয়া। তারপর ছোট্ট একটা মাইনাস থেকে মিডফিল্ডার ক্যাং কুক চোলের আলতো টোকায় ৩-০।
বাকি সময়টা বাংলাদেশ চাইছিল ব্যবধান একটু কমাতে। উইং দিয়ে ঢুকতে চেয়েছেন সুফিলরা। কিন্তু কোরিয়ার সঙ্গে পেরে ওঠা ছিল সত্যিই খুব কঠিন। তারপরও যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটের প্রথমেই বদলি ফরোয়ার্ড রবিউলের থ্রু থেকে কোরিয়ার বক্সে জটলা। তারপর সাদ উদ্দীনের দারুণ শটে বাংলাদেশ স্কোরলাইন করে ফেলল ৩-১।
একটু পরই রবিউলের শটে গেল বাইরে। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও আফসোস হচ্ছিল, শেষ কয়েক মিনিটের এই খেলাটা ম্যাচে আরেকটু আগে কেন খেলল না বাংলাদেশ! দারুণ কিছু করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারলে সেটি হতো বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এক রকম রূপকথাই। সেটি হলো না তবে দ্বিতীয় রাউন্ড খেলে যাওয়াও কম নয়।
আপনার মন্তব্য লিখুন