“আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস” আপোষহীন জহিরুল ইসলাম মাষ্টারের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৭:০৯ অপরাহ্ণ , ৫ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 months আগে
আজ ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস। “The ransformation of education begins with teacher” এই স্লোগানে এবছর দিবসটি পালিত হচ্ছে।শিক্ষকদের পরিবর্তনের সঙ্গেই শিক্ষার পরিবর্তন হয় তেমনি সরাইলের শিক্ষা উন্নয়নে একজন আলোকবর্তিকা ছিলেন মরহুম জহির মাস্টার তিনি ২০০৯ সাল পর্যন্ত সরাইল কালিকচ্ছ পাঠশালার প্রধান শিক্ষক ছিলেন ও ২০১০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।জহির মাস্টার সাহেব সম্পর্কে আমার শ্বশুর তাই তার বিষয়ে অনেক কিছু জানার সুযোগ পেয়েছি।সূর্যকান্দি গ্রামের শ্রদ্ধেয় আলীম মাস্টার ফুফা,সরাইল কলেজের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় ইকবাল ভাই ও তার শেষ জীবনের একজন সহচর আলী আহমেদ চাচা সহ অনেকের কাছেই তার কর্তব্যনিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের বিষয়ে জানতে পারি।তিনি আপোষহীন ব্যাক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।ইস্কুলে ইংরেজি পড়াতেন ও শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতেন।ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে দেখলে শ্রদ্ধা ও ভয়ে ডিসিপ্লিনড হয়ে যেতেন।স্কুল থেকে এসে তিনি কৃষিকাজেও পর্যাপ্ত সময় দিতেন।
বিলাসী তে শরতচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় গ্রামের শিক্ষালাভের বিষয়ে বলেছেন, “পাকা দুই ক্রোশ পথ হাটিয়া স্কুলে বিদ্যা অর্জন করিতে যাই।আমি একা নই দশ-বারোজন।যাহাদেরই বাড়ি পল্লিগ্রামে তাহাদেরই ছেলেদের শতকরা আশি জনকে এমনি করিয়া বিদ্যা লাভ করিতে হয়।” সরাইলেও সেইসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিলো নগণ্য ফলে কালিকচ্ছ,নোয়াগাও,ধরন্তিসহ অনেক দুর দুরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা কালিকচ্ছ পাঠশালায় পড়তে আসতো।তাই এখনো কোন চায়ের দোকানে বা কোন জনসমাগমে কেউ আমার পরিচয় পেলে অনেকেই বলে উঠে জহির মাস্টার আমার শিক্ষক ছিলেন, তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন,কিছু মনে না করলে আপনার চায়ের বিলটা আমি দেই।এরকম ঘটনা অনেকবারই আমার সাথে ঘটেছে ও সত্যিই তার জামাতা হিসেবে আমি খুব গর্ব অনুভব করেছি।
জহির মাস্টার সাহেব একজন ধর্ম অনুরাগী ব্যাক্তিত্ব ছিলেন।তিনি সূর্যকান্দি মইনুল ইসলাম মাদ্রাসার সভাপতি ছিলেন।সভাপতি হিসেবে মাদ্রাসার উন্নয়নে তিনি অনেক কাজ করেছেন।মাদ্রাসার খতিব সাহেব আমার সাথে দেখা হলেই কৃতজ্ঞচিত্তে তাকে স্মরণ করেন।এছাড়াও জহির মাস্টার সাহেব একজন গর্বিত পিতাও বটে, তার চার ছেলেমেয়ে শিক্ষক (দুইজন সরকারি কলেজ ও দুইজন সরকারি প্রাইমারি স্কুল) এবং তার বড়ছেলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন। বলা যায় একটি গ্রামের শিক্ষিত আদর্শ শিক্ষক পরিবার।তিনি তার পরিবারের অন্যদের পড়াশোনার বিষয়েও যথেষ্ট উৎসাহী ছিলেন।
প্লেটো আনুমানিক ৩৮৫ খ্রীস্টপূর্বাব্দে গ্রীক বীর একাডেমাস এর উদ্যানে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন এবং নাম দেন দ্য একাডেমি,সেই আদলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার চেস্টা হচ্ছে দেশে দেশে।কর্তব্যনিষ্ঠ শিক্ষকরাই হলো সে প্রচেষ্টার পথপ্রদর্শক।
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে জহিরুল ইসলাম মাস্টার সহ সকল শিক্ষকদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।।
লেখার,
আসাদ মিলন, কবি কলামিস্ট কল্পকার
আপনার মন্তব্য লিখুন