২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ইটভাটার শ্রমিকের সন্তানেরা–

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৪:০৮ অপরাহ্ণ , ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

মোঃ মিকাইল আহমেদঃ মানুষের মৌলিক চাহিদা পাঁচটি মানুষের সুস্থভাবে বাঁচার জন্য প্রয়োজন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা। অার মানসিক ও মানবিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন শিক্ষা। কোন একটি মৌলিক চাহিদার অভাব হলে কখনোই একজন মানুষ পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে না। শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদন্ড। সেই মেরুদন্ড শক্তিশালী না হলে সুষ্ঠু জাতি গঠন অসম্ভব। একটি জাতিকে সমৃদ্ধভাবে গড়ে তুলতে সুশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এদেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের সন্তানরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরঘেষে গড়ে উঠা কয়েকটি ইটভাটা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় এই চিত্র। অনেক শিশুদের পড়ালেখার জন্য কোন স্কুল নেই। এসব ইটভাটা লোকালয় থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় ইটভাটার শ্রমিকদের সন্তানেরা শিক্ষার অালো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কয়েকজন শিশুর সাথে কথা বলে জানা যায় একটি স্কুলও নেই তাদের পড়ালেখার জন্য। অাবার কয়েকজন শিশু জানায় স্কুলে যেতে মন চায় তাদের। তারা দেখেছে ড্রেস পড়ে, বই, ব্যাগ কাঁধেনিয়ে ছোট ছোট শিশুদের স্কুলে যেতে।

যেকোনো জাতিগোষ্ঠীর মাথা তুলে দাঁড়াতে শিক্ষা অত্যাবশ্যক। অামাদের দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ কায়িক শ্রমের সাথে সরাসরি জড়িত। আধুনিকতার এই যুগেও যাদের সন্তানরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। শুধুমাত্র আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় অধিকাংশ শ্রমিকের সন্তানেরা বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার সাথে সাথে শিক্ষাও দিন দিন ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে। তাই অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন শেষ হয়ে যায় মাঝ পথেই। বিভিন্ন প্রতিকূলতার সাথে টিকতে না পেরে ঝড়ে যায় অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। এটি কোন জাতির জন্য অশনিসঙ্কেত। অাজকের শিশু অাগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকলে আগামী দিনে দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।

দেশের স্বার্থে, দশের স্বার্থে শ্রমিকের সন্তানদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে দেশের সরকার, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক ও বিত্তবান সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে। শ্রমিকের সন্তানকে বিনাবেতনে অধ্যয়নের সুযোগ দিতে হবে যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। শ্রমিকের সন্তানদের জন্য সরকারি-বেসরকারি

বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কোন জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে দূরে রেখে দেশ কোনোক্রমেই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবে না।

লেখকের প্রত্যাশা সরকার, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন এনজিও ও সংস্থাগুলো শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এসব কোমলমতি শিশুদের জন্য শিক্ষার আলোর ব্যবস্থা করবেন। শিশুদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবেন। শিশুদের শৈশব হোক রঙিন। ইটভাটার কাঁদামাটি নয় এসব শিশুদের হাতে উঠুক বই, খাতা আর কলম।

লেখক: মো. মিকাইল আহমেদ

শিক্ষার্থী, আইসিএমএবি, ঢাকা

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

February 2022
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28  
আরও পড়ুন