সরাইলে প্রসবকালে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে মারা যাচ্ছে নবজাতক শিশু অথবা ‘মা’
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৯:৩৯ অপরাহ্ণ , ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগেমো.তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রসব কালে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে মারা যাচ্ছে নবজাতক শিশু বা মা। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর খবর ইদানিং খুব বেশি ঘটছে। পত্রিকা খুললেই এই দুঃসংবাদটি চোখে পড়ে । যেখানে সরকার মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যু রোধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সেই সময়ে এই মৃত্যুর সংবাদ খুবই বেদনা দায়ক। সরাইল উপজেলায় অদক্ষধাত্রীর হাতে মারা যাচ্ছে মা বা দুনিয়া দেখার আগে শিশু মৃত্যুর ঘটনা। এমন অদক্ষ ধাত্রীর চিকিৎসা নামে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে ভাড়া বা নিজের বাড়িতে ডেলিভারি নামে অস্বাস্থ্যকর রোম।
মানুষের জন্ম সবচেয়ে আনন্দদায়ক ঘটনাগুলোর একটা। কোনো পরিবারে একজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে সেই পরিবারের সবাই খুশি হয়: একজন নতুন মানুষ আসছে! তার জন্য কাঁথা সেলাই করা হয়, খেলনা কেনা হয়; তাকে নিয়ে সবাই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তার মা তো গর্ভকালীন পুরোটা সময়ই তাকে নিয়ে স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকেন।মিলি আক্তারের (২৬) প্রসবব্যথা ওঠার পর নেওয়া হলো গ্রামেরই এক ধাত্রী বাসায়। তাঁর নেই তেমন কোনো প্রশিক্ষণ। সরল বিশ্বাসে গ্রাম ধাত্রী বাসায় চলে যায় মিলি। প্রায় ৪ ঘণ্টা মিলি ও তার গর্ভের শিশু সুস্থ ছিল। ধাত্রী এর কিছুক্ষণ পর ডেলিভারি করার চেষ্টা করেন। যখন থেকে বাচ্চা পেটে নড়াচড়া করে না।তখন মিলিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। শিশুটি মারা যায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা জানান, গর্ভের বাচ্চাটি জীবিত নেই। তাই মাকে বাঁচাতে হলে সিজার করতে হবে। সিজারের পর দেখা যায় শিশুটি মারা গেছে।গত (১৩ ডিসেম্বর)ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার সৈয়দ টুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়, অদক্ষ ধাত্রীর হাতে সন্তান প্রসব করাতে গিয়ে সরাইলে এ পর্যন্ত বহু শিশু মারা গেছে এ তথ্য বহু বার গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যে হারে শিশু জন্মগ্রহণ করছে, সেই তুলনায় নেই দক্ষ ধাত্রী। আর অদক্ষ ধাত্রী দিয়ে প্রসব করানোয় প্রতিদিন অনেক শিশু পৃথিবীর আলো দেখছে না। ঘটছে মাতৃমৃত্যু।এদিকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানাযায়,গত তিন মাসে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৪৬ জনের।এর মধ্যে সবাই সুস্থ আছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেকেই মনে করেন, যেহেতু তাঁদের জন্মের সময় তাঁদের মায়েদের বাড়িতেই প্রসব করানো হয়েছিল এবং তাঁরা যথেষ্ট সুস্থ-সবল হয়েছিলেন, তাই এখন তাঁর নিজের সন্তান প্রসবের সময় কোনো সমস্যা হবে না। অন্যদিকে, আর্থিক সংকট আরেকটি বড় কারণ। তবে সার্বিক অবস্থা পরিবর্তনে প্রয়োজন আরও কিছু উদ্যোগ।সরকার নবজাতকের মৃত্যু রোধসহ মাতৃমৃত্যুহার কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ফলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার আগের চেয়ে অনেক কম।কিন্তু এই হার কমে গেলেও অদক্ষ ধাত্রী দিয়ে প্রসব করানোর হার কমছে না। তার একটি বড় কারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব। এ বিষয়ে কথা বলেন, সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ কর্মকর্তা ডা.মো.নোমান মিয়া তিনি বলেন,এ অবস্থার অবসান ঘটাতে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। আমরা প্রতি নিয়ত এ হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি করানো হচ্ছে।প্রান্তিক অঞ্চলের জনগণের কাছে দক্ষ ধাত্রীরা পৌঁছাতে পারছেন না। অবস্থার পরিবর্তনের জন্য ঘরে ঘরে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে হবে। এ জন্য সরকার, বেসরকারি সংস্থাসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলেই প্রসবকালে অদক্ষ ধাত্রীর হাতে আর মারা যাবে না কোনো শিশু বা মা। তবে সরাইলে চারটি প্রাতিষ্ঠানিক সাব সেন্টারে নরমাল ডেলিভারি করানো হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অত্যাধুনিক একটি রোম রয়েছে যে খানে নার্স ডাক্তার দ্বারা বিনামূল্যে সরকারি ভাবে নরমাল ডেলিভারি চালু রয়েছে ২৪ ঘন্টা। ডা.নোমান মিয়া তিনি বলেন, আমি সকলকে আহ্বান করবো আপনারা ভুল পথে পরিচালিত না হয়ে, সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করুন।
আপনার মন্তব্য লিখুন