২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

১১ মাসেও মিলেনি ১১ বছরের শিশুর পরিচয়।।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১২:২৫ অপরাহ্ণ , ৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি:গত ১১ মাসেও মিলেনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে আহত ১১ বছর বয়সী অজ্ঞাত শিশুর পরিচয়।

৩৩৪দিন যাবত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি রয়েছে।

৩৩৪দিন হয়ে গেল এখনও আহত ওই শিশুর পরিবারের পরিচয় মিলেনি। এখন শিশুটি অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতির দিকে। তবে আবার মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুটি এখন চোখ মেলতে পারে ও কথাও বলার চেষ্টা করে৷ মুখে খাবার দিলে তা খুব সহজে গিলতে পারে। মানুষ দেখলে শিশুটি হাসিও দেয়।

হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. একেএম নিজাম উদ্দিন শিশুটির অবস্থা উন্নতির বিষয়টি সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেন।

সার্জারী বিভাগের সূত্রে জানা যায়, অজ্ঞাত শিশুটি প্রায়ই ১১ মাস আগে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে অচেতন অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি হয়। ওইদিন থেকে হাসপাতালে সার্জারী চিকিৎসক, নার্স ও পরিচ্ছন্ন কর্মী, স্বেচ্ছাসেবীদের সেবায় শিশুটির শারিরীক অবস্থা অনেক উন্নতি হয়েছে। শিশুটি চোখ মিললেও পরিবারের কাউকে পাশে পাননা। মাঝেমধ্যে অনেকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে শিশুটি। যে-কেউ শিশুর মুখে খাবার দিলে তা সহজে গিলতে পারে। যেহেতু ওই শিশুর পরিবার নেই, তাই সার্জারী বিভাগ হয়েছে শিশুটির বাঁচা-মরার শেষস্থল।

ওই শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র হাসপাতাল বহন করলেও খাওয়া-দাওয়া জোগান দিচ্ছে পরিচ্ছন্নকর্মী উজ্জ্বল ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে শিশুটির পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন সামাজিক-মানবিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। তার পাশাপাশি কিছু সাংবাদিকও অজ্ঞাত শিশুটির খোঁজ খবরও রাখছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তারা৷ দ্রুত শিশুটিকে সুস্থ করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাও চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. হিমেল খান জানান,
শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকেই শিশুটি অসচেতন ছিল। এখন শিশুটির শারিরীক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। ওই শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের ফান্ড থেকে প্রতিমাসে শিশুটিকে ২ হাজার টাকা একটি অনুদান দিচ্ছি। কয়েকদিনের ভিতরে শিশুটির আবার একটি ব্রেনের সিটি স্ক্যান করাবো৷ তারপর শিশুটির শারীরিক অবস্থা বিস্তারিত জানানো যাবে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, যেহেতু ১১বছর বয়সী শিশুটি অজ্ঞাত, তার পরিবারের লোকদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন পুলিশ। আমরা খুব শীঘ্রই পরিবারের খোঁজ পাবো। শিশুটি সদর থানার পক্ষ থেকে ৫০ কেজী চাল দিয়েছি। আগামী আরও অনেক কিছু দেওয়ার ইচ্ছে।। সমাজের ধনী লোকরা এগিয়ে আসলে হয়তো শিশুটিকে ঢাকা বা কুমিল্লা নিয়ে সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, গত ৩রা জানুয়ারি স্থানীয় এক ব্যক্তি দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট রেলপথের আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বৈকণ্ঠপুর এলাকার রেললাইনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকা একটি শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরে তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছিলেন। তার মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত থাকায় সেখানে শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল। এখনও তার পরিবারকে সনাক্ত করা যায়নি। তবে ওই অজ্ঞাত শিশুর মা পরিচয়ে একজনের খোঁজ পাওয়া গেলেও সর্বশেষ তাকেও আর দেখা যায়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

December 2021
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন