২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

অতিথি আপ্যয়নে সদা হাস্যোজ্জ্বল ফখরুল ভাই।।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১০:০৬ অপরাহ্ণ , ১ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে

মো.তাসলিম উদ্দিন সরাইলঃ  অতিথিপরায়ণতা ও মেহমানদারির আদর্শ ছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। অতিথিদের সামনে তিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল থাকতেন। যেকোনো অতিথিকেই তিনি সাদর আমন্ত্রণ ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতেন। অতিথিদের ক্ষেত্রে ধর্ম-বর্ণ ও শত্রু-মিত্রের ফারাক করতেন না। কোনো অতিথির কাছ থেকে অসৌজন্য প্রকাশ পেলেও ধৈর্য ধরতেন।অতিথির আদর-আপ্যায়নে যাতে কোনো ত্রুটি না হয় সেদিকে সম্পূর্ণ খেয়াল রাখতেন। বিদায়বেলায় মেহমানের হাতে তুলে দিতেন বিভিন্ন রকম উপহার-উপঢৌকন। তার আন্তরিক আতিথেয়তায় অতিথিরা মুগ্ধ-বিস্মিত হতো। সেই মুগ্ধতা-বিস্ময় অনেক অতিথিকে ইসলাম গ্রহণে উৎসাহিত করেছে। আতিথেয়তা সম্পর্কে তার নির্দেশনাবলি যুগ যুগ ধরে চলেছে।গতকাল রাতে সাড়া এগারোটা বন্ধু হাবিব ও বন্ধুর ফরমান উল্লাহ চট্টগ্রামে তার বাড়ি। আমরা ঢাকা যাব রাতে আশুগঞ্জ উজান ভাটি হোটেলে অপেক্ষা করছে আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াই সিতা গ্রামের ঐতিহ্য বন্দে আলী মিয়ার বাড়ির সন্তান মো. ফখরুল ভাই। উজান ভাটি হোটেলে আস্তে দেখি উনার ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে হোটেলের সামনে দাড়া। আমাদেরকে দেখে ফখরুল ভাইয়ের হাসি মুখে জিঙ্গেস করতে বলে, কি খাওয়া যায়। বললাম চা আর কিছু না। বলে হোটেলের উপরে চার জন চা আড্ডায় কিছুকথা তার পর পান হাতে নিয়ে গাড়িতে উড়তে বলাম ফখরুল ভাই আপনার হাতে সাদা ব্যাগে কি? ফখরুল ভাই বললেন আছে কিছু চলেন,বলে উনার ছেলেকে নিয়ে গাড়িতে বসলেন। পিছনে সিটে সুয়ে বাবা- ছেলে গুমের ঘরে গলা ফাটিয়ে ঘুম। আমরা তিন বন্ধু বিভিন্ন আলোচনায় ব্যস্ত। একটু যাওয়ার পর ড্রাইভারকে বলি ভাই আস্তে যাবেন। রাস্তায় এখন প্রতি নিয়ত দুঘটনার খবর পাওয়া যায়।
আমার এক বন্ধু কথার মাঝে বলে’ ড্রাইভার সাহেব ” ওভারটেক করবেন না। আমার একটি আপনা বৌ’ই তাকে এতিম করেন না। রাস্তায় দুঘটনার কোন শেষ নেই।
এ ফাকে ফখরুল ভাই ঘুমের চোখ খোলে বলেন, ভাইরে আপনারা সরাইলের মানুষ আমার তালুই দ্বীন ইসলাম মিয়াকে নৌকা নিয়ে পানিশ্বর ইউনিয়নে ফেল করে দিয়েছেন। নারে ভাই সরাইলে ইউপি নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে কারো কোন কিছু করার ছিলনা। ভোটার দের ভোট উৎসব হয়েছে। এ কথা বলতে ঢাকা মেয়ের হানিফ ফ্লাইওভার ব্রীজে উপরে গাড়ির কালো গ্লাস দিয়ে তাকাতে বাহিরের ঢাকা আলোর মাঝে ঝিলিক মারছে চোখে।
আমরা বন্ধু হাবিব বলে এতো উন্নয়ন করে আওয়ামীলীগ সরকার তবে।মানুষ ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরাজয়। আমার মাথায় ঢুকেই না। সারাটা বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতো উন্নয়ন করতেছে। ঢাকাতেই শুধু যোগাযোগ উন্নয়ন দেখলে মন ভরে যায়। বন্ধু একথা শেষ করতে আমরা মালিবাঘ ইউনিক মমতাজ টাওয়ারে ফখরুল ভাইয়ের বাসায়। নিছে নেমে দেখি সামনে লাইট ঝলমলে জ্বলছে রাতে লাইট। ইউনিক মমতাজ টাওয়ারে সুন্দর একটি বাগান আছে। ফুটে আছে ফুল। এ ফুলের গন্ধে যেন ঢাকার রাতের নিরবধিকে জাগ্রত করেছে। রজনীগন্ধ ফুল আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি। তাদের অন্ধকারময় রাতে রজনী গন্ধ যেন রাতের পথের দিশারী। অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখে ছবি তোলা হলো। এ সময় রাত প্রায় চারটা। ফখরুল ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার জন্যে। অনেক ভাবে বলতেছে আমি বললাম ভাই আমি উপরে উঠতে পারবনা। ফখরুল ভাই বললেন, সিড়ি না লিফট আছে। বললাম ভাই আমি যাব না। ফখরুল ভাই বলে কেন যাবেন না। বললাম রাতে অনেকে সুয়ে আছেন।ভাই ঘুম ভাঙতে অনেক বিরক্ত বোধ করেন। ভাই আরে চা খাবেন ঠান্ডার মধ্যে ভালো লাগবে। তবে এ সময় উনার হাতে সাদা ব্যাগ তখনও কিছু বুঝতে পারি নাই। উনার অনুরোধ রাখতে।
রোমে ঢুকতে দেখি অনেকে ঘুমে আছে। দুয়েক জন ঘুম থেকে উঠেছে আর বাকী জন উঠে নাই। টেবিলে বসলাম তখনই ফখরুল ভাই ব্যাগের ভিতর থেকে। চার-পাচটি প্লাস্টিকের পট বাহির করলেন। পটের মধ্যে বিভিন্ন রকমের তরকারি ‘ বললাম ভাই এগুলো কেন, ভাই আমার বড় বোন সব গুলো দিয়েছে ‘ আমার বোন আমার অনেক প্রিয় মানুষ ‘ আমাকে অনেক আদর করে। আমার মা নাই। এখানে আমরা চারজন বসা কারো মা বেছে নেই। মা ‘ মানব জীবনের অনেক সুখের’ না থাকলে” বড়ই কষ্টের।” মা ছাড়া” মনে হয় মানব জীবনে কেউ আপন হয় না।
ফখরুল ভাইয়ে বৌয়ের বড় ভাইয়ের বৌ এরা এক সাথে একই বাসায় থাকেন। এর ফাকে উনি গরম ভাত এনে দিল। একটি মজার বিষয় শত ইচ্ছে না। থাকার পরেও ফখরুল ভাইয়ের মুখের হাসি অতিথি আপ্যয়ন দেখে না। বসে পারলাম না আমরা। একটু পরে প্লেট সামনে দিতে ফখরুল ভাই বড়ো মাছের মাথা আমার প্লেটে দিয়েছেন। (যা ছবিতে দেওয়া হয়েছে) এতো বড়ো মাছের মাথা একা খাওয়া কি সম্ভব। তাই সবাই মিলে এক সাথে খেলাম ‘ তখন রাতের শেষ সময়। পাশে মসজিদ ফযরের আজান শুনা যাচ্ছে’ মসজিদের মিম্বরে আল্লাহু আকবার ধনী’ নিরব রাতে মাছের মাথা খাচ্ছি আর কি মধুর সুর আজানের।
অনেক খাবারে আপ্যয়ন করেছেন ফখরুল ভাই। এতো রাতে বাসাই যাওয়ার পর সবাই মুখে। কোন প্রকার বিরক্ত ভাব মনে হলোনা ‘ ফখরুল ভাই সহ সবাই ছিলেন হাসি- খুশি। খাবার প্রায় শেষ’ ফখরুল ভাই বলে ভাই চা খাবেন, তব খাবারের পর মিষ্টি খাওয়া ভালো। বলে নিজের খাতে মুখে সবাইকে মিষ্টি তুলে দিলেন।। কিছু মানুষ এখনো আছে তারা। অবশ্যই ভালো মানুষ ‘ তাই বলি. পৃথিবীতে খারাপের চেয়ে’ভালো মানুষের সংখ্যা” অনেক বেশী। বতর্মানে অনেক পরিবারের গেলে অতিথি আদর- আপ্যয়ন। ভালোবাসা কোন কিছুর পরিবর্তন নেই। যেমন গতকাল রাত ফখরুল ভাইয়ের বাসায় সত্যিই আমরা অভিভূত। ধন্যবাদ ফখরুল ভাই আপনার পরিবারের সবাইকে।।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

December 2021
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন