ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গোখরা সাপের উপদ্রব আতঙ্ক জনমনে
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৮:৩৬ অপরাহ্ণ , ১৯ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগেমোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গোখরা সাপের উপদ্রবে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সড়কে হেঁটে গেলেই সাপের ছোট ছোট বাচ্চা চোখে পড়ে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাসিরনগর উপজেলায় গত তিন বছর যাবত সাপে কাটার প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনাম) নেই। ফলে সাপের ছোবল দিলে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
স্থানীয়রা জানান, সুদর্শন নামের এক রাখাল যুবক ৯ নভেম্বর সকালে দত্তপাড়ার একটি মাঠে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় তিনটি সাপের বাচ্চাকে ইটের স্তূপের ওপর রোদ পোহাতে দেখেন। পরে তিনি দুটি সাপের বাচ্চা মেরে ফেলেন। গরু নিয়ে একই সড়ক দিয়ে আবারো যাওয়ার সময় আরও তিনটি সাপের বাচ্চা দেখতে পায়।
১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন উপজেলা সদরে দুজন নারী পথচারী দত্তপাড়ার রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পাঁচটি সাপের বাচ্চাকে রাস্তার মাঝখানে ফণা তুলে শব্দ করতে দেখেন। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তিনটি সাপ মেরে ফেলেন। এ সময় অপর দুটি সাপের বাচ্চা পালিয়ে যায়।
মো. ফাহাদ নামের এক বাসিন্দা বলেন, হঠাৎ সাপের এ উপদ্রব আমাদের সবাইকে অনেক আতঙ্কিত করে তুলেছে। দত্তবাড়িতে আমাদের ১৭-১৮ বছর ধরে চলাফেরা। আগে কখনোই আমাদের নজরে এমন বিষধর সাপ চোখে পড়েনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের সাপের ছবি দেখে বলেন, এটি গোখরা প্রজাতির সাপ। এর নাম মনোকলড কোবরা বা কেউটে সাপ বা গোক্ষুর বা গোখরা সাপ। এ ধরনের সাপ সাধারণত ৫-৮ ফুট লম্বা হয়। সাধারণত জলাভূমিতে এসব সাপ থাকে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের সাপ দংশন করলে কোনো ওঝার কাছে না গিয়ে সরাসরি হাসপাতালে যাওয়া উচিত। এ সাপ কামড় দিলে সাধারণত শ্বাসকষ্ট থেকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. অভিজিৎ রায় বলেন, হাসপাতালে সাপে কাটা তেমন রোগী আসে না। মাসে দু-একজন আসে। আমি যোগদানের আগে থেকে গত তিন বছর যাবত উপজেলায় অ্যান্টিভেনাম নেই। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি, আশা করছি দ্রুত এগুলো পেয়ে যাবো।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন বলেন, সাপের উপদ্রব বন্ধে বিভিন্ন জায়গায় জাল বিছিয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বিকেলে কয়েকজন এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা জানিয়েছে, সাপগুলো দৃশ্যমান নয় এবং এক জায়গায় থাকে না। এখন কিছু করতে গেলে সাপ পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়বে।
আপনার মন্তব্য লিখুন