ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের দাবীতে পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পরিষদের স্মারকলিপি প্রদান
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:২৮ অপরাহ্ণ , ৭ অক্টোবর ২০২১, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
স্টাফ রিপোর্টার : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগে প্রস্তাবিত বিধিমালা সংশোধনের দাবী জানিয়েন বাংলাদেশ পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পরিষদ।
আজ বৃহস্পতিবার ( ৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী বরাবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাংলাদেশ পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পরিষদের সভাপতি কাজী আবদুল হালিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিটিআই ইউনিট সম্পাদক মোঃ আবদুল আওয়াল (ইন্সট্রাক্টর সাধারণ) সাথে ছিলেন ইন্সট্রাক্টর মোঃ হাবিবুর রহমান, তাসলিমা বেগম,সুমন মল্লিক, সোহরাব হোসেন, নাসিমা আক্তার ও রফিকুল হাসান প্রমূখ।
এর আগে প্রস্তাবিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন গেজেটেড কর্মচারিদের নিয়োগ বিধিমালা-২০২১ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা। এবার পিটিআই ইন্সট্রাক্টরাও প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধি সংশোধনের দাবি জানালেন। পিটিআই ইন্সট্রাক্টর নেতারা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন গেজেটেড কর্মচারিদের নিয়োগ বিধিমালা-২০২১ (প্রস্তাবিত) এর সংশোধনসহ পিটিআইতে প্রকল্পের নিয়োগপ্রাপ্ত ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করে পিটিআই ইন্সট্রাক্টরদের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবি জানানো হয়েছে।
স্মারকলিপিকে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও তার আওতাধীন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য দুইটি নিয়োগ বিধিমালা প্রচলিত আছে। একটি হলো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট বিধিমালা-১৯৮১ (সংশোধিত ১৯৮৯), যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা ) ক্যাডারভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। অপরটি হলো, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮৫, যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নন ক্যাডার কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। সিভিল সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট বিধিমালা-১৯৮১ (সংশোধিত ১৯৮৯) বাতিল না করেই ক্যাডার ও ননক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা একত্রিত করে ক্যাডার পদকে নন ক্যাডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া সিভিল সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট বিধিমালার বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তন করা হয়েছে, যা আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। নেতারা মনে করছেন, এতে বিদ্যমান অনেক সুযোগ সুবিধা পেতে জটিলতা সৃষ্টি করবে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিমালা ২০২১ এ প্রশাসনিক উইং (শিক্ষা অফিস) এ ১৭৩ টি এডিপিইও পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে থানা শিক্ষা অফিসার (ফিডার পদ ৫০৪) থেকে এডিপিইও পদে শতভাগ পদোন্নতির প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ পিটিআই ইন্সট্রাক্টরদের ক্ষেত্রে ১৩৪টি পদের বিপরীতে ৮০ শতাংশ সরাসরি পদোন্নতির বিধান রাখা হয়েছে এবং বাকি ২০ শতাংশ পদে পিটিআই বহির্ভূত ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদের অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন নিয়োগবিধিমালা প্রণয়ন করে ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে ওই পদে পদোন্নতি দেওয়ার ইচ্ছা থেকেই এমনটি করা হচ্ছে বলে পিটিআই ইন্সট্রাক্টররা মনে করেছেন।
নেতারা বলছেন, কোন একাডেমিক প্রতিষ্ঠানে বাইরের নন-একাডেমিক কর্মকর্তাদেরকে (যাদের একাডেমিক কাজের অভিজ্ঞতা নেই) প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে পদায়ন ও পদোন্নতি দেওয়ার নজির বাংলাদেশে নেই। প্রস্তাবিত এ নিয়োগ বিধিমালা কার্যকর হলে পিটিআইতে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে পিটিআই ইন্সট্রাক্টর হিসেবে রাজস্বখাতে সরাসরি নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে রাজস্বখাতে নিয়মিত হওয়া ১৭ বছরের জুনিয়র ইউআরসি ইন্সট্রাক্টরদের অধীনে চাকরি করতে হবে। তাছাড়া ২০০৬-২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের পিএসসির সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া পিটিআই ইন্সট্রাক্টরদেরও বঞ্চনার শিকার হতে হবে যা ‘নন ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারী (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি) বিধিমালা-২০১১’ এর অনুচ্ছেদ ৪(২) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে পিটিআই পরিবারে ইন্সট্রাক্টরদের ২৭-২৮ বছরেও পদোন্নতি হবে না এর ফলে তাদের মধ্যে হতাশার কারণে বিশৃঙ্খল কর্ম পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
এদিকে নতুন বিধিমালা নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, নতুন বিধিমালায় তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সংশোধিত নিয়োগ বিধিতে প্রধান শিক্ষকদের কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়নি, বরং বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে তাদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। আবার ৪৫ বছর বয়স হওয়ার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। অপর দিকে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হলেও তাদের কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয়নি।
আপনার মন্তব্য লিখুন