প্রেমালাপের ভয়েস রেকর্ড সূত্রে হেফাজত তাণ্ডবে অংশ নেওয়ার স্বীকারোক্তি
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৮:২৪ অপরাহ্ণ , ২৮ জুলাই ২০২১, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জি :মোবাইল ফোনে প্রেমালাপের সূত্র ধরে বেরিয়ে এলো এক মুফতির হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে অংশ নেওয়ার তথ্য। গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে চালানো তাণ্ডব ও মিছিলে অংশ নেওয়ার কথা ভয়েস রেকর্ডে নিজেই স্বীকার করেছেন ওই মুফতি।
মুফতি জাহিদুল ইসলাম সুফল (৩২) নামের এই ব্যক্তি বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার আল জামিয়া আল ইসলামিয়া আল ইউনুছিয়া মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রাজঘর গ্রামের প্রয়াত শাহজাহান মিয়ার ছেলে মুফতি জাহিদুল ঘটনার পর থেকে স্থানীয় গ্রামের বাজারে দোকান পরিচালনাসহ এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছেন।
মুফতি জাহিদুলের প্রেমিকার সঙ্গে প্রেমালাপের ভয়েস রেকর্ড ওই এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়েস রেকর্ড থেকে জানা গেছে, মুফতি জাহিদুল তার প্রেমিকার সঙ্গে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে বলছেন– “খুব খারাপ একটা নিউজ আছে, মাথা নষ্ট অইয়া গেছে। আজকা থেকে দুই তিন মাস আগে একটা পুলিশের লগে আমার তর্ক হইছিল। এহন একটা খবর আইছে আমারে বলে ভিডিও ফুটেজে দেখছে। হরতালের আগের দিন শুক্রবার হেফাজতের একটা মিছিল অইছিল, আমি মসজিদ রোড গেছিলাম। আমি, নাটাইয়ের রনি, পাভেল-তিনজন গেছিলাম। সমবায় মার্কেট, ফায়ার সার্ভিস, মঠের গোড়া, ফকিরাপুল এদিক দিয়ে ঘুরছিলাম। ভিডিও পাওয়ার কথাডা হ্যাছা না মিছা কইতারিনা। আতকা দেহি আমার দোকানের সামনে দিয়া হাইয়েস গাড়িতে পুলিশ। কইলজাডা চিপা দিয়া রইছে। নিয়া যদি ঢুকাইয়া রাখে, কোন আমলে ছাড়বো শিউর নাই। রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা, কোন উকিলও খাড়াইতো না।”
এদিকে মাদ্রাসা থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া এই মুফতির বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর স্ত্রী ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তিনি ওই মুফতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, তার স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে গত ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবেশী জাহিদুল ইসলাম সুফল বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনসহ প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। গেল বছর (২০২০) তার গর্ভে জাহিদুলের ঔরসজাত সন্তানের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে। এরপর জাহিদুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের খ্রীষ্টিয়ান মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে স্বপ্নাকে ভুল বুঝিয়ে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলে।
এ বিষয়ে মুফতী জাহিদুল ইসলাম সুফলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ভয়েস রেকর্ড এর ব্যাপারে তিনি কোন কিছু জানেন না বলে জানান। প্রবাসীর স্ত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তার সঙ্গে আমার ‘অন্য’ একটি ঝামেলা চলছে।” আমার বিয়ে ঠেকাতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।” তবে ‘অন্য’ ঝামেলাটি কি তা জানতে চাইলে তিনি খোলাসা করে কোন কিছু বলেননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘এমন একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বাদিকে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এখন এই ব্যাপারে আমরা বাদির সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
আপনার মন্তব্য লিখুন